পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৪১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 Հo মোহন অমনিবাস “দু একটা কেন, বহু প্রশ্নের জবাবই আমি দিতে পারি। কিন্তু একটু থামুন, বন্ধু। আজ আমার কোন কথা বার বার স্মরণ-পথে উদয় হচ্ছে, জানেন ? মাদ্রাজের প্রেসিডেন্সী জেলের কথা মনে পড়ছে। একটু পার্থক্য আছে বটে। সেবারে দুর্বার, দুর্ধর্ষ মিঃ বেকার স্বয়ং দসু্য মোহনকে গ্রেফতার করেছিলেন, কিন্তু রাখতে পারেন নি। এবারে....” সহসা মোহন নীরবে হইলে, মিঃ বেকার চিস্তাম্বিত স্বরে কহিলেন, ‘এবারেও কি তুমি থাকবে না, মোহন ?” মোহন হাসিয়া উঠিল; কহিল, “ভয় নেই, বন্ধু ভয় নেই। যদি থাকবার ইচ্ছা আমার না থাকতো, তবে স্বেচ্ছায় ধরা দিতাম না।” মিঃ বেকার আশ্বস্ত হইয়া কহিলেন, “তবে ?” মোহন কহিল, “তবে কিছু নেই, বন্ধু। আমি অপেক্ষা করছি আপনার জন্য। যেদিন আপনি প্রতিশ্রুত লক্ষ মুদ্রা আমার অতুলনীয় প্রিয়তমা রমার হাতে সমর্পণ করবেন, সেই দিনই আমি সকল চিন্তামুক্ত হব।” মিঃ বেকার বিস্মিত কষ্ঠে কহিলেন, “আমার স্বেচ্ছাদত্ত প্রতিশ্রুতিতে কি তোমার সন্দেহ আছে, মোহন ?” “কিছুমাত্র না।” এই বলিয়া মোহন মৃদু হাসিয়া কহিল, “তা যদি থাকত বন্ধু, তা হ’লে দসু মোহন শৃঙ্খল পায়ে নিত না। আচ্ছা, ও-কথা থাক। এখন আমি কি বলতে চাইছিলাম?” - মিঃ বেকার কহিলেন, “আমি অন্তর্যামী নই, মোহন।” মোহনের মুখে মৃদু হাসি ফুটিয়া উঠিল। সে কহিল, “জানি বন্ধু, জানি। তবু এক এক সময়ে ভাবি, আমার বন্ধু মিঃ বেকার এতখানি বুদ্ধিমান হয়েও, কেন অন্তর্যামী হ’লেন না। তা’ হ’লে অনেক কিছু দুর্বিপাক থেকেই রক্ষা পেতেন।” মিঃ বেকারের ভ্ৰ কুঞ্চিত হইয়া উঠিল। কহিলেন, “তোমার মতলব কি বল তো, মোহন ?” মোহন সোজা হইয়া চেয়ারে উঠিয়া বসিল এবং দুই চক্ষু বিস্ফারিত কুরিয়া কহিল, “লোকে যে বলে, পুলিসের—বিশেষ করে আই-বির ভদ্রলোকদের মন এমন সন্দিগ্ধ যে, তারা নিজেদেরও বিশ্বাস করতে পারেন না, কথাটা আমি বিশ্বাস করতাম না আগে, টাকাটা দিতে পারবেন ?” & মিঃ বেকার কহিলেন, “তোমার কি এমনই অর্থাভাব ঘটেছে, মোহন ?” মোহন হা-হা করিয়া হাসিয়া উঠিল, হাসি থামিলে কহিল, “দসু মোহনের অর্থাভাব। না বন্ধু, না। তা’র এত অর্থ আছে যে আগামী কয়েকটা জীবন লাগবে, তা’ ব্যয় করতে; কিন্তু অর্থ তো আমার নয়, বন্ধু! যাদের জন্য আমি এই বন্দী দশা বরণ ক’রে নিয়েছি, তা’রা যত শীঘ্র সেটা পায়, তা দেখাই কি আমার কত্তব্য নয়?” . মিঃ বেকার কিছুই বুঝিতে পারিলেন না; কহিলেন, “আগামী পরশ্ব তারিখে আমি চেকখানা মিসেস গুপ্তাকে দিয়ে আসব।” মোহন কিছু সময় চক্ষু মুদিত করিয়া থাকিয়া, আপন মনে কহিল, ‘পরশ্ব! হা পরশ্ব,