পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/২৭৫

૨ ૧૭ মোহন অমনিবাস দসু্যদলকে গ্রেফতার করার জন্য চেষ্টা করব। আশা করি আপনি আমার আশ্বাসের উপর এমন সময় মিঃ সোম পরিপূর্ণ শোকের জীবন্ত প্রতিমূর্তির মত কক্ষে প্রবেশ করিয়া কহিলেন, “আমার সম্পূর্ণ নির্ভরতা আছে, স্যার। এই দস্যু মোহনকে গ্রেফতার করবার জন্য যত টাকা পুরস্কার প্রয়োজন আপনি বিবেচনা করেন, তা ঘোষণা করুন। আমি সানন্দে আমার সর্বস্ব আপনার হাতে তুলে দেব, আপনি শুধু আমার কন্যাকে, আমার মাকে ফিরিয়ে এনে দিন।” - মিঃ সোম উচ্ছসিত হইয়া কাদিয়া উঠিলেন। পুলিস-সাহেব দাড়াইয়া কহিলেন, “আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন। আমি সমাজের এই দুষ্টগ্রহকে সমুলে উপড়ে ফেলে, আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে তবে নিশ্চিন্ত হব। আমি এখন আসি। প্রয়োজনীয় আদেশ জারি করতে হবে। হা, ভাল কথা, আপনার বাড়িতে কি পুলিস-পাহারা মোতায়েন রাখবো ?” মিঃ সোম কহিলেন, “আর কোন প্রয়োজন নেই। যার জন্য এই প্রয়োজন ছিল, সে প্রয়োজন হয়েছে। আমার বুকের ধন, নয়নের নিধি হারিয়ে গেছে। ওরে ধন!” অশ্র রুদ্ধ কণ্ঠে বলিতে বলিতে মিঃ সোম অতর্কিতে কক্ষ হইতে বাহির হইয়া গেলেন। সদলবলে প্রস্থান করিলেন। একজন ভৃত্য আসিয়া জানাইল, “রায়বাহাদুর বহুক্ষণ হ’ল অপেক্ষা করছেন, হুজুর।” “নিয়ে এস তাকে।” সরোজ আদেশ দিল । “অনতিবিলম্বে সদা হাস্য মুখ রায়বাহাদুর অশ্র-প্লাবিত মুখে প্রবেশ করিয়া নিঃশব্দে একখানি চেয়ার দখল করিলেন। বহুক্ষণ কেহ কোন কথা মাত্র বলিতে চেষ্টা করিলেন না। অবশেষে রায়বাহাদুর কহিলেন, “শেষে এই পরিণতি ঘটল ?” সরোজ কোন জবাব দিল না। রায়বাহাদুর ক্ষণকাল নীরব থাকিয়া কহিলেন, “ঘোষাল, ওরফে মোহনের সহচরের হত্যাকারীর নাম পুলিস-সাহেব বলেছেন?” هيير সরোজ বিস্মিত দৃষ্টিতে চাহিয়া কহিল, “না। কিন্তু ও কথাকেন, দাদু?” “না, এমনিই জিজ্ঞাসা করছি।” রায়বাহাদুর ধীরে ধীরে কহিলেন। , এক সময়ে সরোজ কহিল, “আচ্ছা দাদু, আপনি কি বিশ্বাস করেন, এ সব কাজ মোহনের? আমাদের ওপর মোহন এমন নিষ্ঠুর কখনও হতে পারে ? সত্যিই কি আপনি মুহুর্তের জন্যও চিন্তা করতে পারেন, মোহন অথবা মোহনের লোক মোহনের নির্দেশে রমাকে অপহরণ করেছে?” .بی রায়বাহাদুর উত্তরীয় প্রান্ত দিয়া মুখ হইতে উত্তম রূপে অশ্র-চিহ্ন মুক্ত করিয়া কহিলেন, “তুমি কি বিশ্বাস করো না, ভায়া ?” - “এক মুহুর্তের জন্যও নয়, দাদু। মোহনকে উৎপলের রূপে যে দেখেছে, সে কখনও স্বপ্নেও ধারণা করতে পারবে না যে, এমন সব নীচ ও জঘন্য কাজ তার দ্বারা সংঘটিত হতে পারে।” -