পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৩৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আবার মোহন ՉՑ :) “করি রায়বাহাদুর। এই জগতে কত আশ্চর্য কাহিনী দিকে দিকে সংঘটিত হচ্ছে, আর গুলি-বিদ্ধ একটি নারী কি আর আরোগ্য হতে পারেন না?” এই বলিয়া মোহন চাহিয়া দেখিল, রায়বাহাদুরের মুখ অস্বাভাবিক রূপে উজ্জ্বল হইয়া উঠিয়াছে। এসে উপস্থিত হচ্ছেন। তার উদ্দেশ্য কি বলতে পারেন কুমারবাহাদুর ?” মোহন কহিল, “না! তা’ হ’লেও আমাদের আনন্দিত হওয়া ছাড়া চিত্তিত হবার কোন হেতু নেই।” “তা নেই।” এই বলিয়া রায়বাহাদুর অকস্মাৎ অসম্ভব রকম গভীর হইয়া কহিলেন, “কিন্তু আমার মন কি বলছে, জানেন? মিঃ বেকার যখন এমন একজন লোক, যিনি বিনা গভীর উদ্দেশ্যে কখনও একটা মিনিটও অপব্যয় করেন না, তখন আমার এই ধারণা করা কি অন্যায় যে, মোহনও এখানে আছে?” মোহন অতিমাত্রায় বিস্মিত হইয়া কহিল, “আপনার ধারণার ভিত্তি কি ?” “কিছুমাত্র না। তবে মিঃ বেকারের কার্যাবলী যিনি লক্ষ্য করেছেন, তিনিই বুঝতে পারবেন যে, বেকার বিনা উদ্দেশ্যে কোন কাজ করেন না।” এই বলিয়া রায়বাহাদুর অকস্মাৎ মৃদু হাসিয়া পুনশ্চ কহিলেন, “আমার সঙ্গে যদি মোহনের দেখা হয়ে যায়, তা’ হ’লে তাকে বলি, ভায়া সরে পড়ো।” - রায়বাহাদুর উচ্চ শব্দে হাসিয়া দাঁড়াইয়া উঠিলেন। সঙ্গে সঙ্গে মোহন দাঁড়াইল। হাসিতে হাসিতে কহিল, “আমি ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি, রায়বাহাদুরের বাসনা পূর্ণ হোক।” রায়বাহাদুর কহিলেন, “কিন্তু আমার ও বাসনা পূর্ণ হ’লেই কি আর ধনের ইচ্ছা পূর্ণ হবে, কুমারবাহাদুর ?” “কেন হবে না?” মোহন জিজ্ঞাসা করিল। রায়বাহাদুর স্নান স্বরে কহিলেন, “আমার মত নির্বোধের বুদ্ধি নিয়ে মোহন ভায়া কাজ করবে, এমন বাসনা প্রকাশ করার মত ধৃষ্টতা আর কি আছে, কুমারসাহেব?” মোহন চিন্তিত মুখে কহিল, “আপনার যুক্তির যদি জোর থাকে, তবে তাকে শুনতেই আছে।” এই বলিয়া রায়বাহাদুর ক্ষণকাল একাগ্ৰদূষ্টিতে মোহনের দিকে চাহিয়া রহিলেন, পুনশ্চ কহিলেন, “আজ আসি, কুমার। দু'একদিন এখন আছেন তো?” মোহন তীক্ষ্ণদৃষ্টিতে চাহিয়া কহিল, “খুব সম্ভবতঃ এখন কিছুদিন আছি। তবে মনের খেয়ালের কথা জোর করে কিছু বলা যায় না, রায়বাহাদুর।” . - “তা’ তো যায়ই না।” এই বলিয়া রায়বাহাদুর ক্ষণকাল দ্বিধাগ্রস্ত থাকিয়া পুনশ্চ কহিলেন, “যদি অনুমতি পাই, তবে কাল একবার আসব। আজ আর রানীমার সঙ্গে দেখা করবার সুযোগ হ’ল না, কাল যদি অনুমতি করেন....” মোহন সহাস্যে কহিল, “নিশ্চয়ই! আপনার এখানে অবারিত দ্বার, রায়বাহাদুর।”