পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৩১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রমার বিয়ে פי כי סי সেদিন সন্ধ্যা সাতটার সময় যখন মিঃ স্যানিয়েল র্তাহার ক্ষুদ্র অভিযাত্রী দলটি লইয়া যাত্রা করিবার উপক্রম করিতেছিলেন, সেই সময়ে ডাঃ গুপ্ত র্তাহার মোটরে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। তিনি হাস্যমুখে কহিলেন, “শেষ মুহুর্তে আমার বিদেশ যাত্রা স্থগিত রয়ে গেল। সুতরাং ভাবলাম, আপনার সঙ্গী যদি হতে পারি, তবে দসু মোহনকে স্বচক্ষে দর্শন করবার সুযোগ পেলেও পেতে পারি। আমাকে কি সঙ্গে নেবেন, মিঃ স্যানিয়েল ?” মিঃ স্যানিয়েল অত্যন্ত খুশি হইয়া কহিলেন, “নিশ্চয়ই নেব, ডাঃ গুপ্ত। আপনার সাহায্য আমার পক্ষে বহুমূল্য সম্পদ হবে।” অতঃপর ভাড়া-কড়া ঘোড়া-গাড়ীকে বিদায় দিয়া সকলে ডাঃ গুপ্তের মোটরগাড়ীতে আরোহণ করিয়া যাত্রা করিলেন। ডাঃ গুপ্ত স্বয়ং মোটর ছাড়িয়া দিলেন। তাহার পাশ্বে উপবিষ্ট মিঃ স্যানিয়েলের দিকে মুহুর্তের জন্য চাহিলেন, “আপনি তাহলে সশস্ত্র হয়ে এসেছেন, মিঃ স্যানিয়েল?” মিঃ স্যানিয়েলের মুখে ক্ষীণ হাস্যরেখা ফুটিয়া উঠিল। তিনি কহিলেন, আয়োজনের কোন ক্রটিই করিনি, ডাঃ গুপ্ত।” ডাঃ গুপ্তের মুখে মৃদু হাসি লাগিয়াছিল; তিনি কহিলেন, “আমার অত্যন্ত আনন্দ হচ্ছে, মিঃ স্যানিয়েল। এমন কোন অভিযানে যাবার সুযোগ আমার জীবনে হয়নি।” মোটর ঘন্টায় পঞ্চাশ মাইল বেগে ছুটিতেছিল। দেখিতে দেখিতে তাহারা রামনগরের বিপরীত দিকের পল্লীতে উপস্থিত হইলেন। ডাঃ গুপ্ত মোটরের বেগ একেবারে ঘন্টায় দশ মাইল করিয়া দিলেন। অন্ধকার রাত্রে নিস্তব্ধ পল্লীর ভিতর দিয়া মোটর অতি নিঃশব্দে ছুটিতে লাগিল। পথে কচিৎ লোকের দেখা মিলিতেছিল। অবশেষে মোটর আসিয়া বনমধ্যে প্রবেশ করিল ও কিছুদূর অগ্রসর হইয়া থামিয়া গেল। সকলে নিঃশব্দে মোটর হইতে অবতরণ করিলেন। ডাঃ গুপ্ত অগ্রে পথ দেখাইয়া চলিতে লাগিলেন। প্রাসাদের পিছনে একটি গুপ্ত দ্বারের সম্মুখে আসিয়া ডাঃ গুপ্ত নিম্নস্বরে কহিলেন, “এই গুপ্তদ্বার। এখন শুনুনু, আপনার লোকেদের দ্বারে পাহারায় রাখুন। আমরা দুজনে ভিতরে যাব। যদি কোন বিপদের সম্মুখীন হইব সাহায্যের প্রয়োজন বােধ করি, তবে রিভলভারের দুবার উপর্যুপরি শব্দ করব। সেই শব্দ শুনে ওরা যেন আমাদের সাহায্যে যায়, উপদেশ দিন।” মিঃ স্যানিয়েল যুক্তির সারবত্তা বুঝিতে পারিলেন এবং নিম্নস্বরে সহচরকে উপদেশ দিলেন। ডাঃ গুপ্ত কহিলেন, “এইবার চাবি খুলুন।” উত্তেজনায় মিঃ স্যানিয়েল অধীর হইয়া পড়িলেও, তিনি আত্মসম্বরণ করিয়া পকেট হইতে চাবি বাহির করিয়া দ্বারের ছিদ্রে লাগাইলেন ও মৃদু চাপ দিতেই দ্বার নিঃশব্দে ভিতর দিকে মুক্ত হইয়া গেল। ডাঃ গুপ্ত অগ্রে প্রবেশ করিয়া নিম্নস্বরে কহিলেন, “আমার পশ্চাতে আসুন। আমি প্রাসাদের সব কিছুই জানি।”