পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৪৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রমা-হারা মোহন । B\:) :) সে যেন সুখী হয়, শান্ত হয় ; সমাজের, দেশের মঙ্গলে তা’র জীবন উৎসর্গ করে। যেদিন মোহন আমার সরোজকে নিয়ে আমার কাছে উপস্থিত হবে, সেদিন আমি তাকে আর সরোজকে একত্রে দুই হাতে বুকে জড়িয়ে ধরবো। আমার বুকের সব জ্বালা সেদিন শাস্ত হবে।” রমা পিতাকে প্রণাম করিয়া পায়ের ধূলা মাথায় লইয়া কহিল, “তিনি সব হীন কাজ ত্যাগ করবেন প্রতিজ্ঞা করবার পর, তবে আমি সম্মত হয়েছিলাম বাবা।” মিঃ সোম সস্নেহ দৃষ্টিতে চাহিয়া কহিলেন, “তা’ কি আমি বুঝি নে, মা, বুঝি। তা’ ছাড়া সারা ভারতে যখন তোর সম্ভাবিত-মৃত্যুর প্রতিশোধ মোহন কি ভাবে গ্রহণ করছে —দিনের পর দিন সংবাদপত্রে এই সংবাদ বার হচ্ছিল, তখন মোহনের কার্যকলাপ অনেকেই বিস্মিত করেছিল, মা। শুনি, মিঃ বেকারের মুখ-রক্ষা সেই করেছিল।” রমা নত মুখে কহিল, “হা, বাবা।” মিঃ সোম কয়েক মূহুর্ত নীরব থাকিয়া কহিলেন, “মোহন এখন সব কাজ ছেড়ে দিয়েছে ?” “হাঁ বাবা।” রমা সলজ্জ স্বরে কহিল। “কি ক’রে দিন কাটে তা’র ?” মিঃ সোম অবাস্তর প্রশ্ন করিলেন। , রমার মুখ আরক্ত হইয়া উঠিল। সে নতস্বরে কহিল, “আমারা পাহাড়ীপল্লীতে ঘুরে বেড়িয়ে যাদের অভাব আছে, রোগ আছে, দুঃখ আছে, তাদের সাহায্য করি, বাবা। আমাদের খুব শাস্তিতেই দিন কেটে যায়। কিন্তু...” মিঃ সোম জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে চাহিলেন। রমা বলিতে লাগিল, “কিন্তু পুলিসের লোক কিছুতেই শান্তিতে থাকতে দিতে চায় না, বাবা। তা’রা কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারে না যে, তিনি শাস্ত ভাবে থাকতে পারেন।” রমার মুখে সজ্জল করুণ হাসির দীপ্তি ফুটিয়া উঠিল। মিঃ সোম একটা দীর্ঘশ্বাস চাপিয়া কহিলেন, “না, তারা তা দেবে না।” তাহারা যেখানে বসিয়াছিলেন, অনতিদূরে বহু নর-নারী, তরুণ-তরুণী অপরাহুকালীন ভ্রমণে রত ছিলেন। রমা দেখিল, একটি বৃদ্ধ অবিরত তাহদের নিকট দিয়া পরিক্রমণ আরম্ভ করিয়াছেন। রমা তীক্ষদৃষ্টিতে কয়েক মুহূর্ত চাহিয়া রহিল, কিন্তু তাহার সন্দেহ দূর হইল না। বৃদ্ধকে অত্যন্ত প্রাচীন ব্যক্তি বলিয়া মনে হইতেছিলঃ এদিকে সন্ধ্যা উত্তীর্ণ হইয়াছিল। রমা সহসা চঞ্চল হইয়া উঠিল। সে দেখিল, বৃদ্ধটি যখন তাহাদের অতি নিকট দিয়া যাইতেছিল, তাহার দিকে চাহিয়া, সকলের অলক্ষ্যে পরিচিত ইঙ্গিত করিল। রমার আর সন্দেহ রহিল না যে, বৃদ্ধ অপর কেহ নহে, তাহার প্রিয়তম স্বামী, দসু্য মোহন। রমা পিতার পায়ের উপর একখানি হাত রাখিয়া কহিল, “আমি তবে আসি, বাবা?” মিঃ সোম সচকিত হইয়া উঠিলেন। কহিলেন, “ও কি কথা, মা ?” “হাঁ বাবা, আমি যাই। তিনি অপেক্ষা করছেন। তা’ ছাড়া দাদাকে রক্ষা করবার একটা উপায় করতে হবে। সেজন্য একটা মিনিটও আর দেরি করা চলে না। তা’র উপর উনি তো শপথ ক’রে সব কাজ ত্যাগ করেছেন, তাকে রাজী করাতে হবে। আমি আবার এসে