পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৩১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রমার বিয়ে Վ) : :) “তোমার এই ব্যবহার আমি কোন দিনই ভুলতে পারব না, বাবা। মানুষ যে এমন দেবতার । মত হ’তে পারে, আমার দীর্ঘ বয়সের অভিজ্ঞতাতেও তা জানা ছিল না। আমার এই প্রার্থনা ভগবানের কাছে, তিনি যেন তোমাকে সবরকমে সুখী করেন।” মিঃ সোমের মুখে স্নিগ্ধ জ্যোতি ফুটিয়া উঠিল। মিঃ স্যানিয়েল প্রসন্ন মুখে ডাঃ গুপ্তের নত, কৃতজ্ঞতা-ভরা মুখের দিকে একবার চাহিয়া কহিলেন, “আমার ধারণা ছিল না যে, তোমাকে ওখানে দেখতে পাব। মোহন যে কেন তোমাকেও কেশবের সঙ্গে রেখে ভুল করল, তার কারণও আমার কাছে দুর্বোধ্য।” রমা মৃদু হাস্যমুখে কহিল, “আমাকে যদি ওখানে না পেতেন, তবে কি অন্য চেষ্টা করতেন না, কাকাবাবু?” r., মিঃ স্যানিয়েল হাস্য মুখে কহিলেন, “তুমি তো জানো না, যে তোমার অনুসন্ধানের জন্য ভারত গভর্নমেন্টের কি বিশাল যন্ত্র কাজ করছিল! তোমাকে যদি ওখানে দৈবক্রমে পাওয়া না যেত, তা হলে হয়তো আরও দেরি হত, কিন্তু তোমাকে উদ্ধার না ক’রে গভর্নমেন্ট নিশ্চিন্ত হতেন না।” ডাঃ গুপ্ত হাস্য মুখে কহিলেন, “একথা কি সত্য যে, আপনি সাঙ্কেতিক দলিলটার পাঠোদ্ধার করেছেন?” “সম্পূর্ণ সত্য নয়, ডাঃ গুপ্ত। কিন্তু মোহনের ধারণা যে, আমি সক্ষম হয়েছি—আর সেই জন্যই সে আমার পুত্রকে জামিন স্বরূপ বন্দী করেছিল।” মিঃ স্যানিয়েল বলিলেন। মিঃ সোমের মুখ গম্ভীর হইল। তিনি কহিলেন, “আপনি কি পাঠোদ্ধারে আংশিকভাবে সফল হয়েছেন, মিঃ স্যানিয়েল ?” মিঃ স্যানিয়েল ক্ষণকাল নীরবে থাকিয়া কহিলেন, “আমি এইটুকু ধারণা করতে পেরেছি যে, গুপ্ত ধনাগার সম্বন্ধে যে কিংবদন্তী আছে, তা’ হয়তো সত্য।” “সত্য!” মিঃ সোম বিস্ময়ে যেন ভাঙ্গিয়া পড়িলেন। কহিলেন, “কিন্তু কোথায় সেই ধনাগার, মিঃ স্যানিয়েল ?” r. মি সানিয়েল কহিলন, “তা যদি জানতে পারতাম,তাহলে কেশব ও আপুনার কন্যার উদ্ধারের পর এই এক সপ্তাহকাল এখানে অলসভাবে যাপন করতাম না। কিন্তু আপনি যদি মূল দলিলখানা আমাকে একবার দেখান, তবে আমি বিশেষভাবে চেষ্টা করতে পারি।” ডাঃ গুপ্ত কহিলেন, “দলিলখানা কি আপনার সঙ্গেই আছে কাকাবাবু?” “না, বাবা। আমন বিপজ্জনক বস্তু নিয়ে পথ চলতে ভয় পাই। দলিলখানা আমি শীলমোহর ক’রে ব্যাঙ্কে গচ্ছিত রেখেছি। মিঃ বেকার ফিরে এলে তখন এ বিষয়ের জন্য একবার শেষ চেষ্টা করব।” মিঃ সোম ধীর স্বরে কহিলেন। সরোজ নীরবে বসিয়া আলোচনা শুনিতেছিল; সে ডাঃ গুপ্তের কাকাবাবু সম্বোধন শুনিয়া সবিস্ময়ে তাহার দিকে চাহিয়াছিল। মৃদু হাসিয়া কহিল, “আপনি কতদিন ইয়োরোপে ছিলেন, ডাঃ গুপ্ত?” “প্রায় দু বছর।” ডাঃ গুপ্ত কহিলেন। সরোজ কহিল, “বিলাতে ডাক্তারি পাশ করে এসে এখানে কেন প্রাকটিস আরম্ভ করেন নি?”