পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৪২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 Հ8 মোহন অমনিবাস মিঃ বেকার ক্ষণকাল নীরব থাকিয়া কহিলেন, ‘সত্যি মোহন, তোমার এই মূর্তিটা আমি ভাল রকমে বুঝতে পারি না। দসু্য তুমি, ডাকাতি করো — বেশ বুঝতে পারি, তখনই তুমি আমার চোখে রহস্যময় হয়ে ওঠো।” এই বলিয়া তিনি বাহির হইবার জন্য পা বাড়াইলেন। মোহন অধীর স্বরে কহিল, “আরে, এ কী চললেন যে? এত তাড়া কিসের বলুন তো? একটু বসুন, বন্ধু। একটা কথা আছে।” মিঃ বেকার ফিরিয়া দাড়াইলেন এবং না বসিয়া কহিলেন, কি কথা?” - মোহন আপন বক্ষের দুই হাতে চাপিয়া ধরিয়া কহিল, “গত রাত্রি থেকে আমি বিশেষ অসুস্থ বোধ করছি। আমার বুকের এই দু’পাশে যেন কিছু একটা গোলযোগ আরম্ভ হয়েছে। কিন্তু কিছুই বুঝতে পারছিনে ?” মিঃ বেকার উপবেশন করিয়া উদ্বিগ্ন কষ্ঠে কহিলেন, “ডাক্তারকে বলেছিলে ?” “বলেছিলাম। তিনি বিশেষভাবে পরীক্ষা ক’রে বললেন, ও কিছু নয়। আমার মনের খেয়াল!” এই বলিয়া মোহন মৃদু হাসিয়া পুনশ্চ কহিল, “খেয়াল। হবেও বা। কিন্তু....” মিঃ বেকার উৎকণ্ঠিত স্বরে কহিলেন, “না, না, তা হবে না, আমি বাইরের বিশিষ্ট সাজেনকে দিয়ে পরীক্ষার বন্দোবস্ত করছি।” মিঃ বেকার উঠিয়া দাড়াইলেন। মোহন হাসিতে হাসিতে কহিল, “ভয় পেয়ে গেলেন, বন্ধু? যদি ফাঁকতালে পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে বিচারের পূর্বেসরে পড়ি, তা হলে আপসোসের সীমা থাকবে না,—বন্ধু।” মিঃ বেকার প্রশ্নের কোন জবাব না দিয়া কহিলেন, “আমি আবার আসব, মোহন। আর একটা সুখবর দিয়ে যাই, আগামী সোমবার থেকে তোমার বিচার আরম্ভ হবে।” মোহন হাসিমুখে কহিল, “এত তাড়া। তাই তো!” মিঃ বেকার বাহির হইয়া গেলেন। (Sb) o পরদিন প্রভাতিক বাঙলার ডাক সংবাদপত্রে মোহন-পত্নীর যুদ্ধে অনাথ ভান্ডারে এক লক্ষ টাকা দানের কথা সম্মুখ-পৃষ্ঠায় বড়ো বড়ো অক্ষরে ছাপা হইয়া বাহির হইল। সমগ্র কলিকাতার নর-নারী—তথা সমগ্র জগৎ—দসু মোহনের মহীয়সী -পত্নীর এই মহান দানের কথা শুনিয়া বিস্মিত হইল যতো, মুগ্ধও ততো হইল। পরামর্শদাতাদের পরামর্শ গ্রহণ করেছেন, কিন্তু মোহনের অনুকুলে তারা মত প্রকাশ করেন নি। যদিও স্বয়ং গর্ভনরের ইচ্ছা ছিল যে, দান যেরূপ মহৎ উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে করা হয়েছে, তার প্রতিদান দসু মোহনকে ক্ষমা করা, কিন্তু তিনি বিশেষ দুঃখিত যে তেমন কিছু করা সম্পূর্ণ বেআইনী কার্য বলে অভিহিত হবে। সুতরাং মোহনের বিচারালয়ের সম্মুখীন হওয়া ভিন্ন গত্যন্তর দেখি নি।” মিঃ বেকার কহিলেন, “যদি মোহনকে এ ক্ষেত্রে ক্ষমা করা সম্ভব হত, আমিও সুখী হতাম, স্যার। মোহনও শাস্তির জন্য ব্যাকুল, তা আমরা জানি। আমি দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস