পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৪১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মোহন অমনিবাস טי כי 8 মিঃ বেকার কহিলেন, “না, বুঝি নি।” - মোহন কহিল, “বাকী সপ্তাহটা কেটে যাবার পর আপনার জীবন দুৰ্বহ অপমানে, লাঞ্ছনায় জরজর হবে, আমি আপনাকে আজীবন বন্দী করে রেখে তেমন সম্ভাবনা থেকে দূরে রাখতে চাই। সত্যিকার বন্ধুর মত আপনাকে রক্ষা করতে চাই। আশা করি, এইবার আপনি আমার উক্তির সরলার্থ বুঝেছেন, মিঃ বেকার।” মিঃ বেকার ঘৃণাভারে কহিলেন, “তোমার হাতে বন্দী হওয়ার চেয়ে মৃত্যুও শতগুণ শ্রেয়।” মোহনের মুখ ক্ষণিকের জন্য বিবর্ণ হইয়া পুনরায় স্বাভাবিক আকার ধারণ করিল; সে কহিল, “উত্তম! আমি আপনার মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করবো। আপনাকে আমি মৃত্যুই দেব। কিন্তু তা’র আগে আমার কয়েকটা প্রশ্নের জবাব দিন।” মিঃ বেকার কহিলেন, “বলো ?” মোহন কহিল, “মিঃ স্যানিয়েল চাকুরিতে ইস্তফা দিয়েছে, এ কথা সত্যি?” মিঃ বেকার তিক্ত কষ্ঠে কহিলেন, “হ্যা সত্য। ভদ্রলোকের জীবন, ভবিষ্যৎ—যা কিছু সব তুমিই নষ্ট করেছ, মোহন।” মোহন হাসিতে গিয়া পারিল না ; কহিল, “আর আপনারা, মিঃ বেকার ? আপনারা যে গ্রে-হাউন্ড কুকুরের মত দিবা-রাত্র আমার পিছনে ছুটোছুটি ক’রে প্রতিটি মুহুর্ত আমায় বিষাক্ত করে রাখছেন, তা’ কোন সময়েই অনুভব করতে পারেন নি ? সাধে আপনাদের আমি মানুষ না বলে কলের পুতুল বলে অভিহিত করি, মিঃ বেকার? আমার জীবন, আমার শাস্তি যে কিছুই নয় আপনাদের কাছে ! যত কিছু মূল্যবান, প্রয়োজনীয়, মহামূল্য প্রাণ আপনাদের হৃদয়ের মধ্যেই শ্রীভগবান ভরে পাঠিয়েছেন! ছিঃ, মিঃ বেকার, ছিঃ অন্তত আপনার মুখে আমি এমন জবাব প্রত্যাশা করি নি। মিঃ স্যানিয়েল—যে ধূর্ত আমাকে ফঁাসি কাঠে ঝোলাবার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছিল, যে-কপট চাকুরী ত্যাগ না করেও মনিবের সঙ্গে কপটতা করে যে-চাকুরী এতদিন বাঁচিয়ে রেখেছিল, বিধাতার সূক্ষ্মতর নিয়মে আজ যদি তা স্বেচ্ছায় ত্যাগ করতে হয়, তবে আমি বলবো, শুধু আমি কেন, সকলেরও বলা উচিত, আপনারও উচিত যে, ঠিকই হয়েছে, এর চেয়ে কোন যোগ্যতর বিচার হতে পারে না।” പ് মিঃ বেকার কহিলেন, “তোমারও বিচারের সময় বহুদিন উত্তীর্ণ হয়ে গেছে, মোহন।” মোহন একদৃষ্টে মিঃ বেকারের দিকে চাহিয়া থাকিয়া কহিল, “এইবার আমি সে সুযোগ গ্রহণ করবো।” এই বলিয়া সহসা সে তাবুর বাহিরে চলিয়া গেল। ($.6) মোহন যখন পুনশ্চ র্তাবুর ভিতর ফিরিয়া আসিল, দেখিল, মিঃ বেকার দুই চক্ষু মুদিত করিয়া বসিয়া রহিয়াছেন। মোহনের মৃদু পদশব্দে চক্ষু না খুলিয়াই মিঃ বেকার কহিলেন, “তারপর, মোহন ?” “আমি আপনাকে মুক্তি দেবো, মিঃ বেকার।” মোহন শুষ্কস্বরে কহিল। মিঃ বেকার চক্ষু চাহিয়া দেখিলেন, মোহনের মুখ অস্বাভাবিক গম্ভীর আকার ধারণ করিয়াছে। তিনি কহিলেন, “কেন মুক্তি দেবে মোহন ?”