পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৪৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88२ মোহন অমনিবাস সচকিত ও জাগরিত করিয়া দিল। একজন পরিচারিকা কক্ষের বাহির হইতে কহিল, “মা, খাবার তৈরী হয়েছে।” রমা দ্রুতপদে মেঝের উপর দাড়াইয়া কহিল, “বাবুর খাবার নিয়ে এস।” পরিচারিকার উপর অন্য আদেশ ছিল। সে কহিল, “আপনার আনি, মা ?” মোহন কহিল, “হা, নিয়ে এস।” মোহনের সহিত জলযোগে বসিয়া রমা কহিল, “পুরীর বাড়ীর কথা তো একটি বারের জন্যও বলো নি ?” সম্মুখে উদার কল্লোলিত সমুদ্রের দিকে চাহিয়া মোহন কহিল, “সমুদ্রে বাস ক’রে শিশিরের কথা কি কেউ মনে রাখে, রানী?” “অর্থাৎ?” রমা আরক্ত মুখে জিজ্ঞাসা করিল। মোহন হাসিতে লাগিল। সহসা তাহার হাসি বিলুপ্ত হইল। সে কহিল, “ভাল কথা, তোমার দাদার কথা কিছুই বলছ না তো, রানী? তোমার বাবা কি বললেন?” রমার সুখ-স্বপ্ন টুটিয়া গেল। সে কয়েক মুহুর্ত নীরব থাকিয়া কহিল, “তোমাকে বলব না তো, বাবার আর কে আছে যে, তার কাছে বলব? অনেক কথা আছে। আগে জল খাওয়া শেষ হোক, তারপর নির্জনে বসে বলব।” মোহন আর দ্বিতীয় প্রশ্ন করিল না। সহসা রমা কহিল, “তোমার এই প্রাসাদের কথা পুলিস জানে?” - “না। আমি ছদ্মনামে রেজিস্ট্রি করেছি।” মোহন মৃদু হাস্যে কহিল। “যে নামেই কর, এত বড়ো হঠাৎ-ধনীর সম্বন্ধে নিশ্চয়ই তারা অনুসন্ধান করেছে। তবে?” রমার দৃষ্টিতে শঙ্কার ভাব ফুটিয়া উঠিল। মোহন হাসিয়া উঠিল। কহিল, “অমনি পাপড় ঝলসে উঠল, রানী? এতটুকু তাপও সহ্য করতে পার না তুমি ? ভয় নেই, আমি যদি জয়পুরের মহারাজার দেওয়ানের নামে এই বাড়ী তৈরী করে থাকি, তবে কি পুলিস কখনও সন্দেহ বা অনুসন্ধান করতে পারে? আমার নামে বাড়ী তৈরী করেছিলে ?” ക് মোহনের মুখে অপরূপ হাসি ফুটিয়া উঠিল। সে মৃদুকণ্ঠে কহিল, “আমি যে জানতাম, তুমি আমারই হবে। একদিন না একদিন আমার মত অস্পৃশ্যের প্রেম মহনীয় হয়ে স্বর্গের দেবীকেও জয় করবে।” - “যদি না জয়ী হতে ?” রমা মুখ টিপিয়া একটু হাসিয়া প্রশ্ন করিল। “তা হলেও এই স্বপ্ন-মন্দির তোমারই থাকতো, রানী। তোমাকে ভালবেসেছি, এই গর্বের মূল্য কি এতেই পরিশোধ হয়, রানী ? শত শত সুবর্ণ মন্দিরও তোমার ভক্তির দৃষ্টিতে সমতুল্য নয়।” মোহন অতি মিষ্ট স্বরে রমার কানে সুধা বর্ষণ করিল। জলযোগ পর্ব শেষ হইলে মোহন কহিল, “এস, দ্বিতলের বারান্দায় বসে তোমার দাদার কাহিনী শুনি।” দ্বিতলের বারান্দায় উপস্থিত হইয়া রমা অধীর আনন্দে উচ্ছসিত হইয়া পড়িল। নিম্নে