পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৩৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Վ) B B মোহন অমনিবাস তিনি একবার দেখেই তোমাকে সেদিন চিনতে পেরেছিলেন? সত্যি বলছি তুমি অমত করো না। এবার যদি তোমাকে তিনি চিনতে পারেন, আর যে ভুল তুমি এইমাত্র করে মোহন বাধা দিয়া সবিস্ময়ে কহিল, “ভুল করে এলাম?” : “আশ্চর্য এত তীক্ষ্ণ বুদ্ধি যার, সেও সময়ে এমন সাধারণ ব্যাপারও ধরতে পারে না, এর চেয়ে বিস্ময়ের কি আছে বলতে পারো?” এই বলিয়া রমা মোহনের মুখের উপর পূর্ণ দৃষ্টিতে চাহিল। মোহন ভূ-কুঞ্চিত করিয়া ক্ষণকাল চিন্তা করিয়া কহিল, “এখনও পারলাম না।” রমা মৃদু মান হাস্যে কহিল, “দুদিনে যখন বেশির ভাগ মহাল নিলামে উঠছে তখন মায়াপুরের যে কুমার এক কলমের খোচায় একটা তুচ্ছ চ্যারিটি অভিনয়ের দশখানা বক্সই হাজার টাকায় কিনে নিতে পারেন, তেমন লোককে দর্শন করে ধন্য হবার জন্য মিঃ বেকারের যে প্রাণ আকুলি-বিকুলি করবে, তা আমি এখন থেকেই বেশ পবিষ্কারভাবে দেখতে পাচ্ছি। সেজন্য বেকারকেও তুমি দোষ দিতে পারো না।” মোহন চক্ষু অর্ধ-নির্মালিত অবস্থায় শুনিতেছিল। কহিল, “মন্দ বলো নি, রাণী, তবে একটু গলদ রয়ে গেছে। যদি অনুমতি দাও তো সেটুকু দেখিয়ে দিই?” রমা অসহ বিস্ময়ে ভাঙ্গিয়া পড়িয়া কহিল, কি বলো? “বেকার আসছেন, হোম মেম্বারের সঙ্গে কোন এক জরুরী বিষয়ের আলাপ-আলোচনা করতে—থিয়েটার দেখতে নয়। তাছাড়া তিনি যে-শ্রেণীর মানব, সে শ্রেণীতে বাসু-শ্রেণীর মানবেরা এসব খোস গল্প করে না। এতএব হে দেবী, তুমি প্রসন্ন হতে পারো।” এই বলিয়া সহসা সশব্দ হাস্যে মোহন ভাঙ্গিয়া পড়িতে লাগিল। রমা কিছুক্ষণ নীরবে থাকিয়া কহিল, “আচ্ছা, এই উৎকণ্ঠার চিরতরে নিরসন করা যায় না?” মোহন ভূ-কুঞ্চিত করিয়া কহিল, “অর্থাৎ?” রমা ধীর স্বরে বলিতে লাগিল, “অতীতে যে সব অন্যায় কাজ তোমার দ্বারা হয়েছে, সে সব অতীতের গর্ভে ডুবে গেছে; বর্তমানে তুমি আর কোন অন্যায় কররে না জানিয়ে যখন আমাকে ভাগ্যবতী করেছ, তখন এই যে দিবারাত্র একটা অশান্ত্ৰি,উৎকণ্ঠায় সর্বদা সজাগ থাকা–এর কিছু একটা করতে পারা যায় না... ..." মোহনের মুখে মান, ব্যথাতুর হাসি ফুটিয়া উঠিল। সে দরদটালা-স্বরে কহিল, “আমি জানতাম, তুমি সুখী হবে না, রানী। আমার মত একটা দসুর....” রমা অকস্মাৎ প্রবল বেগে বাধা দিয়া, মোহনের বক্ষের ওপর মস্তক রাখিয়া কহিল, “আবার যদি কোনদিন তোমার মুখে অমন নিদারুণ কথা শুনি, তবে নিশ্চয়ই বিষ খেয়ে মরব আমি। তুমি জানো আমি কত সুখী, তুমি জানো, আমার মত ভাগ্যবতী নারী ভারতে আর দুটি নেই, তবু আমাকে যদি এমন ভাবে...” রমার স্বর অশ্রুরুদ্ধ হইল। মোহন স্নিগ্ধ দৃষ্টিতে ক্ষণকাল রমার মুখের দিকে চাহিয়া রহিল; পরে কহিল, “সিমলায় রমা বিপুল আগ্রহভরে কহিল, “দাদু এসেছেন, কোথায় তিনি? একটিবার কি তার সঙ্গে দেখা করাতে পারো না ?”