পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/২৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

-&bro "" মোহন অমনিবাস | ম্যাজিস্ট্রেট চিন্তান্বিত স্বরে কহিলেন, “এর বেশি আর কিছু খবর পাননি?” | “পেয়েছি। মোটরখানা অদ্য সকালে ৯টার সময় দিল্লীতে উপস্থিত হয়। তারপর আর কোন খবরই নেই।” o ম্যাজিস্ট্রেট ক্ষণকাল চিন্তা করিয়া কহিলেন, “এক্ষেত্রে কি বন্দোবস্ত করেছেন?” । “পুলিসের পক্ষে যতদূর সম্ভব, সবই করা হয়েছে। মোটরের আরোহীদের যথাসম্ভব বিশদ বিবরণ দিয়ে ভারতের প্রত্যেক থানায় তারে সংবাদ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া সেন্ট্রাল গভর্নমেন্টকে সাহায্য করবার জন্য অনুরোধ-পত্র পাঠিয়েছি।” এসব চিরাচরিত প্রথা ম্যাজিস্ট্রেটের নিকটও অজ্ঞাত ছিল না। তিনি বিন্দুমাত্রও আশ্বস্ত হইতে না পারিয়া কহিলেন, “মিঃ স্যানিয়েলের মত একজন দুর্ধর্ষ কর্মচারীকে যে-দসু্যু এমন ভাবে অপহরণ করে নিতে পারে, তার সঙ্গে যুদ্ধ করতে হলে আমাদের আরও অনেক কিছুই করতে হবে। আচ্ছা, ওই যে সাঙ্কেতিক লিপি, তার রহস্য কি বলুন তো?” পুলিস-সাহেব হতাশ স্বরে কহিলেন, “আপনি ੰ তা’ ছাড়া আমি আর এক বর্ণও বেশি জানি না।” । ! ম্যাজিষ্ট্রেট গম্ভীর মুখে কহিলেন, “আমার ধারণা কি শুনুন। দসু্যরা যখন ডাকাতি করে, তারা ধন অপহরণ করে। কিন্তু এক্ষেত্রে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, ডাকাতি ধন অপহরণের জন্য নয়। যে দুই ক্ষেত্রে দসু্যরা মিঃ সোমের প্রাসাদে হানা দিয়েছিল, সেই উভয় ক্ষেত্রেই তারা এক কপদকও চুরি করেনি। অথচ একটা লোক খুন হয়ে গেছে, একটি বিশিষ্ট মহিলা অপহৃত হয়েছেন—এমন ভাবে মিস সোম অদৃশ্য হয়েছেন যে, প্রথম দৃষ্টিতে ধারণা হয়, তিনি স্বেচ্ছায় গৃহ-ত্যাগ করেছেন। আপনার মনে কি সে ধারণা জন্মায় নি?” পুলিস-সাহেব কহিলেন, “নিশ্চয়ই জন্মেছে। এই সমস্যা সম্বন্ধে আমি অনেক কিছুই জানতে পেরেছি। মিস সোমের উপর এই মোহনের নজর বহুদিন থেকেই পড়েছে। কিন্তু মিস সোমের অনিচ্ছাই তার ইচ্ছা-পূরণের পথে এতদিন বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সুতরাং মোহন আর অপেক্ষা করতে না পেরে জোর করে তার ইচ্ছা-পূরণের ব্যবস্থা করে নিয়েছে।” ম্যাজিষ্ট্রেটের মুখ প্রফুল্প হইল না। তিনি কহিলেন, “মিস সোম যে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন, তেমন প্রমাণ কিছু পেয়েছেন?” of “পেয়েছি। প্রথমে রেঙ্গুনের জাহাজে এই দদুটা ছদ্মবেশে মিসসোমের সঙ্গে পরিচিত হয়। এমন অভিনয় করে যে, মিস সোমের মত উচ্চ শিক্ষিত মেয়েও তার অনুরাগিনী হয়ে ওঠেন। কিন্তু অবস্থা বিপর্যয়ে দস্য গ্রেপ্তার হয়। এইখানেই ওই ব্যাপারের সাময়িক পরিসমাপ্তি ঘটে। তারপর—” বাধা দিয়া ম্যাজিষ্ট্রেট কহিলেন, “ওসব কাহিনী আমরা জানি। কিন্তু আমার মনে এই খট্কা লাগে, যদি মোহন মিস সোমের দ্বারা অস্বীকৃত হত, তা’ হ’লে সে বার বার অমন মিথ্যা পরিচয়ে আত্মীয়তার অভিনয় করত না।” পুলিস-সাহেব কহিলেন, “আমরা সমস্ত কাহিনী জানতে পারতাম, মিস সোমও অপহৃত হতেন না, যদি সেদিন মিঃ স্যানিয়েল র্তার রিপোট দেবার অবসর পেতেন। কারণ আমার দৃঢ় ধারণা জন্মেছে যে, মিঃ স্যানিয়েল দসু মোহেনের সব কিছু মতলব জানতে পেরেছিলেন বলেই দস্য তাকে অপহরণ করেছে।”