পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৪৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 Ծ Հ মোহন অমনিবাস দিচ্ছে। এখন ভাবছি কি অপরাধ করেছিল এই দুঃখীরা ? কি অন্যায় করেছিল এই অনাথেরা ? আমার কি অধিকার ছিল অনধিকার চর্চা করবার ? কি অধিকার ছিল তাদের সুখী করতে যাবার ? আজ আমার সে দপ, সে অহঙ্কার কোথায় রইল রানী ? আজ আমি কত নিরুপায়, কত অসহায়, আজ আমি কি যাতনা ভোগ করছি, কি ক’রে বোঝাব রানী? যদি জেল খেটে এই পাপের প্রায়শ্চিত হয়, যদি অন্য কেউ এই দায়িত্ব গ্রহণ ক’রে আমাকে মুক্তি দেয়, তবে আমি যে-কোন শাস্তি মাথায় তুলে নিতে পারি।” সহসা মোহন কক্ষ হইতে বাহির হইয়া গেল। রমার বুঝিতে এতটুকু বেগ পাইতে হইল না যে, এতগুলি অনাথাদের সাহায্য করিতে না পারিয়া মহান হৃদয়-স্বামী কতখানি ব্যাকুল হইয়াছে। এমন সময়ে একটি ভৃত্য সংবাদপত্র রাখিয়া গেল। রমা অন্যমনস্কভাবে সংবাদ পত্ৰখানি খুলিয়া পাঠ করিবার উপক্রম করিতেই একটি সংবাদের প্রতি র্তাহার দৃষ্টি আকৃষ্ট হইল। সে অস্ফুটে কষ্ঠে চীৎকার করিয়া উঠিল। “ভয় কি ? কি হয়েছে ? এই যে আমি তোমার পাশে, রানী।” রমার মূৰ্ছিত দেহ মোহনের হাতে লুটাইয়া পড়িল। মোহন দুই হাতে রমাকে অবলীলাক্রমে তুলিয়া লইয়া একটি সোফায় শয়ন করাইয়া দিল। তারপর সংবাদপত্ৰখানি তুলিয়া লইয়া সংবাদটি পাঠ করিতে লাগিল। মোহনের মুখ অস্বাভাবিকরূপে গম্ভীর হইয়া উঠিল। (>) মিঃ সোম দৈহিক স্বাস্থ্য পুনরূদ্ধার কল্পে, আগ্রার দুর্গ-প্রাসাদ ত্যাগ করিয়া পুত্র সরোজ ও পুত্রবধূ কবিতার সহিত তাহার পুরীধামের প্রাসাদোপম সুবৃহৎ অট্টালিকায় বাস করিতেছিলেন। অশান্ত সমুদ্রের কল্লোল ও ঢেউয়ের ভাঙ্গিয়া পড়ার উচ্ছাসে বাড়ীর আকাশ-বাতাস সর্বদা মুখরিত ছিল। প্রাতে ও সন্ধ্যায় সমুদ্রের বেলাভূমিতে ভ্রমণ করিয়া তখনও কন্যা রমার অভাব তাহার মনে দাবানল অনুভূতিতেই জাগ্ৰতছিল। মিঃ সোমের এই বিশ্রাম লাভ ভগবানের অভিপ্রেত নয়, তাই আঁর এক ভীষণ বিপদ রায় নামক এক ধনবান ব্যক্তিকে লুণ্ঠন করিতে গিয়া, গুলি করিয়া সাংঘাতিকভাবে আহত করিয়াছে। রায় সাহেবের অবস্থা সঙ্গিন। সরোজ অবিলম্বে অর্থ সমেত পুলিস কর্তৃক গ্রেফতার হইয়াছে। যে ভীষণ অপরাধের জন্য—অর্থাৎ ডাকাতি ও হত্যা করিবার চেষ্টায় —পুলিস সরোজকে গ্রেফতার করিয়াছে, তাহার সম্ভাব্য শাস্তি—যাবজীবন কারাদন্ড, অর্থাৎ তিলে তিলে মৃত্যু। মিঃ সোম পুত্রকে সাংসারিক কার্যের প্রয়োজনে কলিকাতায় পাঠাইয়াছিলেন। যেদিন হইতে তার পাঠাইয়া তাহাকে দুসংবাদ জ্ঞাপন করিয়াছেন। তিনি লিখিয়াছেন যে, তিনি লক্ষ