পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৩৭২

আবার মোহন סיף פי রমা স্নিগ্ধ হাস্যে কহিল, “আমার কাছে এতো কোন নতুন সংবাদ নয়! তবে ?” “বলছি।” এই বলিয়া মোহন মুগ্ধ-দৃষ্টিতে প্রিয়তমা নারী রমার দিকে ক্ষণকাল চাহিয়া রহিল এবং পুনশ্চ কহিল, “আজ এই দুদিনটির কথা মনে পড়ে আমার। বেকারের গুলিতে তুমি অকস্মাৎ মেঝের ওপর লুটিয়ে পড়লে, আমার মনে হল, শিরে আমার বজ্রপাত হয়েছে। আমি উন্মাদ হয়ে গেলুম।” এই বলিয়া মোহন দুটি চক্ষু মুদিত করিয়া সহসা নীরব হইয়া গেল। রমা ম্লান স্বরে কহিল, “বার বার সেই একই কথা আলোচনা ক’রে কেন এমন কষ্ট পাও বলো তো? এখন আমি আবার আমাকে ফিরে পেয়েছি। আমার সকল আঘাত দুর্বলতা নিঃশেষে দূর হয়ে গেছে। আমি আবার মৃত্যুর দ্বার থেকে জীবনের প্রভাতে নেমে দাড়িয়েছি, তবে ওই পুরানো কথা তুলে তোমার নিজেকে আর আমাকে পীড়ন করাও কেন? তুমি এজন্য যত দুঃখ, বেদনা, শোক, পেয়েছ, তা’ স্মরণ করিয়ে দুৰ্বহ বেদনার শাস্তি ভোগ এইবার শেষ হোক, অতীতের সব কিছুর নিঃশেষে পরিসমাপ্তি হোক।” রমা আবেগভরে মোহনের একখানি হাত আপন দুই নবনীত, কোমল করতলে চাপিয়া ধরিয়া পুনশ্চ কহিল, “অমন লোভীর মত কি দেখছ তুমি?” মোহনের মুখে এমন একটি গভীর ভাব ভাসিয়া উঠিল, যাহা দেখিয়া রমার দৃষ্টি আর পলক ফেলিতে চাহিল না। f মোহন স্নিগ্ধহস্যে কহিল, “আর তুমি?” “তোমাকে।” রমা মধুর স্বরে হাসিয়া উঠিল। - - মোহন কহিল, “আর আমি ? তোমাকে।” এই বলিয়া দসু মোহন সশব্দ হাস্যে লুটাইয়া পড়িতে লাগিল। - সহসা রমার মনে কোন বিষয় উদয় হওয়ায়, সে ব্যগ্রস্বরে কহিল, “মিঃ বেকারকে এতদিন পরে আবার পত্র লিখলে কেন? কি লিখলে তাকে?” বুঝিতে না পারিয়া রমা জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে চাহিলে মোহন ড্রয়ার হইতে মিঃ বেকারকে প্রেরিত পত্রের নকলখানি রমার হাতে তুলিয়া দিল। ക് রম আগ্রহভরে পত্ৰখানি পাঠ আরম্ভ করিতেই তাহার মুখভাব এমন স্নান ও গম্ভীর হইয়া উঠিল যে তাহা দেখিয়া মোহন ভীত হইয়া উঠিল এবং নতস্বরে কহিল, “ভয় পেয়েছ, রানী?” - রমার হাত হইতে পত্রের নকলটি মেঝের উপর খসিয়া পড়িল। তাহার চক্ষু হইতে সহসা অশ্রুধারা নামিয়া আসিতে লাগিল। মোহন বিব্রত হইয়া কহিল, “একি রানী, তুমি কাদছ?” রমা অশ্রু-বিগলিত স্বরে কহিল, “এমন কাজ করলে কেন তুমি? তুমি যে আমাকে স্পর্শ ক’রে শপথ করেছিলে ?” মোহন ধীর অথচ দৃঢ় স্বরে কহিল, “আমি শপথ করেছি রানী যে, আমি জীবনে আর কোন অন্যায় কাজ করব না। আর সেজন্য আমাকে শাস্তিতে থাকতে দেবার জন্য আমি