পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৪০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আবার মোহন 8 o Č বলিয়া তিনি মৃদু হাসিয়া পুনশ্চ কহিলেন, “আপনি কি ভয় পেয়েছেন, স্যার ?” কন্ট্রোলার একবার চারিদিক চাহিয়া লইয়া কহিলেন, “ভয় পাই নি বলতে পারলেই সুখী হতাম, মিঃ বেকার, কিন্তু সত্য কথা বলুন তো, আপনি কি এতটুকুও ভয় পান নি?” মিঃ বেকারের মুখে হাসি বিলুপ্ত হইয়া গেল। তিনি কহিলেন, “ভয় কাকে বলে আমি জানি না, স্যার।” কন্ট্রোলার বিস্মিত কষ্ঠে কহিলেন, “তবে এরূপ বিরাট আয়োজনের অর্থ কি, মিঃ বেকার ?” মিঃ বেকার কহিলেন, “ভয় পাওয়া এক বস্তু, আর কোন কিছু রক্ষা করবার চেষ্টা করা ভিন্ন জিনিস। যদিও আমি সর্ববিষয়ে সর্তকতা অবলম্বন করেছি, তবুও আমি এতটুকু ভীত হইনি।” কস্ট্রোলার কয়েক মুহুর্ত নীরব থাকিয়া কহিলেন, “ওই সিন্দুকের ভিতর গভর্ণমেন্টের এমন সব মহার্ঘ বস্তু আছে—যা খোয়া গেলে—আর কখনও তা’ পূরণ হবে না।” মিঃ বেকার চাপা বিস্ময়ে কহিলেন, “সিন্দুকটা দেখছি আপনি নিজের কাছে রেখেছেন! এরই কথা মোহন লিখেছে, না? কিন্তু আমাকে না জানিয়ে এমন ঝুঁকি মাথায় নিলেন কেন? এই ঘরটা স্ট্রং-রুমের চেয়েও নিরাপদ?” “হা, মিঃ বেকার। তাই আমি এটাকে স্ট্রং-রুমে রাখতে ভরসা পেলাম না। অবশ্য আমার এই ঘরটাও স্ট্রং-রুম।” কষ্ট্রোলার বলিলেন। মিঃ বেকার কহিলেন, “আপনার দ্বারের প্রহরী-সংখ্যা কি বাড়িয়ে দেবো?” “দিন৷” এই বলিয়া তিনি দ্বিধা-জড়িত স্বরে পুনশ্চ কহিলেন, “সত্যই কি ভয়ের কিছু আছে ?” মিঃ বেকার কহিলেন, “দসু মোহন যে একবার চেষ্টা করবে, সে বিষয়ে আমার সন্দেহ নেই। আপনি তো সশস্ত্র ?” “এই দেখুন।” বলিয়া কন্ট্রোলার তাহার টেবিলের সহিত সংযুক্ত একটি মেসিনগানের আচ্ছাদন উন্মুক্ত করিয়া দেখাইলেন এবং দুই পকেট হইতে দুইটি রিভলভার বাহির করিয়া মিঃ বেকার সন্তুষ্ট হইয়া কহিলেন, “এবার আমি নিশ্চিন্ত। কিন্তু একটা কথা বলে রাখি —আমি না আহ্বান করলে, এই ঘরের দ্বার আপনি কিছুতেই মুক্ত করবেন না। আপনি যতক্ষণ না নিঃসন্দেহ হচ্ছেন যে আমি এসেছি, ততক্ষণ কিছুতেই দ্বার খুলবেন না বা কাউকে ঘরে প্রবেশ করতে দেবেন না।” এই বলিয়া মিঃ বেকার চাহিয়া দেখিলেন, কন্ট্রোলারের চাপরাসী সশস্ত্র হইয়া অনতিদূরে দাড়াইয়া রহিয়াছে। তিনি পুনশ্চ কহিলেন, “আপনার চাপরাসীকেও ভিতরে থাকতে দেওয়া চলবে না।” কন্ট্রোলার ভারী গলায় কহিলেন, “তবে বাইরে থাকতে বলে দিন। কিন্তু অত্যন্ত বিশ্বাসী চাপরাসী আমার ” “তাহোক, স্যার। এ সময়ে আমি নিজেকেও বিশ্বাস করতে পারছি না। যতক্ষণ না পাঁচটা বেজে যাচ্ছে, ততক্ষণ আমি কাউকেই বিশ্বাস করি নে।” মিঃ বেকার দৃঢ় কষ্ঠে কহিলেন। কস্ট্রোলার কহিলেন, “কারেন্সি দ্বার তো বন্ধ হয়ে গেছে ?”