পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মোহন כי כי কমিশনার সাহেব এই নবীন আর্টিস্টের স্বেচ্ছা-প্রণোদিত প্রস্তাবে খুশি হইয়াছিলেন: তিনি নিজের অজ্ঞাতসারেই সীমা অতিক্রম করিয়া গেলেন। কহিলেন, “সাধারণ প্রতিষ্ঠানে সাহায্য করে, কিন্তু কে যে করে তা’ আমরা জানি না। অবশ্য অনেকেই সন্দেহ করেন যে, দসু মোহনের কাজ এসব। কিন্তু বিপদ কি জানেন, মোহন যদি সাধারণ চোরডাকাতের মত হয়ে নিজের স্বার্থকেই একমাত্র প্রদর্শনীয় ভাবে দেখতো, তাহলে তাকে গ্রেপ্তার করা আমাদের পক্ষে সহজ হতো কিন্তু দেশের কয়েকজন ধনী ব্যক্তি ছাড়া বাকী ৯৯ জন লোক দস্যুর সম্বন্ধে উচ্চ ধারণা পোষণ করে, তাকে দেবতার মত ভক্তি করে, তাকে লুকিয়ে রাখতে সাহায্য করে। একটা লোক, তা সে যত শক্তিমানই হোক না কেন, একটা প্রতিষ্ঠান তা’ আবার ইণ্ডিয়ান পুলিস প্রতিষ্ঠানের মত প্রতিষ্ঠানের নিকট অতি তুচ্ছ। কিন্তু বিপদ এই যে সে সাধারণের নিকট একটা অদ্বিতীয় অবতারের মত আবির্ভূত হয়েছে।” উৎপল হাসিয়া উঠিলেন,কহিলেন, “আপনাকে দেখছি, সে অত্যন্ত ভাবিয়ে তুলেছে। আর এই কারণেই বলছিলেন, যে-আর্টের খেলা আপনাকে খেলতে হচ্ছে, তার কাছে অন্য সব তুচ্ছ হয়ে গেছে? তা সত্যি। আর একটা কথা, দসু্যটা যদি সত্য সত্যই তার চিঠিতে লেখা প্রতিজ্ঞা সাধন করতে যায়—তবে ?” কমিশনার কহিলেন, “আমরা সেই প্রতীক্ষাতেই উপস্থিত থাকবো। অবশ্য বলাই বাহুল্য যে, ব্রিটিশ-রাজশক্তির একজন নিরীহ, শান্তি-প্রিয় বিশিষ্ট প্রজাকে রক্ষা করতে কোন আয়োজনেরই ক্রটি হবে না।” আর্টিস্টের কাজ শেষ হইল। তিনি উঠিয়া দাড়াইয়া অভিবাদন করিয়া কহিলেন, “আগামী পরশু দিন আমার লোক গিয়ে আপনার ড্রইংরুম সাজিয়ে দিয়ে আসবে, স্যার।” “ধন্যবাদ, অসংখ্য ধন্যবাদ! হ্যা, ভাল কথা, আপনার বিলটা কত হবে ?” আর্টিস্ট উৎপল মৃদু হাসিয়া কহিলেন, “সেজন্য আপনি ব্যস্ত হবেন না। আমার ছবি যে আপনার ঘরে আশ্রয় পাবে, এরচেয়ে অধিক মূল্য আমি আর প্রত্যাশা করি না। ধন্যবাদ!” 登ー。 “চমৎকার লোক। বাঙলা যেদিন এই টাইপের যুবক হাজারে হাজারে তৈরি করতে পারবে, সেদিন বাঙলা দেশে স্বর্গ রচিত হবে।” హ్రో কমিশনার দৈনন্দিন কর্তব্যে মন-সংযোগ করিলেন। কিছুসময় পরে একজন সাজেন্ট প্রবেশ করিয়া কহিল, “আপনার ঘড়িতে কোন দোষ হয়নি, স্যার। ভদ্রলোক বললেন, ঠিক সময় দিচ্ছে। তিনি এই পত্ৰখানিও আপনাকে দিয়েছেন।” স্তম্ভিত, বিস্মিত কমিশনার অপলক দৃষ্টিতে চাহিয়া হস্ত প্রসারিত করিলেন। তিনি চকিতের মধ্যে আপনার ওয়েস্ট কোটের যে পকেটে ঘড়ি রাখিয়াছিলেন, দেখিলেন সেখান হইতে উহা অন্তহিত হইয়াছে। তিনি বিবর্ণ মুখে পত্ৰখানি খুলিয়া পাঠ করিলেন। পত্রে লেখা ছিল— মাপ করলেন। ঘড়িটা এই ভেবে ফেরত দিলাম যে, এমন অল্প মূল্যের ঘড়িতে আমার কোন কাজ হবে না, অথচ আপনার কাজ চলবে। দসু মোহনের নৈতিকতা