পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৩৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আবার মোহন הסיסי “ডাঃ সরকার বললেন, তোমার বর্তমান অবস্থায় পাহাড়ের বাতাসের মত উপকারী বন্ধু আর কাউকেও পাওয়া যাবে না। সুতরাং...” মোহনকে বাধা দিয়া রমা স্নিগ্ধ কষ্ঠে কহিল, “তা আমি বুঝেছি। কিন্তু অন্যান্য নিভৃত পার্বত্য দেশ থাকতে তুমি এখানে কেন এলে? যখন....” অকস্মাৎ রমা মোহনের মুখে দিকে চাহিয়া নীরব হইল। মোহন হাসিতেছিল; কহিল, “যখন আমার শিরের মূল্য পঞ্চাশ হাজার মুদ্রা স্থির হয়েছে, তখন একেবারে রাজ-প্রতিনিধির প্রতিবেশী হবার সাধ করলাম কেন, রানী?” রমার শীর্ণ মুখ স্নান হইয়া উঠিল। সে ভূ-কুঞ্চিত মুখে চাহিয়া কহিল, “ও-কী কথা আবার। পঞ্চাশ হাজার টাকা কি বলছ তুমি?” মোহন রমার একখানি হাত আপন দুই করতলের মধ্যে লইয়া কহিল, “আজকার কাগজে একটা নতুন সংবাদ বেরিয়েছে। আমার মৃত বা জীবিত শিরের মূল্য বাঙলা গর্ভনমেন্ট পঞ্চাশ হাজার মুদ্রা স্থির করে ঘোষণা প্রকাশ করেছেন।” এই বলিয়া মোহন প্রাভাতিক দিল্লী ডেলী নিউজ সংবাদ-পত্ৰখানি রমার হাতে তুলিয়া দিল। রমা সাগ্রহে সংবাদটি পাঠ করিল। বাঙলা গভর্নমেন্ট দসু মোহনকে গ্রেফতার করিবার জন্য পঞ্চাশ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করিয়াছেন। রমা সংবাদটি পাঠ করিয়া মোহনের দিকে কাতর দৃষ্টিতে চাহিয়া কহিল, “আমি জানি, এরা তোমাকে শাস্তিতে থাকতে দেবে না।” - মোহন মৃদু হাসিয়া কহিল, “না, দেবে না। কিন্তু এটা আমার শাপে বর হয়েছে, রানী। কারণ বেকার যখন তোমাকে এতখানি দুর্ভোগ ভোগ করিয়েছে, তোমার নিরাপত্তার জন্যও এতটুকু সাবধান হয় নি, অর্বাচীনের মত গুলি ছুড়তে সক্ষম হয়েছে, তখন আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলুম যে, এই দুঃসাহসী দুৰ্বত্তকে এমন সাজা দেব যা সে আমরণ মনে রাখবে। রমার উদ্বেগ-ভরা চক্ষু দুটি মোহনের মুখের ওপর ন্যস্ত ছিল কহিল, “তুমি ত বলেছ, আর কোনদিন তেমন কাজ করবে না ?” á তোমাকে স্পর্শ করে প্রতিজ্ঞা করেছি, কখনও কোন অন্যায় কাজ করব না। তার অন্যথা হবে না। তবে বেকারকে বুঝিয়ে দেব, শিক্ষা দেব, যে কাজ সে করছে তার জন্য কী ভীষণ শাস্তি পেতে হয়। আজ সে সুযোগ এসেছে দেখে আমার আনন্দের আর শেষ নেই, রানী।” এই বলিয়া মোহন উত্তেজিত চঞ্চল চরণে কক্ষময় পায়চারি করিতে লাগিল। রমা উদ্বিগ্ন মুখে চাহিয়া কহিল, “আমি তোমার কথার একবর্ণও বুঝতে পারলাম না। তুমি কি আবার ঝঞ্জাটের মধ্যে ফিরে যাবে?” মোহনের মুখে অপূর্ব বিস্ময় ফুটিয়া উঠিল। সহসা সে রমার সম্মুখে হাঁটু গাড়িয়া বসিয়া প্রগাঢ় স্বরে কহিল, “তোমাকে স্পর্শ করে যে-শপথ করেছি, আমি কি এতখানি অমানুষ রানী, আজ তা ভুলে যাবো?” “তবে ?” রমা অশ্রুরুদ্ধ কষ্ঠে প্রশ্ন করিল। “বুঝতে পারলে না রানী?” মোহন মৃদুহাসি মুখে কহিল, “বেকার আমাকে গ্রেফতার