পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৩৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আবার মোহন w©öo একমাত্র এই কারণের জন্যই আমি নিজের ওপর ক্রুদ্ধ হয়ে উঠেছি, নিজেকে জিজ্ঞাসা করছি, ওরে হতভাগ্য, ওরে নিবোধ, যে-বস্তুর জন্য তুই শোকের প্রবাহে ভেসে ভেবেছিলি, কোনদিন এর প্রবাহ রুদ্ধ হবে না, আজ তুই তাকে কাছে পেয়েও, বোঝবার ভুল করে প্রকাণ্ড নির্বোধের মত ফিরে এলি ?” মিঃ বেকার বিশেষ অভিজ্ঞ ব্যক্তি, তিনি একজন বিখ্যাত মনস্তত্ত্ববিদ্‌ পণ্ডিত। তিনি রায়বাহাদুরের এই উত্তেজনা সম্যক বুঝিতে পারিলেন। তিনি ইহাও বুঝিতে পারিলেন যে, রায়বাহাদুরকে সন্দেহ করিবার কোন ভিত্তিই নাই। সুতরাং তিনি অকারণে সময় অপব্যয় করতে না চাহিয়া কহিলেন, “আপনার হতাশায় সহানুভূতি জানাতে না পারলেও, আমি সব বুঝেছি, রায়বাহাদুর। উত্তম, গুড় বাই। - রায়বাহাদুর বাগ্র কণ্ঠে কহিলেন, “না স্যার, না। একটু অপেক্ষা করুন। আমার গোটা বাধা দিয়া মিঃ বেকার কহিলেন, “কোন ভূমিকার প্রয়োজন নেই, রায়বাহাদুর। আপনি শীঘ্ৰ কাজ শেষ ক’রে নিলেই আমি বাধিত হব।” রায়বাহাদুর এক মুহূর্ত দ্বিধা করিয়া কহিলেন, “মোহনকে, দসু মোহনকে ধরতে পারেন নি?” יין והל" “এ কথা কি সত্য যে, আমাদের রমা বোনটিই তার কাছে এখানে ছিল, মিঃ বেকার?” মিঃ বেকার মৃদু হাসিয়া কহিলেন, “আপনার মতই আমাদেরও আনুমানিক সিদ্ধান্ত তাই, রায়বাহাদুর।” “তবে সন্দেহ আছে?” রায়বাহাদুর প্রশ্ন করিলেন। “আপনার উদ্দেশ্য ধরতে পারলাম না, রায়বাহাদুর।” মিঃ বেকার জবাব দিলেন। রায়বাহাদুর কহিলেন, “আমি বলতে চাইছি যে, স্ত্রী-হিসেবে যিনি এখানে বাস করছিলেন, তিনি অন্য কোনও স্ত্রীলোকও ত হতে পারেন?” “তা পারেন।” মিঃ বেকার মৃদু হাসিলেন। পুনশ্চ কহিলেন, “কিন্তু আমি যে দসু্যু মোহনকে চিনি, সে দসু্য ঠিক, সে অপরের ধন লুণ্ঠন করে, এও সত্যি; কিন্তু সবার উপর সে যে একজন চরিত্রবান আদর্শস্থানীয় পুরুষ, তা স্বীকার করতেও আমার সঙ্কোচ নেই, রায়বাহাদুর। তাছাড়া আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে-মহিলাটি রোগশয্যায় এখানে ছিলেন তিনি আপনাদের রমা দেবী ব্যতীত আর কেউ নন।” (vr রায়বাহাদুর আনন্দ উত্তেজনায় অস্থির হইয়া, মিঃ বেকার সতর্ক হইবার পূর্বেই তাহার একখানি হাত দুই হাতে জড়াইয়া ধরিয়া সোল্লাসে কহিলেন, “ভগবান আপনাকে শতায় করুন, মিঃ বেকার। আপনি স্বাস্থ্যে সম্পদে ধনবান হোন। আপনি শান্তি পান, এই আমি দয়াময় পরমেশ্বরের নিকট প্রার্থনা করছি!” ইহার পর মিঃ বেকার রায়বাহাদুরের নিকট বিদায় লইয়া প্রস্থান করিলেন। প্রফুল্লকুমার র্তাহার চক্ষুতে ‘old fool’ রায়বাহাদুরের প্রতিপত্তি, সাহস, কথা কহিবার অসাধারণ শক্তিতেও মুগ্ধ আশ্চর্য হইয়া অকস্মাৎ প্রণাম করিয়া কহিলেন, “আমাকে মার্জনা করুন, দাদু।”