পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 মোহন অমনিবাস আরম্ভ করিলেন; সেক্রেটারী কহিল, “আপনি অপেক্ষা করুন, আমি পুলিস নিয়ে আসি।” বলিয়া পত্ৰখানি আশুতোষবাবুর হস্ত হইতে ছিনাইয়া লইয়া সে মোটরে চড়িয়া বাহির হইয়া গেল। জমিদার নীলরতনবাবু মাথায় হাত দিয়া সেইখানেই বসিয়া পড়িলেন। হরেন্দ্র ও বরেন্দ্র মানিক-যুগল পলায়নের অজুহাত খুঁজিতেছিল। সহসা বরেন্দ্ৰ কহিল,“হরেন্দ্র, তুই বাবুর কাছে থাক, আমি বাইরে থেকে একটা জরুরী কাজ সেরে আসছি।” হরেন্দ্ৰ কহিল, “না, না, তুই বস বরেন, তোর শরীর ভাল নয়, তোর বউ আবার রাগ করবে, আমিই সে কাজ সেরে আসছি।” আশুতোষবাবুর মুখ রক্তহীন বিবর্ণ। বরেন্দ্র শঙ্কিত দৃষ্টিতে ড্রইংরুমের দিকে চাহিয়া কহিল, “আমি কি বলি বাবু, আসুন, ফটকের বাইরে গিয়ে দাড়াই। কি জানি বলা তো যায় না! যদি কোন রকমে...” হরেন্দ্ৰ কহিল, “বোমাটা ফেটে যায়, তা হলে....” বরেন্দ্ৰ কহিল, “একেবারে সশরীরে বৈকুণ্ঠ-প্রাপ্তি। ঢের ঢের চোর দেখেছি বাবা, এমন ধাপ্পাবাজ আর দেখিনি। বোমা রেখেছে, সত্যি কি মিথ্যা চালাকি বার করছি।” । বরেন্দ্র এই অবসরে পলাইতেছে বুঝিতে পারিয়া হরেন্দ্র তাহাকে ধরিয়া কহিল, “কেন কাচা প্রাণটা দিবি, বরেন? তার চেয়ে তুই বস বাবুর কাছে, আমি দেখে আসছি।” হরেন্দ্র বাহির হইবার উপক্রম করতেই নীলরতনবাবু কুদ্ধ স্বরে কহিলেন, “গর্দভদের সময়-অসময় নেই ভাড়ামো করলেই হল। চুপ করে দাড়াও।” o হরেন্দ্র ও বরেন্দ্র একযোগে মুখ বুজিয়া একসঙ্গে পাশাপাশি দাঁড়াইয়া রহিল! : (SS) - অনতিবিলম্বে পুলিস-সুপারের সহিত একজন বিশেষজ্ঞ ও পুলিস-বাহিনী উপস্থিত হইয়া প্রাসাদ অবরোধ করিয়া ফেলিল। কাহাকেও বাহির হইতে বা ভিতরে আসিতে দিবার নিষেধাজ্ঞা জারি হইল। * পুলিস-সুপার কহিলেন, “কিরূপে এই ভীষণ বস্তু আপনার ড্রইংরুমে উপস্থিত হ’ল, তা আমাদের জানা প্রয়োজন।” তিনি ফটকের পুলিস-প্রহরী ও দ্বারবানের প্রত্যেককে জিজ্ঞাসা করিলেন ;কিন্তু কেহই কোন অপরিচিত ব্যক্তিকে ভিতরে প্রবেশ করিতে দেখে নাই বলিল। পুলিস-সুপার স্থানীয় ডিটেকটিভের সাহায্যে পুঙ্খানু-পুঙ্খরূপে প্রত্যেকের জবানবন্দি লইয়া এবং প্রত্যেকটি স্থান অনুসন্ধান করিয়া কোন নুতন লোকের গতিবিধি আবিষ্কার করিতে পারলেন না। অবশেষে তিনি সবিস্ময়ে কহিলেন, “মাত্র তিনজন ব্যক্তি আপনার ভাবী-শ্বশুর। আশা করি, এর ওপর আপনার কোন সন্দেহ নেই ?” নীলরতনবাবু ভীষণ বেগে মাথা নাড়িয়া কহিলেন, “রামচন্দ্র। উনি আমার অতি বিশ্বস্ত আত্মীয়। ওঁকে আমি আমার নিজের অপেক্ষাবিশ্বাস করি। তাছাড়া এতেওঁরকিস্বর্থআছে?”