পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ծ Հ মোহন অমনিবাস একেবারে নেই—এই ধারণার পরিবর্তন হ’লে সুখী হবো। মোহন কথা দিলে তা’ রাখে। আপনার স্ত্রীর ড্রইংরুম আগামী পরশু যথা সময়ে আমার আঁকা ছবি দ্বারা সজ্জিত হবে বোলে যে কথা দিয়ে এসেছি—তা রাখবো। আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন। আর একটা কথা সবিনয়ে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। জমিদার নীলরতন যদি না মত পরিবর্তন করেন তবে তার মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী। আপনারা কিছুতেই তাকে রক্ষা করতে পারবেন না। ইতি— আপনার অনুগত মোহন কমিশনার সাহেব তীব্রবেগে কক্ষ হইতে বাহির হইয়া আদেশ দিলেন, “গ্রেপ্তার করো, গ্রেপ্তার করো—যে-লোক ঘড়ি দিয়ে গেছে, সাজেন্ট, এখনি তাকে গ্রেপ্তার করো। সে যেন পালাতে না পারে।” কমিশনারের উত্তেজিত আদেশে সকলে তন্ন তন্ন করিয়া অনুসন্ধান করিল; কিন্তু আর্টিস্ট উৎপল, ওরফে দসু মোহন অদৃশ্য হইয়াছে। কমিশনার ডিটেকটিভ স্যানিয়েলকে সম্মুখে দেখিয়া কহিলেন, “এখনি চিত্তরঞ্জন এভিনিউর বাড়ির পাচতলা অবরোধ করুন।” সেখানে দস্যু মোহন থাকে। আসুন, আমিও সঙ্গে যাচ্ছি।” মিঃ স্যানিয়েল সবেমাত্র ক্ষুব্ধ মনে বাঙলার ডাক পত্রিকা অফিস হইতে ফিরিয়াছিলেন কমিশনারের আদেশের হেতু কিছুমাত্র না বুঝিয়াও দ্রুত পুলিস-বাহিনী সঙ্গে লইয়া চিত্তরঞ্জন এভিনিউর কমিশনার-নির্দেশিত ফ্ল্যাটে উপস্থিত হইয়া দেখিলেন, ফ্ল্যাট শূন্য। অনুসন্ধান করিয়া জানিলেন যে, ভাড়াটে আর্টিস্ট উৎপলবাবু নোটিস দিয়াছিলেন। নোটিস অন্তে গত সন্ধ্যায় ভাড়া চুকাইয়া দিয়া চলিয়া গিয়াছেন। কমিশনার সাহেবের মুখ হইতে শুধু একটি শব্দ বাহির হইল, “Damn it!” (s) “বাঙলার ডাক পত্রিকায় দস্য মোহন সম্বন্ধে চাঞ্চল্যকর বিবরণ প্রকাশিত হওয়ায় অন্যান্য দৈনিক কাগজের সম্পাদক ও রিপোর্টার মহলে বিরাট চাঞ্চল্য উপস্থিত হইল। সম্পাদক মহল এরূপ একটা লোভনীয় বিষয়ে কিছুমাত্র সংবাদ না পাইয়াঅত্যন্ত ক্ষুব্ধ হইয়া উঠিলেন। তাহারা কেহ বা টেলিফোনযোগে, কেহ বা পুলিস অফিসে প্রতিনিধি পাঠাইয়া সংবাদের সত্যাসত্য নির্ধারণ করিবার জন্য চেষ্টিত হইলেন। কিন্তু সকল রকম প্রচেষ্টাই বিপুলভাবে ব্যর্থ হইল। যাহারা টেলিফোন যোগে জানিতে চেষ্টা করিয়াছিলেন, র্তাহাদের উদ্দেশ্য ব্যক্ত করিবার পরই পুলিস অফিস সহসা যোগাযোগ কাটিয়া দিল এবং পুনঃ পুনঃ চেষ্টা করিয়াও একটা শব্দ মাত্রও শুনিতে পাইলেন না। অপর দিকে যাহারা প্রতিনিধি প্রেরণ করিয়াছিলেন, তাহাদের প্রতিনিধিরা আগমনের উদ্দেশ্য জানাইবামাত্র আর ভিতরে প্রবেশ করিবার অনুমতি পান নাই। সুতরাং রূঢ় ভাবে ব্যর্থ মনোরথ হইয়া, তাহারা পরদিনের সংবাদ-পত্রে সম্পাদকীয় স্তন্তে মন্তব্য প্রকাশ করিলেন য়ে, বাঙলার ডাক’ পত্রিকার উদ্ভট কল্পনা-শক্তির ইহা একটি নবতম নিদর্শন। কারণ তাহারা কেহই যে সংবাদ পাইলেন না, সেই সংবাদ—এমন কি দসু মোহন লিখিত পত্র অবধি আবিষ্কৃত হইয়া গেল, ইহা কি কখনও সুস্থ ব্যক্তি কল্পনা করিতে পারে?