পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৩৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মোহন অমনিবাস טיף פי বেকারকে ধাক্কা মারার সাধ হয় যখন, তখন...” এই অবধি বলিয়া মোহন মৃদু হাসিয়া পুনশ্চ কহিল, “তারপর কি হ’ল ?” “আমি বললুম, অন্ধ-নাচার বাবা’। এই বোলে যে চোখ বুজলুম, চাইলুম লালদীঘির উত্তর দিকে গিয়ে।” বিলাস গর্বভরে একবার চাহিয়া মুখ নত করিল। মোহন সপ্রশংস দৃষ্টিতে চাহিয়া কহিল, “বেকার ধরতে পারলেন না ? এমন দু’টো চোখ থাকতেও তুমি বাবা যখন অন্ধ সাজতে পারো, তখন তুমি আমাকেই না কোন দিন ডিঙ্গিয়ে যাও দেখছি।” সহসা বিলাস সন্ত্রস্ত হইয়া মোহনকে গড় হইয়া প্ৰণাম করিয়া কহিল, “আমন কথা বলতে নেই, কর্তা। পাপ হয়।” বিলাস এমন গম্ভীর মুখে কথা কয়টি উচ্চারণ করিল যে, মোহন সশব্দে হাসিয়া উঠিল। হাসি থামিলে কহিল, “তারপর?” ‘আর কি, কর্তা ?’ বিলাস নিরীহ স্বরে প্রশ্ন করিল। “সংবাদ-পত্রে নকল পাঠাসনি? মোহন তীব্র স্বরে প্রশ্ন করিল। বিলাস প্রভুর স্বরের তীব্রতায় কয়েক মুহুর্ত স্থির দৃষ্টিতে চাহিয়া থাকিয়া কহিল, “কি যে বলেন, কর্তা! পাঠাইনি আবার! আসবার দিনে হাওড়ার ডাকে দিয়ে এসেছি।” “বেশ করেছিস, বাবা। এখন যা, খাওয়া-দাওয়া সেরে একটু ঘুমিয়ে নে। তারপর সন্ধ্যের পর আমার সঙ্গে দেখা করিস। আমি কাল ভোরেই কলকাতা যাবো।” মোহন ধীর স্বরে কহিল। বিলাস তৃতীয় প্রণাম সারিয়া কক্ষ হইতে বাহির হইয়া পড়িল। ভিতর দ্বাৱ দিয়া রমা প্রবেশ করিল। মোহন চাহিয়া দেখিল, তখনও অশ্রুর দাগ রমার গণ্ডে লাগিয়া রহিয়াছে। মুগ্ধ দৃষ্টিতে চাহিয়া মোহন মানস্বরে কহিল, “মাত্র এইবারটি, তারপর আর কখনও পূর্বাহ্নে তোমার অনুমতি না নিয়ে কোন কাজে হাত দেব না, রানী।” রমা ক্লান্ত দেহে একখানি সোফায় অর্ধ-শায়িত অবস্থায় উপবেশন করিয়া কহিল, “তুমি নিষ্ঠুর, অত্যন্ত নিষ্ঠুর, হৃদয়হীন!” মোহনের মুখে অপূর্ব হাস্যরেখা ফুটিয়া উঠিল। সে কিছু বলিল না৯ চাহিয়া রমা ক্ষণকাল উত্তরে জন্য অপেক্ষা করিয়া পুনশ্চ ঞ্জি তুমি আমার অভিযোগ মোহন সহাস্যে কহিল, “জানি পণ্ডশ্রম হবে, রানী।” রমা স্নান স্বরে কহিল, “একটা দিনের জন্য তোমাকে পরিপূর্ণভাবে পেলাম না আমি সর্বদা ভয় মনে, এই বুঝি তুমি বিপদে পড়লে, এই বুঝি তুমি আমাকে ভুলে গেলে।” মোহন মিন্ধ স্বরে কহিল, “কিন্তু তুমি-তো জানো, ও-কথাগুলোর একটাও সত্যি নয়, রানী।” “সত্যি নয়?” এই বলিয়া রমা পূর্ণদৃষ্টিতে মোহনের দিকে চাহিল। মোহন কহিল, “কি ক’রে সত্য হবে, রানী? যখন আমি জানি তোমার অভিযোগের মধ্যে শুধু অভিমান ছাড়া আর কিছু নেই, তখন.....”