পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৩৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৩২ মোহন অমনিবাস যাহারা অগ্রসর হইতেছিলেন, থমকিয়া দাড়াইলেন। একদৃষ্টি বেকরের দিকে চাহিয়া কহিল, “মোহনকে বন্দী করা কি এতই সহজ কাজ, মিঃ বেকার? হাঁ, আমি মোহন। যথারীতি আচার-অনুষ্ঠানের মাঝে আমার প্রিয়তমা নারীকে স্ত্রী-রূপে গ্রহণ করেছি, এর মাঝে এতটুকু কৃত্রিমতা নেই। কিন্তু আমি এখনও জীবন ভো করিনি, বেকার। তুমি যে এত শীঘ্র আসবে, আমি ধারণা করতে পারিনি। কিন্তু—” : মিঃ বেকার গর্জন করিয়া কহিলেন, “একটু নড়েছ কি তোমাকে গুলি করেছি, মোহন আজ আর তোমার নিস্কৃতি নেই।” - মোহন রমার দিকে একবার চাহিল; তাহার মুখে মৃদু হাসি ফুটিয়া উঠিল। সহসা রমা ছুটিয়া আসিতেছে দেখিয়া মোহন তাহার হাত দুইটি নামাইয়া যেমন তাহাকে ধরিতে গেল, মিঃ বেকার দসু মোহন রিভলভার বাহির করিতেছে মনে করিয়া গুলি করিলেন। সেই মুহুর্তে রমা মোহনের বক্ষের উপর আর্তস্বরে চিৎকার করিয়া লুটাইয়া পড়িল ও মোহন ধরিবার পূর্বেই মেঝের উপর লুটাইয়া পড়িল। রমার তপ্ত রক্তধারা ফোয়ারার মত বাহির হইতে লাগিল। কি হইতে কি হইল, মিঃ বেকার বুঝিতে পারিবার পূর্বেই মোহন ছুটিয়া গিয়া মিঃ বেকারের মুখের উপর এক প্রচণ্ড ঘুষি মারিল। মিঃ বেকার একটা অস্ফুট আর্তনাদ করিয়া ভূমি-শয্যা লইলেন। দুই হাতে তুলিয়া লইল ও তাহা স্কন্ধের উপর ফেলিয়া একবার সকলের মুখের দিকে ও অন্যবার মিঃ বেকারের মুখের দিকে চাহিতে দেখিল, মিঃ বেকার উঠিয়া বসিতেছেন। মোহন কহিল, “হতভাগ্য পশু, আজ যে কাজ তুমি করেছ, তোমার মত একশতটা বেকারের জীবন নিলেও এর প্রতিশোধ নেওয়া হয় না। কিন্তু এখন আমি ভিন্ন মানুষ। যে দেবীকে তুই হত্যা করেছিস, সেই আমাকে দেবতায় পরিণত করেছে, তাই আজ তোর ওই ঘৃণ্য প্রাণ নিতে আমার ঘৃণা বোধ হ’ল।” :* মোহন দেখিল, মিঃ সোম কন্যা-শোকে মূৰ্ছিত হইয়া পড়িয়া রহিয়াছেন। সে মিঃ স্যানিয়েল ও পুলিস-সাহেবের দিকে একবার জুলন্ত দৃষ্টিতে চাহিয়া দুই-পা বাড়াইল ও সহসা মিঃ বেকারের দিকে একবার চাহিয়া কহিল, “আজকার প্রতিদান তোলা রইল, বেকার। ভবিষ্যৎ বলবে, ভবিষ্যতের ঐতিহাসিক লিখবে, মোহন তার প্রিয়তমাকে হত্যার প্রতিশোধ কি নির্মমভাবে নেয়। বেকার, বেকার, তুমি করেছ কি! রমা, রমা!” বলিয়া সুতুফানগুদ শৰহৰকে লিঙ্ক গেল। অল্প সময় পরে একটা মোটর চলিবার শব্দ হইল। তারপর ঘরে ও বাহিরে মৃত্যুর মত অটুট নিস্তব্ধতা বিরাজ করিতে লাগিল।