পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৪৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

EQ 。 মোহন অমনিবাস মিঃ হ্যারিসন কহিলেন, “বুঝিয়ে দিন।” মিঃ স্যানিয়েলকে বাধা দিয়া মিঃ হ্যারিসন কহিলেন, “মিস সোম, না মিসেস গুপ্তা ?” “যা বলেন।” লজ্জিত স্বরে মিঃ স্যানিয়েল কহিলেন, “যদি বেচারী রমার মৃত্যু না হত, তা’ হ’লে এ সময় অর্থাৎ যখন মিঃ সোম এমন ভীষণ চার্জে জড়িয়ে পড়েছেন, তখন মোহনের পক্ষে নীরব থাকা অসম্ভব হত। স্ত্রীর ভাইকে শালা বলি, মিঃ হ্যারিসন। স্ত্রীর ভাইয়ের মত নিকট ও প্রিয়তম আত্মীয় আমাদের আর কেউ নেই, সুতরাং সেই শালার এমন বিপদে রমা-বেচারী কি কখনও নিশ্চিন্তে থাকতে পারতো ? সে মোহনের কান ধরে হিড়হিড় ক’রে টেনে এনে কাজে লাগিয়ে দিত।” “কি কাজে।” মিঃ হ্যারিসন জিজ্ঞাসা করিলেন। “তা’ ঠিক জানি না। অন্ততঃ বিশেষ ভাবে তদ্বির-তদারক আরম্ভ হত।” মিঃ হ্যারিসন ক্ষণকালের জন্য কার্য করিতে বিরত থাকিয়া কহিলেন, “এর অপেক্ষা বিশেষ তদ্বির-তদারক বলতে আপনি কি বোঝেন, তা’ বলতে পারিনে। ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ বারোজন আইনজ্ঞ যে কেসে দাঁড়ায়, সে তদ্বিরের বিশেষত্ব সম্বন্ধে কি কোন সন্দেহ থাকে, মিঃ স্যানিয়েল ? কে বলতে পারে, মোহনই পর্দার অন্তরালে থেকে এই রকম বিরাট ভাবে ডিফেন্স চালাচ্ছে। এ ছাড়া মোহন আর কি করতে পারে বলুন ?” মিঃ স্যানিয়েল কহিলেন, “মোহন কি করতে পারে, আর না পারে আমার পক্ষে বলা শক্ত।” মিঃ হ্যারিসন মৃদু শব্দে হাসিয়া উঠিলেন। এদিকে ছোট টেবিলটিরও পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে অনুসন্ধান কার্য শেষ হইল। মিঃ ঘোষ কহিলেন, “তারপর?” মিঃ স্যানিয়েল একটি ছোট্ট র্যাকের উপর রক্ষিত সিগারেটের বাক্সগুলি পরীক্ষা করিয়া দেখিতেছিলেন। দামী সিগারেট। তিনি অস্ফুট কষ্ঠে কহিলেন, “লোকটা উপায়ও করে যেমন, ভোগও করে তেমন। এই সিগারেটগুলোর প্রত্যেকটার দাম প্রায় এক টাকা।” কহিলেন, “সর্বনাশ! কে আসছে না?” వ) কেহ সাবধান হইবার পূর্বেই ড্রইং রুমের দ্বার মুক্ত হইয়া গৈল ও সঙ্গে সঙ্গে সকল আলো প্রজুলিত হইয়া দিবালোকের মত আলোকিত হইয়া উঠিল। পুলিস-অফিসারগণ চাহিয়া দেখিলেন, এক অভিনব বিনীত ভঙ্গীতে রায়সাহেব সম্মিত মুখে দাঁড়াইয়া রহিয়াছেন। কাহারও মুখে একটা কথাও বাহির হইল না। রায়সাহেব ব্যঙ্গ হাস্য মুখে কহিলেন, “গুড় নাইট ভদ্রমহোদয়গণ। আশা করি আপনাদের কৌতুহল নিবৃত্ত হয়েছে। এখন দয়া করে আমাকে একাকী থাকতে দিলে, পরম বাধিত হ’ব।” অফিসারগণ একবার পরম্পরের মুখের দিকে চাহিলেন ও পরে নির্বাক মুখে ধীরে ধীরে বাহির হইয়া গেলেন। তাহারা যখন দ্বার অতিক্রম করিয়া যাইতেছিলেন, তখন রায়সাহেব ডান হস্তখানি বামদিকে ঘুরাইয়া নত হইয়া প্রগাঢ় বিনয়ের ভঙ্গীতে দাঁড়াইয়া রহিলেন। পরে উচ্চ হাস্যে ভাঙ্গিয়া পড়িতে লাগিলেন।