পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՎԶ 2 মোহন অমনিবাস (o) r কালীঘাট ট্রাম ডিপোর নিকট একটি ত্রিতল বাড়ির সম্মুখে পুলিসের মোটর উল্কাবেগে ছুটিয়া গিয়া থামিতে না থামিতে ছয়জন সাজেন্ট ও একজন অফিসার উদ্যত রিভলবার হস্তে লাফাইয়া অবতরণ করিল এবং বাড়ীর নম্বর দেখিয়া লইয়া দুইজন সাজেন্ট বহিৰ্দ্ধারে পাহারায় রহিলেন ও বাকী পাঁচজন বাড়ীর ভিতর প্রবেশ করিলেন। তাহারা এরূপ উত্তেজিত হইয়াছিলেন যে, দ্বার-প্লেটে কাহার নাম-লেখা রহিয়াছে বা বাড়ীতে কে বাস করেন, তাহা দেখিবার মত র্তাহাদের অবসর বা চিন্তাশক্তি সম্পূর্ণরূপে লোপ পাইয়াছিল। সশস্ত্র উদ্যত রিভলভার হস্তে পুলিস-বাহিনীকে বাড়ীর মধ্যে প্রবেশ করিতে দেখিয়া, মাঙ্গতে ? এ কুঠী জজসাহেব কা হ্যায়, হুজুর” জজসাহেবর কুঠী! অনারেবল জাস্টিস মিঃ বটব্যালের বাস-ভবনে তাহারা প্রবেশ করিয়াছে? পুলিস-বাহিনীর উৎসাহ নিমেষে অন্তহিত হইল। পুলিস অফিসার কহিলেন, “এ কুঠীমে ওহি ডাকু মোহন হ্যায়, সেপাই। টেলিফো কোন ঘরমে হ্যায়?” “ডাকু মোহন হ্যায় জজসাহেব কো কুঠীমে?” পাহারাওয়ালার মুখে অবিশ্বাসের দীর্ঘ হাসি দেখা দিল। কহিল, “জজসাহেব কা বহুৎ ব্যামার হুজুর! ডাংদার সাব উপরমে গিয়া, সেক্রেটারী সাব বি উপর গিয়া, আপলোক অফিসমে ঠাহরিয়ে! আইয়ে হুজুর” পুলিস সাজেন্টগণ মুখ চাওয়া-চাওয়ি করিতে লাগিল। অফিসার প্রমাদ গনিলেন। তাহাদের সকল আশা বুঝি লোপ পাইয়া যায়। এক্সচেঞ্জ বাড়ীর নম্বর দিতে ভুল করিল না ত? নিশ্চয়ই কিছু গোলমাল করিয়াছে, নহিলে হাইকোর্টের মহামান্য জজের বাড়ীতে দসু মোহন থাকিবে, ইহা অপেক্ষা অবিশ্বাস্য ঘটনা আর কি হইতে পারে? সেপাই পুনরায় কহিল, “আইয়ে, হুজুর।” সেপাইয়ের পিছনে সাজেন্টগণ ও অফিসার ক্ষুন্ন মনে অফিস-ঘরে প্রবেশ করিলেন দেখিলেন, যে-ঘরে টেলিফোন আছে, তাহা সেক্রেটারীর ঘর—চাবি বন্ধ; কারণ সেক্রেটারী ডাক্তারের সহিত জজ সাহেবের কক্ষে গিয়াছেন। ഭ് সেপাই পুলিস-দলকে বসাইয়া ধীরে ধীরে বাহির হইয়া আসিল এবং ফটকের অনতিদূরে যে ছোট্ট ঘর গেটের পুলিস-প্রহরীর আবাসস্থলরূপে ব্যবহৃত হয় তথায় গমন করিয়া আপন আপন পোশাক খুলিয়া ফেলিয়া, মেঝের উপর.য়ে ব্যক্তি হস্ত-পদ-মুখ বন্ধ অবস্থায় পড়িয়াছিল তাহার অঙ্গের উপর রাখিয়া দিয়া কহিল, “মনে কিছু কোরো না, সেপাই ! এই রইল তোমার বক্শিশ। আমি আসি। রাম! রাম! একখানি দশ টাকার নোট তাহার কাপড়ের খুঁটে বাধিয়া দিয়া বাহির হইবার পূর্বক্ষণে কহিল, “অফিস ঘরে একদল সার্জেন্ট আর অফিসার বসে আছে। একটু পরেই তারা তোমাকে বাঁধন-মুক্ত কোরে দেবে। তাদের বোলো, কেমন কোরে তোমাকে ফটক থেকে এনে এ অবস্থায় রাখতে বাধ্য হয়েছি। আচ্ছা, রাম রাম, সেপাই সাহেব। দসু মোহনের সেলাম তোমার মনিবদের দিও। আর এই পত্ৰখানা....”বলিয়া মোহন ব্যস্তভাবে একখানি পত্র লিখিয়া সেপাইয়ের সম্মুখে রাখিয়া দিল। পুলিস-সেপাই বিস্ফারিত দৃষ্টিতে চাহিয়া রহিল। তাহার চোখে-মুখে তখন বিস্ময় ফাটিয়া পড়িতেছিল।