পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৩০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

! মোহন অমনিবাস ס לסי মিঃ স্যানিয়েল কহিলেন, “নাম জানি না, তবে তাদের সঙ্গে একটা খুব বড় সুটকেস । আছে। তেমন সুটকেস এ অঞ্চলে কোথাও পাওয়া যায় না। তোমরা কি তাদের কাউকে দেখেছে, ভাই?” কেহই দেখে নাই জানাইল। মিঃ স্যানিয়েল বিফল হইয়া উঠিয়া পড়িলেন ও অগ্রসর হইলেন। এবার তিনি যে স্থানে উপস্থিত হইয়াছেন, সেখানে দেশীয় লোকের বাস বেশী। অধিকাংশ বাড়াই মৃত্তিকা নির্মিত। তবে দুরে দূরে পুরাকালের প্রস্তুত ও ইষ্টক নির্মিত ; কয়েকটি বৃহৎ অট্টালিকা ছিল। তিনি অট্টলিকাগুলি অনুসন্ধান করিবার মানসে যাহাকে সম্মুখে দেখিতে পাইলেন, তাহাকেই নানাভাবে নানা দিক দিয়া প্রশ্ন করিতে লাগিলেন। এদিকে মধ্যাহ্নও হইল, অপরাহ্নও আসিল, তবুও তিনি কোন সংবাদই পাইলেন না। সারাদিন অভুক্ত দেহে ও হতাশাপূর্ণ মন লইয়া মিঃ স্যানিয়েলের উৎসাহ নির্বাপিত হইয়া আসিতে লাগিল। - প্রত্যেকটি অট্টালিকা দেখা প্রায় শেষ হইয়া আসিল—তিনি এই বৃথা অনুসন্ধান কার্য হইতে বিরত হইবার ইচ্ছা চিন্তা করিতেছিলেন, এমন সময় একটি যুবক কহিল, কয়েক দিন আগে রাত্রিতে সে যখন শ্বশুর-বাড়ী হইতে ফিরিতেছিল, তখন ঐ বনের ভিতর যে দুর্গ বাড়ী আছে, সেখানে একটা মোটরকে বাড়ীর ফটকের ভিতর যাইতে দেখিয়াছিল এবং সেই মোটরের ভিতর দু'জন সাহেব বেশী ভদ্রলোক ও একটা বৃহৎ সুটকেস ছিল দেখিয়াছে। আনন্দে উত্তেজনায় মিঃ স্যানিয়েলের বক্ষ-স্পন্দন উদাম হইয়া উঠিল। তিনি অতিকষ্টে আত্মসম্বরণ করিয়া যুবকটিকে কয়েকটি প্রশ্ন করিলেন এবং সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিন্ত হইয়া গাড়ীর নিকটে ফিরিয়া আসিলেন এবং কোচম্যানের হাতে একখানি দশ টাকার নোট দিয়া কহিলেন, “তুমি খেয়েছ?” গাড়োয়ান কহিল, “হা, হুজুর।” “উত্তম। আর কিছু সময় অপেক্ষা কর। আমি আধ ঘণ্টার ভিতর আসছি।” মিঃ স্যানিয়েল দ্রুতপদে চলিতে লাগিলেন। వీ যে বনের কথা লোকটি বলিয়াছিল, তাহ পল্লী হইতে মাত্র পনেরোমিনিটের পথ। । তখন সন্ধ্যা হইতেছে, লোক-বিরল পথে মাঝে মাঝে দুই-একটি রাখাল বালক মেষ পাল, গরু ও মহিষের দল লইয়া মাঠ হইতে প্রত্যাবর্তন করিতেছিল। মিঃ স্যানিয়েল দুরু দুরু হৃদয়ে দ্রুত অগ্রসর হইতে লাগিলেন। অবশেষে তিনি যখন বনের সীমানায় উপস্থিত হইলেন, তখন সন্ধ্যা হইয়া গিয়াছে। তিনি নির্ভীক হৃদয়ে বনের মধ্যে প্রবেশ করিলেন এবং অল্প দূর অগ্রসর হইয়াই সম্মুখে এক বৃহৎ প্রাসাদ দেখিতে পাইলেন। প্রাসাদের চারিদিক উচ্চ পাচিলে ঘেরা। মিঃ স্যানিয়েলের মন উত্তেজনায় অস্থির হইয়া উঠিল। তিনি ভাবিতে লাগিলেন, আমার হতভাগ্য মাতৃহারা পুত্র এইখানে আবদ্ধ রহিয়াছে। মাত্র কয়েক হস্ত ব্যবধানে আমার চক্ষের মণি, আমার দুলাল রহিয়াছে; আমি এখন কি করিয়া তাহার উদ্ধার সাধন করিব? একা সহস্র দসু্যদলের সহিত কি জয়ী হইতে পারিব, না এই দুর্গ প্রাসাদের ভিতরে প্রবেশ করিতেই সক্ষম হইব ?” -