পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৪৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՅՎ)Ն, মোহন অমনিবাস সভোর নিকট এই গুপ্ত দলিলপত্র ছিল, তিনি এক বন্ধুর আশ্রয়ে থাকিবার সময় পীড়িত হইয়া পড়েন ও তাহার আশ্রয়েই মৃত্যুমুখে পতিত হন। কাগজ-পত্র বন্ধুর হাতে গিয়া পড়ে। এই বন্ধুই বর্তমানে রায় সাহেব অবিনাশ রায়। এই অবধি বলিয়া মিঃ সোম নীরব হইলে, রমা আতঙ্কিত স্বরে কহিল, “তারপর বাবা ?” “তারপর বছরের পর বছর কেটে যায়। সেকালের যুবক-সন্ত্রাসবাদীরা একালের সব গণ্যমান্য ব্যক্তি হয়ে পড়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন গভর্নমেন্টের উচ্চপদে অধিষ্ঠিত আছেন। আমি ব্যবসায়ে প্রচুর ধন উপার্জন করি। সন্ত্রাসবাদের জন্য বহু যুবকের দন্ড হয়, র্তাদের চিরজীবন ব্যর্থ হয়ে যায়। কিন্তু এই বারোটি যুবকের কোন হদিশ পুলিস করতে না পারায়, তাদের কথা চাপা পড়ে যায়। কিন্তু ধূর্ত অবিনাশ প্রায় বিশ বৎসর অপেক্ষা করে দেখলে, সেকালের যুবকেরা এখন ধনী ও মানী হয়ে সমাজের স্তম্ভরূপে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছেন, তখন সে তাদের প্রত্যেকের কাছে ঐ গুপ্ত প্রতিজ্ঞা-পত্রের এক কপি নকল পাঠিয়ে দেয় ও জানায় যে, কোন কিছু একটা বন্দোবস্ত না করলে, সে গভর্নমেন্টের কাছে ওই প্রতিজ্ঞা-পত্র দাখিল করবে। ফলে যে দ্বাদশ জন যুবক এখন মহামানী ব্যক্তিরূপে পরিগণিত হয়েছেন, তারা প্রত্যেকেই ধূর্তের দাবি মত অর্থ দিয়ে নিজেদের মান, সন্মান, প্রতিপত্তি বঁচিয়ে চলেছেন। তাই কি একবার কিছু অর্থ পেয়ে ধূর্ত শান্তি পাচ্ছে? সে প্রতি বছর প্রত্যেকের কাছে বধিত দাবি পেশ করে এবং দেবার ক্ষমতা না থাকলেও দিতে হয়।” রমা আতঙ্কে শিহরিয়া উঠিয়া কহিল, “কিন্তু আপনি তো কোন সই করেন নি বাবা ?” “না, মা। আমার জ্ঞান, বিশ্বাসমত আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমি কোন সই করি নি। কিন্তু আমিও ধূর্তের কাছ থেকে অনুরূপ নকল পাই, তাতে দেখি আমারও সই রয়েছে। দেখে আমি স্তম্ভিত হয়ে পড়ি। আমি স্বয়ং পিশাচের কাছে গিয়ে অরিজিনাল প্রতিজ্ঞা-পত্র দেখতে চাই। কিন্তু সে কিছুতেই রাজী না হয়ে বলে, উত্তম । আপনি যদি এতই নিশ্চিত, যুবককালে কি করেছিলেন আর না করেছিলেন আপনার যদি এমনিই স্মরণ থাকে, তবে আপনার এখানে আসবার কোন প্রয়োজন ত দেখছি না। আপনি স্বছদে চলে যান। আমি গভর্নমেন্টের কাছে আপনার সই করা প্রতিজ্ঞাপত্ৰখনি পুলিস কমিশনারের মারফত পাঠিয়ে দিচ্ছি, তিনিই বিচার করে দেখবেন, আপনি সই করেছেন কি না। এই কথা বলে পিশাচ হেসে উঠল। তবেই মা, আমার আর দ্বিতীয় পথ রইল না, ধুর্তের দাবিতে আত্ম-বিলাপ করতে বাধ্য হলাম।” & রমা বাধা দিয়া কহিল, “যদি আপনি এতখানি নিঃসন্দেহ যে, আপনি সই করেন নি, তবে কেন রাজী হ’লেন বাবা ?” মিঃ সোম একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলিয়া কহিলেন, “প্রায় বিশ বছর আগে তেমন একটা বিস্ময়ের দিনে কি করেছি, আর না করেছি সে বিষয়ে একেবারে স্থির নিশ্চয় কি ক’রে হই বল দেখি, মা ? তাই ভাবলাম, যদি কিছু অর্থ দিয়ে কুকুরের মুখ বন্ধ করা যায়, তবে খেপিয়ে লাভ কি ? কিন্তু .. ” সহসা মিঃ সোম নীরব হইলেন। রমা কহিল, “কিন্তু কি বাবা ?” “কিন্তু তখন তো বুঝি নি মা, যে, ধূর্ত দাবির ওপর দাবি বসাতে আরম্ভ করবে ? নর