পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/২৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রমার বিয়ে ՀԵ Ց একবার চাহিয়া বলিতে লাগিলেন, “মিস সোম দেখেন, দসু গুলি খেয়ে পড়ে গেল। তারপর আবার দাঁড়াল, আবার পড়ে গেল। তিনি ভৃত্যকে বড় রাস্তা ঘুরে যাবার জন্য আদেশ দিয়ে, নিজে বন্দুক হাতে ক'রে দসু্যর অনুসন্ধানে ছোটেন। তার তখন এই ইচ্ছা মনে ছিল যে, দসু্যু যদি পালাবার চেষ্টা করে, তা’ হ’লে দ্বিতীয় গুলি মেরে তাকে চিরতরে নিস্তব্ধ করে দেবেন। কিন্তু ফল হ’ল অন্যরূপ।” মিঃ স্যানিয়েল পুলিস-সাহেব প্রদত্ত সিগারেট ধরাইয়া বলিতে লাগিলেন, “তারপর মিস সোম কবরের নিকট গিয়ে দেখেন যে, দসু্য বুকে হেটে ভাঙ্গা বাড়ির নিকট উপস্থিত হয়েছে। তিনি গুলি করবার জন্য দ্বিতীয়বার বন্দুক কাধে তুলে ধরেন; তা’ দেখে দসু্যু মোহন আপন পরিচয় দেয় ও বলে কি ভাবে ঘোষাল মরেছে। মিস সোম তখন ভাবেন, দসু্যু যদি ধরা পড়ে, আর সত্য কাহিনী বিকৃত হয়ে প্রকাশ পায় অর্থাৎ মিঃ সোম সেক্রেটারীকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত হন, তা’ হ’লে বিপদ থেকে উদ্ধার পাবার পথ থাকবে না। তা’ ছাড়া মোহনকে রক্ষা করার অন্য হেতুও ছিল—কারণ মোহন এই বালিকাটিকে প্রাণাপেক্ষা ভালবাসে এবং মিস সোমেরও কোনোও না কোন দুর্বলতা এই দসু্যটির প্রতি ছিল। ফলে ভাঙ্গা-বাড়ীর নিম্নতলায় দসু্যকে অতি কষ্টে তিনি টানতে টানতে নিয়ে যান, পরে মোহনের সহকর্মর দ্বারা চিকিৎসার বন্দোবস্ত করেন এবং রোগীর পরিচর্যায় নিজেকে প্রভাত-সন্ধ্যা নিযুক্ত রাখেন।” পুলিস-সাহেব সবিস্ময়ে কহিলেন, “আমরা যখন দস্যকে খোঁজবার জন্য সেখানকার প্রত্যেকটি স্থান অনুসন্ধান করছি, তখন মোহন ঐ বাড়ীতেই ছিল?” “হা, ছিল।” মিঃ স্যানিয়েল কহিলেন। ম্যাজিস্ট্রেট প্রশ্ন করিলেন, “মিঃ সোম বা তার পুত্র এসব বিষয় জানতেন?” “না তারা কিছুই জানতেন না। মিস সোম সমস্ত কাহিনীই গোপন রেখেছিলেন। তারপরে তিন দিন যাবৎ মিস সোম মোহনের সেবা করেন। সম্ভবতঃ তখনই সে মিস সোমকে বিবাহ করবার প্রস্তাব করে। কিন্তু মিস সোম যে সমাজের মেয়ে, মোহনের সেখানে প্রবেশাধিকার নেই, সুতরাং ডাকাতির অভিনয় করে তাকে সে চুরি করে নিয়ে গেছে।” ... So ম্যাজিষ্ট্রেট সোৎসাহে কহিলেন, “অভিনয় করেই ঠিক, কারণ মিস সোমের শয়নকক্ষ পরীক্ষা করে এতটুকু বিপর্যয়ের চিহ্ন আমরা কোন স্থানেই পাইনিয়ার্ক এদিকের ব্যাপার পরিষ্কার হ’ল; এখন আপনার দুর্ভোগের কাহিনী বিবৃত করুনঃ মেম-সাহেব সহসা কহিলেন, “মিস সোম কি এই দস্যুটাকে ভালবাসেন ?” মিঃ স্যানিয়েলের মুখে ক্ষীণ হাস্য-রেখা ফুটিয়া উঠিল। তিনি কহিলেন, “আমাকে মার্জনা করবেন ম্যাডাম, নারীর—বিশেষ করে তরুণী মেয়ের—মনের খবর রাখা আমার মত নীরস ডিটেকটিভের পক্ষে নিতান্ত দুরূহ সমস্যা। তা ছাড়া আমি কোনদিনই অনধিকার চর্চা করে আনন্দ পাই না।” মেম-সাহেব মৃদু হাসিয়া কহিলেন, “মেয়েদের আপনারা রহস্যময়ী ভাবেন বলেই আপনাদের দৃষ্টি আমাদের প্রতি আমন আচ্ছন্ন হয়ে থাকে।” পুলিস-সাহেব এরূপ জরুরী আলোচনার মধ্যে পত্নীর প্রেম-কাহিনীর আমদানিতে