পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৩৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

లలtr মোহন অমনিবাস রমার মুখের দিকে একদৃষ্টে চাহিয়া মোহন বলিল, “এমন একটি দিন যে আবার আসবে তেমন চিত্তা সেদিন আমার মনের কোন স্থানেই ছিল না রানী। আমি উন্মাদ হ’য়ে গিয়েছিলাম। কাজও করেছিলাম ঠিক উন্মাদের মত। এখন ভাবি যদি সে সময়ে তোমাকে তুলে না আনতাম, তা’ হ’লে আজ.উঃ।” এই বলিয়া মোহন দুই হাতে মুখ চাপিয়া একটি আর্তধবনি করিয়া উঠিল। রমার মুখে স্নিগ্ধ হাসি ফুটিয়া উঠিল। সে মধুর স্বরে কহিল, “আমার মত সৌভাগ্যবতী নারী আর যে নেই, তুমি যে কেন বিশ্বাস করো না, জানিনে। আমার যদি সেদিন মৃত্যু হ’ত, তবে তোমাকে ছেড়ে স্বর্গে গিয়েও কি আমি বিধাতাকে নিস্কৃতি দিতাম ? শুধু সেই ভয়েই না বিধাতা আমার জীবন নিতে সাহস করেন নি।” মোটরে শুইয়ে দিলাম, তারপর ঘণ্টায় ৭০ মাইল বেগে সে কি এক উন্মাদ গতিতে ছুটে দিল্লীতে উপস্থিত হই, আজ আর তা মনে নেই। আমার পরম সৌভাগ্য যে, ডাঃ রমার পরিহাসের প্রবৃত্তি চলিয়া গেল; সে প্রেম-বিহুল দৃষ্টিতে ক্ষণকাল চাহিয়া থাকিয়া কহিল, “তারপর কি করলে ?” নাড়াচাড়া করা চলবে না। কিন্তু আপনি কি প্রকাশ্যভাবে এখানে থাকতে পারবেন?” আমি বললাম, নিশ্চয় পারব। আপনি শুধু আমার রানীকে বাঁচিয়ে দিন, আপনি যত টাকা পারিশ্রমিক চাইবেন, তাই দেব। আমার কথা শুনে তিনি মৃদু হেসে বললেন, “আমি আর টাকা নেব না। যদি আপনার কাজে সফল হতে পারি, সেই হবে আমার প্রচুর পারিশ্রমিক। এই বোলে তিনি তোমাকে অপারেশন-রুমে নিয়ে গেলেন।” মোহন ক্ষণকাল নীরব থাকিয়া পুনশ্চ বলতে লাগিল, “দিনের পর দিন চলে যেতে লাগল। অবশেষে দয়াময় বিধাতা মুখে তুলে চাইলেন, তোমার জ্ঞান হ’ল, তুমি চোখ মেলে চাইলে।” -દ્વે রমা মিন্ধ কষ্ঠে কহিল, “আমার সব এখনও তেমনি মনে আছে। চোখ চেয়েই রয়েছে। আমি সব ভুলে গেলাম। আমার মনে হতে লাগল আমার মত দুঃখিনী নারীর এতখানি সৌভাগ্য সম্ভব হ’ল কি ক’রে ? কত জন্ম তপস্যা করেছিলাম, কত আশীৰ্বাদ মাথায় নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলাম....” বাধা দিয়া মোহন কহিল, “দসু মোহন সৌভাগ্যবান, না যে-দেবী তাকে পশুত্ব থেকে দেবত্বের স্বাদ আস্বাদন করিয়েছে, সে সৌভাগ্যবতী ? আমি কি জানিনে, রানী, আমাকে ভালবেসে তোমাকে কতখানি ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে।” রমা ব্যথিত স্বরে কহিল, “ওগো, অন্তর্যামীই জানেন, কে বেশী সৌভাগ্যবান। তোমার বুকে মাথা রেখে যদি মৃত্যুও হতো, তবুও আমার মত ভাগ্যবতী নারী বাঙলার ইতিহাসে আর দুটির কথা লেখা থাকত না। এখন বলো, তারপর কি হল? আমরা সিমলা পাহাড়ে এলাম কেন ?” *