পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৪২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আবার মোহন 8 Հ(: করি, সে শুধু ক্ষমা পাবার উদ্দেশ্যেই এই মতলব ক’রে স্বেচ্ছায় ধরা দিয়েছিল।” কমিশনার সম্মতি-সূচক মস্তক দোলাইয়া কহিলেন, “আপনার যুক্তিই ঠিক। এখন আমি বুঝতে পারছি, কেন মোহন স্বেচ্ছায় ধরা দিয়েছিল। প্রথমে ভেবেছিলাম অর্থাভাবের দরুণ নব-পরিণীতা পত্নীকে সুখী করতে পারছে না, এই বিপদে পড়ে সে আত্মসমপর্ণ করেছে। তা’ ছাড়া আরও ভেবেছিলাম, পুরস্কারের অর্থ হস্তগত ক’রে, সে গতবারের মত জেল থেকে পালাবার চেষ্টা করবে। কিন্তু সে ধারণা যে আমার ভুল, তা’ এখন পরিষ্কার হয়ে গেল।” মিঃ বেকার কিছু সময় নীরবে চিন্তা করিয়া কহিলেন, “না, স্যার, সে এবার জেল থেকে পালাবার চেষ্টা করবে না। সে চায় নির্জনতা, সে চায় শান্তি। কিন্তু হঠাৎ সে যে এমন অসুস্থ হয়ে পড়বে, তাও ভাবতে পারি নি। আমার মনে হয়, তা’র মতলব পূর্ণ না হওয়াতেই আশা-ভঙ্গ-জনিত শোকে এমন সহসা পীড়িত হয়ে পড়েছে।” কমিশনার চিন্তিত স্বরে কহিলেন, “ডাঃ জোনস কি বলেন ?” মিঃ বেকার কহিলেন, “তিনি বলেন অদ্ভুদ ব্যাধি। তিনি না-কি তার কর্ম-জীবনে এমন ব্যাধির চিকিৎসা কখনও করেন নি। তা হলেও, ব্যাধি যে অত্যন্ত কঠিন, সে বিষয়েও তার সন্দেহ নেই।” “গভর্নমেন্টের ডাক্তার ব্রাউন কি বলেন?” কমিশনার উদ্বেগ প্রকাশ করিলেন। “তিনি বলেন, তিনি কখনও এমন রোগের নামও শোনেননি। তবুও তিনি ডাঃ জোনসের সঙ্গে একমত যে রোগটা অত্যন্ত কঠিন।” কমিশনার উদ্বিগ্ন মুখে কহিলেন, “রক্ষা পাবে তো?” মিঃ বেকার স্নান স্বরে কহিলেন, “কিছুই বলা যায় না, স্যার। গতকাল যখন যে ব্যক্তি সামান্য অসুখ-বিসুখে কাতর তো হয়ই না, উপরন্তু তা’ প্রকাশ করতেও লজ্জিত হয়। তখন নিশ্চয়ই কিছু গুরুতর ব্যাপার। তারপর আমি কয়েকজন শ্রেষ্ঠ চিকিৎসককে আহবান করি ও তাদের দ্বারা মোহনকে পরীক্ষা করাই। সকলে এক বাক্যে বলেছেন, যদিও এই অদ্ভুত ব্যাধির কথা তারা কেউ জানেন না, তবু যে ভারী সাংঘাতিক ব্যাধি সে বিষয়েও তাদের দ্বিমত নেই।” oố> ? কমিশনার কহিলেন, “চলুন, মিঃ বেকার, আমরা একবার তাকে দেখে আসি।” মিঃ বেকার বিস্মিত হইয়াও কোন প্রশ্ন না করিয়াই উঠিয়া পড়িলেন এবং উভয়ে বাহির হইয়া মোটরে আরোহণ করিলেন। Q মোহনকে জেল-হাসপাতালে মিলিটারী পুলিসের পাহারায় রাখা হইয়াছিল। গত রাত্রি হইতে তাহার বক্ষের দুই পাশ্বে তীব্র যাতনা অনুভূত হইতেছিল। চিকিৎসার কিছুমাত্র ক্রটী হইতেছিল না। কমিশনার ও মিঃ বেকার হাসপাতালে মোহনের শয্যাপাশ্বে উপস্থিত হইয়া দেখিলেন, মোহন দুই চক্ষু মুদিত করিয়া নিদ্রা যাইতেছে। কমিশনারকে রোগীর নিকট দেখিয়া একজন চিকিৎসক নিঃশব্দে দ্রুত পদে তাহার নিকট আসিয়া নত স্বরে কহিলেন, “রোগীর অবস্থা আদৌ আশাপ্রদ নয়, স্যার। রোগটা সহসা বাকা পথ ধরেছে।” - -