পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৩০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রমার বিয়ে ՎԶ ՉWՉ তরুণী ক্ষুন্ন স্বরে কহিল, “কিন্তু বিবাহের উদ্দেশ্য তো সুখী হওয়া। যেখানে এমন অসম-মিলন, সেখানে কেউই তো সুখী হতে পারবে না, কাকাবাবু। মোহনই কি সুখী হবে ভেবেছেন? না, রমা দেবীই সুখের মুখ দেখতে পাবেন?” মিঃ স্যানিয়েল তরুণী মেয়েটির চিন্তাশক্তি দেখিয়া বিস্মিত হইয়া বলিলেন, “কিন্তু উপায় কি, মা ?” “উপায় কি তা আমি জানি না, কাকাবাবু। কিন্তু আমার সঙ্গে যদি মোহনের দেখা হত, তা হলে আমি তাকে বুঝিয়ে দিতাম, সে যে মহা অন্যায় কাজ করতে চলেছে, সে অপরাধের ক্ষমা পৃথিবীতে নেই, মৃত্যুর পরেও নেই। নিজের সুখ বলি দেবার কোনও অধিকার তার নেই।” চারু নিৰ্ভীক ও স্পষ্ট স্বরে কহিল। মিঃ স্যানিয়েল মৃদু হাস্য করিলেন। যে ইয়োরোপিয়ান ভদ্রলোক শয়ন করিয়ছিলেন, তিনি পার্শ্ব-পরিবর্তন করিলেন ও ক্ষণিকের জন্য চারুদশিনীর উত্তেজিত মুখের দিকে একবার চাহিয়াই চক্ষু মুদিত করিলেন। রথীন্দ্র ভগ্নীর মুখের দিকে চাহিয়া কহিল, “মেয়ের ভারি সাহস কি না। উনি দস্য মোহনের মুখের ওপর উপদেশ দিয়ে শিক্ষা দেবেন। মোহন যে কি জিনিস তা’ তো জান না তুমি!” চারু দৃপ্ত কষ্ঠে কহিল, “কি জিনিস মোহন ? বাঘও নয়, ভালুকও নয় যে দেখতে পেলে হালুম ক’রে গিলে ফেলবে! আমি অমন কারুকে ভয় করি না। মানুষ হয়ে মানুষকে যদি ভয় করতে হয়, তবে গরু হয়ে জন্মানোই উচিত ছিল। আপনিও তো তাই বলেন, কাকাবাবু?” মিঃ স্যানিয়েল মৃদু স্বরে হাসিয়া উঠিলেন। চারু পুনরায় বলিতে লাগিল, “এই তো সেদিন ডেলী নিউজে পড়লাম যে, মোহন কাকাবাবুকে বন্দী করে রেখেছে। কাকবাবু বলুন না, তিনি কি মোহনকে দেখে ভয়ে আঁতকে উঠেছিলেন ?” - এমন সময়ে ইউরোপিয়ান ভদ্রলোকটি সহসা বেঞ্চির উপর উঠিয়া বসলেন ও একবার “আমি যদি একটা কথা এখানে বলি, তবে আমাকে মার্জনা করবেন?” সকলে বিস্মিত হইয়াইয়োরোপিয়ান ভদ্রলোকের দিকে চাহিল চরুদশিনী এক অপিরিচিত পুরুষ তাহাকে সম্বোধন করিয়া কথা বলিতে দেখিয়া মৃদু লজ্জা ও বিস্ময়ে মুখ অবনত করিল। রথীন্দ্ৰ কহিল, “আপনি কি ইয়োরোপিয়ান নন?” ইয়োরোপিয়ান ভদ্রলোক মৃদুহাসিয়া কহিলেন, “নিশ্চয়ই। কিন্তু আপনারা যদি ইংরাজিতে অপরের মাতৃভাষায় বিশুদ্ধ উচ্চারণে কথা বলতে পারেন, তখন আমরা—যারা আজীবন বাঙলায় বাস করছি, তারা বাঙলা বলতে পারবো না কেন?” রথীন্দ্র সোৎসাহে কহিল, “না পারা বা না পারার ভান করাই লজ্জার বিষয়। হা আপনি কি বলতে চাইছেন?” ইয়োরোপিয়ান ভদ্রলোক কহিলেন, “আপনারা মোহন দস্যুর উদ্দেশ্যে যে সব উপদেশ দিচ্ছিলেন, বিশেষভাবে এই মহিলাটি, তা শুনে আমার মন এই আনন্দে ভরে উঠেছিল