পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মোহন Wo of মহাশয় অত্যুগ্র আগ্রহভরে রিসিভার কানে লাগাইয়া শুনিলেন,দসু মোহন বলিতেছে, পুলিস আমার কথা শোনবার জন্য মাঝখানে লাইন ট্যাপ করেছে। আপনিও যেমন আমার কথা শুনছেন, পুলিস কমিশনারও তার অফিসে বসে শুনছেন এবং একদল পুলিস আমাকে ধরবার জন্য মিঃ স্যানিয়েলের নেতৃত্বে আমি যে টেলিফোন ব্যবহার করছি, সেই ঠিকানায় ছুটে আসছে। আসুক আমি ভয় করি না। এখন আমি যা বলি শুনুন। হ্যালো। শুনছেন তো? আড়ষ্ট স্বরে সম্পাদক কহিলেন, হাঁ শুনছি—বলুন। মোহন বলিতে লাগিল, “দেখুন আপনার দুদিনের কাগজ পড়ে ভারী খুশি হয়েছি। আপনাকে আমি মনে রাখবো। আর আগামী কাল আমি যে ছবি পাঠাতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ আছি তা পালন করবো। আপনি এক কাজ করুন। আমি অনাবশাক হত্যকে ঋণ করি। আমার উদ্দেশ্যও তা’ নয়। আপনার কাগজের মারফত যদি বৃদ্ধ জমিদার নীলরতনের একগুয়েমি আরোগ্য করতে পারেন— বড়ো ভাল হয়। কারণ সে আর কদিনই বা বাঁচবে? কিন্তু সে যদি পুলিসের সাহায্য পেয়ে নিজেকে নিরাপদ ভাবতে আরম্ভ করে, কোন কথা না শোনে, তবে তাকে মরতে হবে। আপনি একবার চেষ্টা করে দেখতে পারেন। আমার পুলিস-বন্ধুরা এসে পড়েছেন। নীচে মোটর থেকে নামছেন। আচ্ছা, আজ আসি, নমস্কার।” সহসা টেলিফোন কাটিবার শব্দ হইল। মিঃ মজুমদার বিমূঢ় দৃষ্টিতে চাহিয়া রহিলেন। রাজনৈতিক নেতা বন্ধুটি কহিলেন, “কি হে, ব্যাপার কী? তোমার মুখখানা যে মৃত মুখের মত দেখতে হল।” মিঃ মজুমদারের মুখে সশ্রদ্ধ হাসি ফুটিয়া উঠিল;তিনি কহিলেন, “আশ্চর্য এই লোকটা! পুলিস তাকে ধরতে যাচ্ছে, বাড়ীর উপরতলা থেকে দেখছে যে সশস্ত্র পুলিস উপস্থিত হয়েছে, তবুও নির্বিকার স্বরে কথা বলছে। এতটুকু ভয়ের ভাব বা স্বরের বিকৃতি ধরতে পারলুম না।” বন্ধু কহিলেন, “পুলিস কি সফল হবে?” - “ক্ষেপেছ তুমি? যে লোক পুলিস আসছে জেনেও পালাবার প্রচুর সুযোগ পেয়েও পালায় না, তাকে ধরবে পুলিস? এখন খবরটা নেওয়া বিশেষ প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু মুশকিল এই যে, কোথা হতে সে কথা বললে, জেনে নেওয়া হয়নি। আচ্ছা দাড়াও, চেষ্টা কোরে দেখি।” বলিয়া সম্পাদক মহাশয় রিসিভার তুলিয়া কানে দিয়া কহিলেন, “এক্সচেঞ্জ কনেকসন করুন।” ు অনতিবিলম্বে এক্সচেঞ্জের স্বর শুনিয়া মিঃ মজুমদার কহিলেন, “আমি সম্পাদক বাঙলার ডাকের। আচ্ছা এই মাত্র আমাদের যে কনেকসন দিয়েছিলেন কোন নম্বর বা কোথা থেকে কথা হচ্ছিল বলতে পারেন?” . এক্সচেঞ্জের তরুণী কহিল, “দুঃখিত, আমরা পারলেও আপনাকে দিতে পারবো না, নিষেধ আছে। ধন্যবাদ!” দ্বিতীয় অনুরোধের জন্য অপেক্ষা না করিয়া যোগাযোগ ছিন্ন হইয়া গেল। সম্পাদক মহাশয় ক্ষুব্ধ স্বরে কহিলেন, “এতবড়ো একটা সংবাদ পেয়েও পেলাম না! বন্ধুবর সম্পাদকের মনের দুঃখ অনুভব করিতে পারিয়া হাসিয়া উঠিলেন।