পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/২৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՀՏ օ মোহন অমনিবাস উপবেশন করেন নাই। তুফান মেল যখন মোগলসরাইয়ে পৌছাইল, তখন তিনি প্রাতঃকৃত্য সমাধা করিয়া ছোট-হাজরি আহার করিলেন এবং সমধিক সুস্থ বোধ করিলেন। প্ল্যাটফরমে প্রভাতিক সংবাদপত্র বিক্রয় হইতেছিল। তিনি একখানি “দিল্লী ডেলী নিউজ’ ক্রয় করিলেন। পুনরায় মেল ছুটিতে লাগিল। মিঃ স্যানিয়েল যে-আঘাত মোহনের নিকট হইতে পাইয়াছেন, তাহার গর্বে, র্তাহার আভিজাত্যে ইহা দারুণ হইয়া বাজিয়াছে। মাত্র দুই বৎসর পূর্বে এই দস্যু মোহনই একবার র্তাহাকে ট্রেনে অজ্ঞান করিয়া একটি বৃহৎ ট্রাঙ্কের মধ্যে প্যাক করিয়া, তাহার গন্তব্যস্থানে পাঠাইয়া দিয়া তাহাকে সমগ্র দেশের সমক্ষে উপহাস্যস্পদ করিয়াছিল। আবার সেই দস্য তাহাকে তদপেক্ষা কঠোর আঘাতে পরাজিত করিয়াছে। ইহার প্রতিশোধ লইতে হইবে। মোহনকে এইবার এরূপ শিক্ষা দিতে হইবে, যাহা সে চিরজীবন স্মরণ রাখিতে পারে। মিঃ স্যানিয়েল দাঁতে দাঁত চাপিয়া অস্ফুট কণ্ঠে কহিলেন, “মোহন! মোহন! তোমার প্রতিদ্বন্দ্বিতার আহ্বান আমি গ্রহণ করলাম। এইবার দেখা যাবে, তুমি বেশি শক্তিমান, না আমি।” বড় বড় অক্ষরে হেডিং দেওয়া একটি সংবাদের প্রতি তাহার দৃষ্টি আকৃষ্ট হইল। তিনি নিঃশ্বাস বন্ধ করিয়া তাহা পাঠ করিতে লাগিলেন। আমরা পাঠক-পাঠিকাগণের জ্ঞাতার্থে সংবাদটি নিম্নে উদ্ধৃত করিয়া দিলাম। “দিল্লী ডেলী নিউজ’ পত্রিকার সম্পাদক মহাশয় সমীপেষু— মহাশয়! i ইহা অস্বীকার করিয়া লাভ নেই যে, বর্তমান আমার মত একজন নগণ্য ব্যক্তির ব্যাপার লইয়া সমগ্র দেশে একটা আলোড়ন চলিয়াছে। কিন্তু সকল বিষয়েরই একটা সীমা আছে। বিশেষ করিয়া জনতার উত্তেজনার খোরাক যোগাইতে যাওয়ার যে বিপদ আছে, তাহ{ আপনার মত বুদ্ধিমান ব্যক্তি নিশ্চয়ই জ্ঞাত আছেন। কারণ এই জনতার ক্ষুধাই দিন দিন আহুতি প্রাপ্ত হইয়া বাড়বানলে পরিণত হইতে পারে। তখন তাহাকে শাস্ত কুরিবার, তৃপ্ত করিবার, নিয়ন্ত্রিত করিবার সাধ্য আর মানুষের হাতে থাকে না! তাহা ছাড়া মানুষের বুক্তিগত জীবনের গোপনতা যদি পবিত্রভাবে মান্য করা না হয়,তাহা হইলে নাগরিক জীবনের শাস্তি বজায় থাকে কি করিয়া ? _&لالم - আমি জানি, অনেক নীতি বাগীশ আছে যাহারা বড় বড় আধ্যাত্মিক ও আত্মিক বুলি আওড়াইয়া বলিবেন, দসু্যুর আবার ব্যক্তিগত জীবন কি—পবিত্রতা কি! তাহাদিগকে আমি কৃপার পাত্ৰ ভাবিয়া উপেক্ষা করিতেছি। যাহা হউক, আমি এখানে কয়েকটি স্বীকৃতি লিপিবদ্ধ করিতেছি, যাহাতে ঘটনা পরিষ্কার হইয়া যাইবে। - হা, আমি কুমারী রমা সোমকে লইয়া আসিয়াছি। আমি তাহাকে ভালবাসি—প্রাণ ভরিয়া ভালবাসি। আমি জানি না, জগতে কোন পুরষ কোন নারীকে এত গভীরভাবে ভালবাসতে পারে কি-না। ইহার মধ্যে কোন রহস্য নাই, কোন সমস্যা নাই—আমি রমাকে ভালবাসি, রমা-হীন জীবন আমি ধারণা করিতে পারি না, কল্পনা করিতে পারি না, তাই আমি দেবীকে স্বগৃহে প্রতিষ্ঠা করিয়াছি।