পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৪১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 )는 মোহন অমনিবাস প্রায় অর্ধ ঘন্টা অতীত হইয়া যাইবার পর পুলিস-সুপারের অফিস হইতে একটি চাপর বাহিরে আসিয়া সোফারকে কহিল, “মিঃ বেকার আপনাকে বাঙলোয় যেতে করেছেন। তার ফিরতে দেরি হবে। তিনি পুলিস-সুপারের গাড়ীতে যাবেন।” সোফার এক মুহুর্ত দ্বিধা করিয়া, মোটরে স্টার্ট দিয়া মোটর ছুটাইয়া চলিয়া গেল। মিঃ বেকারের মোটর দৃষ্টির বাহির হইতে না হইতে অপর একখানি মোটর আসিয় শূন্য স্থান অধিকার করিল। যে-মোটরটি আসিল, তাহা আকারে, বর্ণে, প্রত্যেকটি খুঁটি-নাটি ব্যাপারে অবিকল পূর্বেকার মোটরটির মত। বিশেষভাবে দেখিলেও কোন পার্থক্য কোন স্থানেই লক্ষ্য করা যায় না। এমনকি সোফার পর্যন্ত অবিকল অভিন্ন-মূর্তি। ইহার দশ মিনিট পরে মিঃ বেকার বাহিরে আসিলেন এবং মোটরে আরোহণ করিবার পূর্বে কহিলেন, “পুষ্করের পথে চলো।” “বহুৎ আচ্ছা, হুজুর।” বলিয়া সোফার মোটর ছাড়িয়া দিল। মিঃ বেকার মোটরের এক কোণে হেলান দিয়া বসিয়া চক্ষু মুদিত করিয়া চিন্তা করিতে লাগিলেন। তিনি পুলিস-সাহেবের নিকট হইতে যে মূল্যবান তথ্য সংগ্ৰহ করিয়াছেন, তাহার মধ্যে কোন সত্য আছে কি-না, তাহা পরীক্ষা করিয়া দেখিতে চাহেন। তিনি শুনিয়াছেন যে, পুষ্করের উত্তরে পার্বত্য পথের শেষে সমতল-ভূমিতে এক দ্বিতল প্রস্তর নির্মিত অট্টালিকায় এক ভদ্রলোক সস্ত্রীক বাস করিতে আসিয়াছেন। তিনি দুই হাতে অর্থ ব্যয় করিতেছিলেন; কিন্তু তাহার আয়ের পথ কি এবং কোথা হইতে প্রচুর অর্থ আসে, আজমীঢ়ের পুলিস বহু চেষ্টা করিয়াও সে সম্বন্ধে কোন কিছু খোঁজ পায় নাই। মিঃ বেকারের মন আনন্দে উৎফুল্ল হইয়া উঠিয়াছিল। পুলিস-সুপারের প্রত্যেকটি বর্ণনার সহিত দস্য মোহনের স্বভাব ও সাদৃশ্য বেমালুম ভাবে খাপ খাইয়া যায়। সুতরাং তিনি অবিলম্বে অনুসন্ধান না করিয়া কিছুতেই ক্ষান্ত হইতে পারেন না। এক সময়ে মিঃ বেকার কহিলেন, “পুষ্করে পৌছে আমাকে বোলো, সোফার।” “হুজুর।” বলিয়া সোফার সম্মতি জানাইল। মিঃ বেকার পুনশ্চ চক্ষু মুদ্রিত করিয়া চিন্তা-সাগরে ডুবিয়া গেলেন। శ মোটর ছুটিতেছিল। মোটরের উল্কাবেগ দেখিয়া, মিঃ বেকার তাহার সোফারের নব কৃতিত্বে মুগ্ধ হইয়া একবার চিন্তা করিলেন যে, সোফার পর্যন্ত তাহাঁর সফলতার জন্য উদ্বিগ্ন হইয়া উঠিয়াছে। ఘ్ర সহসা একস্থানে মোটর দাড়াইয়া পড়িল। মিঃ বেকার চক্ষু খুলিয়া বিস্মিত হইয়া পড়িলেন; তিনি দেখিলেন, মোটর এক দুর্গম পার্বত্য গুহার সম্মুখে দাড়াইয়া পড়িয়াছে। সম্মুখে পথ নাই, দুর্গম জঙ্গলে সমাকীর্ণ। তিনি অতিমাত্রায় ক্রুদ্ধ হইয়া সোফারকে কিছু বলিতে যাইতেছিলেন, কিন্তু সময় পাইলেন না। তিনি পরম বিস্ময় ভরে দেখিলেন, তাহার সোফার ও দুইজন ভীমকায় ব্যক্তি একসঙ্গে তিনটি রিভলবার তাহার দিকে উদ্যত করিয়া দাড়াইয়া রহিয়াছে। তাহার সোফার বিশ্বাসঘাতক! ইহা তিনি যেন কিছুতেই ভাবিতে পারিতেছিলেন না। তিনি যেন বাক-শক্তি হারাইয়া ফেলিলেন। এমন সময় সোফার-বেশী দস্য মোহন স্বীয় মস্তকাবরণ খুলিয়া ফেলিয়া হাসিমুখে কহিল, “গুড় মণিং মিঃ বেকার! আপনাকে একটু