পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/২৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՀbrԵ- মোহন অমনিবাস আমরা মিস সোমের ক্ষেত্রেও তাই দেখতে পাই! মিস সোম যদি দসু্যকে ভাল না বাসত, তা হলে দসু মোহন কিছুতেই বার বার ব্যর্থ হয়েও এমন আকুল হয়ে ছুটাছুটি করত না।” “আর ঘূণা?” মিঃ সানিয়েল প্রশ্ন করিলেন। মেম-সাহেব সহজ কণ্ঠে কহিলেন, “মানুষেব সহজাত প্রবৃত্তি, সামাজিক পদমর্যাদা, শিক্ষা, সহবাস মানুষের মনের ওপর সংস্কারের বীজ বপন করে। সেই সংস্কার অপরিচিত অবস্থাকে বিশ্বাস করতে দ্বিধাগ্রস্ত হয় সন্দেহ করে, ঘৃণা করে। শুনেছি মোহন অত্যন্ত রূপবান—শিক্ষিত যুবক। তার ছদ্মবেশের সৎ ব্যবহার, সুদৰ্শন আকৃতি প্রথমে মিস সোমকে আকৃষ্ট করে। পরে যখন তিনি জানতে পারেন, মোহন আসলে একজন ভয়ঙ্কর ত্রাসকর দসু্যু ভিন্ন আর কিছু নয়, তখন বালিকার মন ঘৃণায় জরজর হয়ে ওঠে। কিন্তু মনের সঙ্গে প্রতারণা চলে না, মনকে শাসন করে রাখা যায় না, মন একবার যাকে চেয়েছে: ভালবেসেছে—আর কিছুতেই তাকে ভুলতে পারে না। এই দ্বন্দ্বের আলোড়নে প্রেম ও ঘৃণা যুগপৎ উৎসারিত হয়ে তরুণী মেয়ের মন যখন কানায় কানায় ভরে তুলেছে, তখনি মোহন সুযোগ বুঝে মানসীকে তার ইচ্ছামত পথে নিয়ে যেতে এতটুকু বেগ পায়নি। তাই আজ আপনারা মাথায় হাত দিয়ে বসে ভাবতে শুরু করেছেন, দসু্যরা, যদি তাকে অপহরণই করে নিয়ে গেল তবে কক্ষের কোন স্থানে কোন চিহ্ন নেই কেন? চেয়ার, টেবিল, খাট ওলটায়নি কেন ?” মেম-সাহেব মধুর স্বরে খিলখিল করিয়া হাসিয়া উঠিলেন। মিঃ স্যানিয়েল নিবোধ দৃষ্টিতে ক্ষণকাল চাহিয়া থাকিয়া হাসিয়া উঠিলেন। কহিলেন, “আপনার কাছে আমি হার স্বীকার করছি, ম্যাডাম।” মেম-সাহেব মৃদু হাসিয়া কহিলেন, “ধন্যবাদ। কিন্তু একটা কথা আমি জানতে চাই। আপনি বোধ হয় এইবার আপনার অপহৃত পুত্রের ও মিস সোমের অনুসন্ধান করে বেড়াবেন?” উপরওয়ালার আদেশ পাই, তবে অবশ্য আমাকে তাই করতে হবে। আমি এই মুহূর্ত মেম-সাহেব চক্ষু বিস্ফারিত করিয়া কহিলেন, “চাকরি ছেড়ে দিচ্ছেন? কেন বলুন তো?” এমন সময়ে পুলিস-সাহেব ও ম্যাজিস্ট্রেট ড্রইংরুমে প্রবেশ করিলেন। পুলিস সাহেব পত্নীর উক্তি শুনিয়া প্রশ্ন করিলেন, “কে চাকরি ছাড়বে, ডিয়ার ?” “মিঃ স্যানিয়েল।” মেম-সাহেব মান স্বরে কহিলেন। “কি! মিঃ স্যানিয়েল!” পুলিস-সাহেব স্তম্ভিত বিস্ময়ে মিঃ স্যানিয়েলের দিকে চাহিয়া কহিলেন, “এ কি কথা, মিঃ স্যানিয়েল ?” মিঃ স্যানিয়েল ধীর ও গম্ভীর স্বরে কহিলেন, “এর প্রয়োজন দেখা দিয়েছে, স্যার। আমার পুত্রকে উদ্ধার করতে হবে। এই একমাত্র কাজ ছাড়া বর্তমানে আমি আর অন্য কোন দ্বিতীয় কাজে মন দিতে পারব না। আপনি জানেন না, আমার একমাত্র সস্তানের জন্য কর্তমানে আমার মনের অবস্থা কি হয়েছে।”