পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/২৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՀԳ Հ মোহন অমনিবাস ম্যাজিস্ট্রেট সম্মত হইয়া কহিলেন, “এখনি শোনা প্রয়োজন।” : ছোট সাহেব কহিলেন, “কিন্তু তিনি কোথায় ?” o “নিশ্চয়ই অফিসে এসেছেন। তিনি আমাদের পিছনে পিছনে আসছিলেন, আমি দেখেছি। আচ্ছা, আমি চাপরাসী পাঠিয়ে দিচ্ছি।” পুলিস-সাহেব একজন চাপরাসীকে জরুরী আদেশ দিয়া পাঠাইয়া দিলেন। অনতিবিলম্বে চাপরাসী ফিরিয়া আসিয়া জানাইল যে, অফিসে বাঙালী-সাব নাই। পুলিস-সাহেব কহিলেন, “তবে তিনি কোয়াটারে গেছেন। জলদি সেলাম দেও।” চাপরাসী পুনরায় ছুটিল এবং প্রত্যাবর্তন করিয়া একই রিপোর্ট প্রদান করিল। পুলিস-সাহেব বিস্মিত হইয়া ও ম্যাজিস্ট্রেটের সহিত যুক্তি করিয়া ছোটসাহেবকে মিঃ সোমের প্রাসাদে পাঠাইয়া দিলেন, কিন্তু ফল একই রূপ ফলিল। ইহার পর মিঃ স্যানিয়েলের জন্য অনুসন্ধান-পর্ব আরম্ভ হইল। আগ্রা-শহরের সমগ্র পুলিস-ফোর্স কলিকাতা হইতে নবাগত বাঙালী ডিটেকটিভ সাহেবকে আগ্রার শহরে, বনে, জঙ্গলে, চারিদিকে তন্নতন্ন করিয়া অনুসন্ধান করিয়া ফিরতে লাগিল। পুলিস-সাহেব আহারনিদ্রা ত্যগ করিলেন। তিনি ম্যাজিষ্ট্রেটকে সঙ্গে লইয়া অনুসন্ধান-কার্যে যোগদান করিলেন। অনুসন্ধানে প্রকাশ পাইল, এক জংশন-রাস্তায় ট্রাফিক পুলিস মিঃ স্যানিয়েলের মোটর আটকাইয়া ছিল, কিন্তু মোটরখানি যেদিক হইতে আসিয়াছিল, সেইদিকেই চলিয়া গিয়াছে। সময় কাহারও জন্য অপেক্ষা করে না—এক্ষেত্রেও করিল না। ধীরে ধীরে রাত্রি প্রভাত হইল। শ্রান্ত, ক্লান্ত, অনিদ্র, বুভুক্ষু পুলিস-সাহেব ভোর পাঁচটার সময় বাঙলোয় ফিরিয়া দেখিলেন, মেম-সাহেব অঘোর নিদ্রার ভারে শায়িতা; তিনি কোন প্রকারে পোশাক পরিবর্তন করিয়া বিছানার উপর লুটাইয়া পড়িলেন। বেলা ৮টার সময় পুলিস-সাহেব জাগরিত হইয়া দেখিলেন, মেম-সাহেব তাহাকে ঠেলা দিয়া জাগরিত করিবার প্রাণপণ প্রয়াস পাইতেছেন। তিনি নূতন বিপদ আশঙ্কায় অধীর হইয়া বিছানার উপর বিদ্যুৎগতিতে উঠিয়া বসিলেন এবং কহিলেন, “কি সংবাদ, ডিয়ার?” মেম-সাহেব কপালের ঘাম হস্ত-ধৃত একটি রুমালে মুছিতে মুছিতে কহিল্লেন, “ডেভিল মোহনকে শহরে রেখে এমন ঘুমও যে বড়ো সাহেব ঘুমতে পারে, তা আমার সকল ধারণার বাইরে।” ം് পুলিস সাহেব অধৈর্য স্বরে কহিলেন, “কি হয়েছে,ডিয়ারঃসানিয়েলের সংবাদ পাওয়া গেছে?” & “আর স্যানিয়েল! এদিকে যে ভয়ানক কাণ্ড ঘটে গেছে। গত রাত্রে তোমার সিপাইরা যখন আগ্রার জঙ্গলে ঢাক পিটছে, সেই অবসরে দসু মোহন মিস সোমকে লুট করে নিয়ে গেছ। আহা বেচারী! ফাইন গার্ল। শিক্ষিতা মেয়ে কালচার্ড মেয়ে। আমাদের হোমে শিক্ষিতা মেয়ে। তার নিরাপত্তাও রক্ষা করতে পারলে না, এর চেয়ে মর্মান্তিক দুঃখের বিষয় আর কি আছে?” মেম-সাহেব যখন অনর্গল সহানুভূতিসূচক বাক্য বর্ষণ করিতেছিলেন, তখন পুলিস সাহেব দ্রুতবেগে সজ্জিত হইতেছিলেন। অবশেষে তিনি জুতার ফিতা বধিবার উপক্রম করিলে মেম-সাহেব কহিলেন, “কাল রাত্রে বোধ হয় ডিনার হয়নি?”