পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৪৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 8Mა মোহন অমনিবাস সহসা রামচরণ কহিল, “তোমার মাসির বয়স কত, নিবারণ ?” } নিবারণ ওরফে মোহন থমকিয়া দাড়াইল। কহিল, “কত হ’লে চলবে ?” * রামচরণ বিস্ফারিত চক্ষুতে চাহিয়া কহিল, “কত মাসি আছে তোমার যে, যে-কোন ; বয়সের দিতে পারবে ?” কহিল, “ওহো, মেয়ে মানুষের বাত হতিছে রামচরণ ?” রামচরণ কহিল, “মাসির কথা হচ্ছে, সিপাই সাহেব।” “ওহি হলো, ওহি হলো, মাসি তো আর মরদ নেহি আছে!” বলিয়া কনস্টেবল আপন রসিকতায় আপনি হাসিয়া অস্থির হইতে লাগিল। রামচরণ চাহিয়া দেখিল, মোহন ইতোমধ্যে অদৃশ্য হইয়া গিয়াছে। মোহনের অনুচর-স্বরূপ ভৃত্য বিলাস আজমীঢ় হইতে সঙ্গে আসিয়াছিল। সে কলিকাতায় তাহার এক আত্মীয়ের বাড়িতে বাস করিতেছিল। মোহন তথায় গিয়া বিলাসকে একটি বিশ্বাসী পাচিক সংগ্ৰহ করিয়া দিবার জন্য বলিলে, বিলাস আকর্ণ-বিস্তৃত হস্যের সহিত কহিল, “এ আর বেশী কথা কি, কর্তা ? আমারই এক পিসতুতো বোন আছে, বেশী বয়স নয়। আচ্ছা আপনি একটু অপেক্ষা করুন, আমি তাকে আনছি।” সোহাগী পান চিবাইতে চিবাইতে আসিয়া মোহনকে গড় হইয়া প্ৰণাম করিল এবং পায়ের ধূলা লইতে গেলে, মোহন তিন পা পিছাইয়া কহিল, “হয়েছে, তুমি দাড়াও।” মোহনের কন্ঠস্বরে এতটুকু কোমলতা ছিল না। সোহাগী বিস্মিত হইয়া দাঁড়াইল। মোহন দেখিল, সোহাগীর বয়স পচিশ-ছাবিবশের বেশী হইবে না। কহিল, “তুমি রাধতে জান ?” রাধার কাজই আমি করি, হুজুর।” সোহাগী কহিল। মোহনকে প্রতি কথায় হুজুর’ বলিবার জন্য বিলাস শিখাইয়া আনিয়াছিল। মোহন বিস্মিত হইয়া কহিল, “তুমি তো জাতে কৈবর্ত, তবে পাচিকার কাজ করো কি করে?” వీ “বেশ কর।” বলিয়া মোহন হাসিয়া ফেলিল। কহিল, “এক জায়গায় রাঁধতে হবে, পারবে ?” :్స) “কেন পারবো না, হুজুর ঃ হুজুরের কথায় মরতে পারি, আর রাঁধতে পারব না?” সোহাগী কটাক্ষ হানিয়া কহিল। মোহন গম্ভীরস্বরে কহিল, “ঐ স্বভাবটি তোমাকে ছাড়তে হবে। আবার যদি দেখি তুমি । ভুলেও আমাকে ও-চোখে দেখেছ, তা হলে......” সহসা মোহন নীরব হইল। মোহন যে কথাটি অসমাপ্ত রাখিল, তাহা বুঝে সোহাগী আতঙ্কে কন্টকিত হইয়া, সংযত স্বরে কহিল, “আদেশ করুন।” “আচ্ছা চল, বিলাসের ঘরে বসে তোমাকে উপদেশ দিচ্ছি।” বলিয়া মোহন বিলাসের কক্ষে প্রবেশ করিল। - ইহার প্রায় আধ ঘন্টা পরে মোহন যখন বাহির হইল, তখন সোহাগীর দিকে চাহিয়া