পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৩৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আবার মোহন vó8 °ል মোহন কুতুহলী হইয়া কহিল, “দুটি প্রথমটি কোথায় হয়েছিল, রায়বাহাদুর ?” রায়বাহাদুরের মুখের হাসির চিহ্ন বিলুপ্ত হইয়া গেল। তিনি ক্ষণকাল গম্ভীর মুখে লসিয়া থাকিয়া কহিলেন, “না, আপনাকে বলব, কুমারবাহাদুর। আজ বাদে কাল যখন পৃথিবীর সকল মায়া চুকিয়ে যেতে হবে, তখন আর কাকে ভয় করব বলুন তো?” রায়বাহাদুর এই প্রশ্নের কোন জবাব প্রত্যাশা করেন নাই এবং পাইলেনও না। তিনি পুনশ্চ বলিতে লাগিলেন, “আপনি দস্য মোহনের কথা শুনেছেন, কুমারসাহেব?” মোহন কহিল, “দসু্যটার কথা কে না শুনেছে, রায়বাহাদুর ? শুনছি, পুলিস এইবার তাকে গ্রেফতার করবার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।” . রায়বাহাদুর তাচ্ছিল্য স্বরে কহিলেন, “লাগুন। মহাপ্রভুরা যখন লাগেন, তখন এমনি উঠেপড়েই লেগে থাকেন। কথা আমার তা নয়। আমি এই বলতে চাচ্ছি যে, সেই দস্যু মোহনের মত মহাপ্রাণ ব্যক্তি আর আমি দুটি দেখিনি—এইছিল আমার গর্ব, কিন্তু এখন দেখছি, তা নয়, আপনিও এমন একজন আছেন, যিনি মুক্ত হস্তে এমনভাবে দান করতে পারেন।” মোহন কহিল, “দেখুন রায়বাহাদুর, ওসব মহাপ্রাণতার কথা থাক। এখন আমি যে জন্য আপনাকে কষ্ট দিয়েছি তা বলি।” এই বলিয়া মোহন ক্ষণকাল দ্বিধা করিয়া পুনশ্চ বলিতে লাগিল, “আগ্রার মিঃ সোম আমার স্ত্রীর বিশিষ্ট আত্মীয় হন। উনি সেদিন জানালার ভিতর দিয়ে আপনাকে পথে দেখেন, আমাকে বলেন, আপনার সঙ্গে আলাপ করে মিঃ সোমের সংসারের খবর সংগ্রহ করতে। কারণ মিঃ সোমের কন্যার দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে, কন্যা-শোক তিনি সহ্য করতে পেরেছেন কি না, কোথায় আছেন বর্তমানে, এই সব খবর শোনবার জন্য তিনি অধীর হয়েছেন। - রায়বাহাদুর কহিলেন, “আপনার স্ত্রী সোমের কি রকম আত্মীয়, কুমার?” মোহন দ্বিধাহীন কষ্ঠে কহিল, “মিঃ সোমের শ্বশুরালয় সম্পর্কে, রায়বাহাদুর।” রায়বাহাদুর ক্ষণকাল ভূ-কুঞ্চিত করিয়া চিন্তা করিলেন; পরে কহিলেন, “ও! এইবার বুঝেছি। সোমের একমাত্র মেয়ে রমার মৃত্যু শুধু সোম কেন, আমার বুকেই কি কম যেন ভেঙ্গে দিয়েছে।” এই বলিয়া রায়বাহাদুর অকস্মাৎ হু হু শব্দে অশ্রুবর্ষণ করিতে লাগিলেন। ഷ് “সোমের অতুল সম্পত্তি। একটা মেয়ে—চলে গেল। ভোগ করবে শুধু একটা ছেলে। তা’রও সে স্বাস্থ্য আর নেই। সোম শয্যাগত। তারা আগ্রার প্রাসাদ বন্ধ করে বর্তমানে পুরীর বাড়ীতে বাস করছে। সিমলা আসবার পূর্বে সরোজের একখানা পাত্ৰ পাই, জানতে পারি, পুরীর জল বাতাসে সোমের স্বাস্থ্য অনেকটা উন্নত হইয়াছে।” মোহন কহিল, “আপনি কি সিমলাতে প্রায়ই আসেন ?” রায়বাহাদুর হাসিয়া কহিলেন, “তেমন সৌভাগ্য কি আমরা করেছি, কুমারসাহেব ?’ নিতান্ত দায়ে পড়ে আসতে হয়েছে। ডাক্তার দেখাচ্ছিলাম—শরীর অসুস্থ, হঠাৎ নোটিশ পেলাম যে, পাহাড়ে গিয়ে বাস না করলে, আগ্রা-বাসও চিরতরে এবং অচিরে ছাড়তে