পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৩৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

७१ २ মোহন অমনিবাস মিঃ বেকারের মুখভাব গম্ভীর হইয়া উঠিল। তিনি ক্ষণকাল চিস্তিত মুখে দাড়াইয়া থাকিয়া কহিলেন, “তা’ বটে। কিন্তু আমার মনে হয়, তা? সে করবে না। কারণ সত্যই যদি সে কারেন্সি অফিস লুঠ করবার মত কোন দুঃসাহসিক কল্পনা ক’রে থাকে, তবে সে তা’ প্রচার করে অনর্থক তার পথে বাধার সৃষ্টি করবে, এমন মনে হওয়া একটু অস্বাভাবিক নয় কি ? মিঃ স্যানিয়েল কহিলেন, “কিছুই অস্বাভাবিক নয়, মিঃ বেকার। কিন্তু কথা হচ্ছে, যদি দসু্য মোহন তা’র এই দম্ভ সার্থক করতে পারে, তাহলে আমাদের কর্মজীবন, শুধু কর্মজীবন কেন,ইহ-জীবনের সব কিছুই নিঃশেষে লয় পেয়ে যাবে। তারপর বেঁচে থাকার কোন সার্থকতাই আমি দেখতে পাইনে।” মিঃ বেকার সক্রোধে ভূমিতে পদাঘাত করিয়া কহিলেন, “আমি এই দস্যুটাকে এমনি করে চুর্ণ করে ফেলব। তা’র এই দম্ভ, এই ভীতি প্রদর্শন আমি চিরতরে বিলোপ করে ছাড়ব। স্কাউনড্রেলের সাহস গগনচুম্বী হয়ে উঠেছে। এইবার তাকে আমি চূর্ণ করে ধূলার সঙ্গে মিশিয়ে দেব। দেখাবো, মিঃ বেকারের শক্তি একটা দসু্যর চেয়ে কতগুণ বেশী। উঃ কি স্পর্ধা, অসহ্য, অসহ্য! বলিতে বলিতে মিঃ বেকার বাহির হইয়া অপেক্ষমাণ মোটরে আরোহণ করিলেন। মিঃ স্যানিয়েল আরোহণ করিবার পর মিঃ বেকার সোফারের দিকে চাহিয়া কহিলেন, “কমিশনার সাব-কা কুঠি।” s মোটর একটু মৃদু গর্জন করিয়া নিঃশব্দ গতিতে ছুটিতে লাগিল। : (SS) আজমীঢ় হইতে প্রায় বিশ মাইল উত্তরে, যেখানে পর্বতশ্রেণীর মধ্যে সুবিস্তীর্ণ সমতল উপত্যকার সমাবেশ হইয়াছে, সেই স্থানটি এক করদ রাজার রাজ্যভুক্ত। এই মনোরম স্থানে একদা হয়তো প্রাকৃতিক দৃশ্যে মুগ্ধ হইয়া রাজবংশীয় কোন শৌখিন পুরুষ প্রস্তর-নির্মিত একটি দ্বিতল অট্টালিকা নির্মাণ করাইয়াছিলেন, কিন্তু যে-কোন হেতু বশতঃই হোক, তিনি কিম্বার্তাহার পরবর্তী কেউ সেই অট্টালিকায় বাস করেন নাই। এই প্রস্তর গ্রথিত, দুর্গ সদৃশ অট্টালিকাটি নির্মাণ কাল হইতে শূন্য পড়িয়ছিল, বর্তমানে এক ধনী শৌখিন যুবক সন্ত্রক সেখানে বাস করিবার জন্য, রাজ সরকার হইতে অতি সামান্য বাৎসরিক ভাড়ায় বন্দোবস্ত করিয়া লইয়াছেন। of এই ধনী যুবকটি কোন প্রদেশবাসী তাহা জানা যায় নাই। তিনি ভাড়া অগ্রিম মিটাইয়া দিয়া সকল প্রকার প্রশ্ন ও অনুসন্ধান হইতে নিজেকে মুক্ত করিয়া লইয়াছিলেন। একদিন প্রাতঃকালে এই অট্টালিকার দ্বিতলে একটি সুসজ্জিত মনোরম কক্ষে বসিয়া ধনী যুবকটি তার স্ত্রীর সহিত আলাপ করিতেছিল। যুবকটি বলিতেছিলেন, “সত্যই আমি যে শপথ তোমাকে স্পর্শ করে করেছি, তা যে আমি কোন দিনই ব্যতিক্রম করতে পারব না, তা কি তুমি জানো না, রানী? আমি মরে যাবো, তবু আমাকে কোন প্রলোভনই শপথচ্যুত করতে পারবে না।” যুবক দস্য মোহন, আর রমার মধ্যে যে কথাবার্তা চলিতেছিল—তাহা না বলিলেও চলিতে পারিত, কিন্তু উপন্যাস-প্রথা ভঙ্গ হইত বলিয়াই সময় নষ্ট করিতে হইল।