পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৪৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রমা-হারা মোহন 8 Œ ዓ (Ꮏ) মোহন নিঃশব্দে পর্দার অন্তরালে দাড়াইয়া থাকিয়া সব কিছুর পর্যবেক্ষণ করিতেছিল। কিন্তু ইহার পরে কি আসিবে ভাবিয়া না পাইলেও উদ্বিগ্ন হৃদয়ে শাস্ত ভাবে অপেক্ষা করিতে লাগিল। রায়সাহেবের উচ্চ হাসির বেগ প্রশমিত হইলে, তিনি একবার কক্ষের চারিদিকে চক্ষু বুলাইয়া ধীরে ধীরে দ্বার অর্গলবন্ধ করিয়া দিলেন এবং সহসা বিদ্যুদ্বেগে ঘুরিয়া দাঁড়াইয়া পকেট হইতে একটি রিভলভার বাহির করিয়া, মোহন যে-পরর্দার অন্তরালে লুকাইয়া ছিল, মোহন সহসা এইরূপ পরিস্থিতিতে বিপর্যস্ত হইয়া পড়িবার উপক্রম করিল এবং কি করিবে স্থির করিবার পূর্বেই রায়সাহেব ততোধিক কঠিন স্বরে কহিলেন, “আমি তিন গুনব, তার মধ্যে যদি বার হয়ে না এস, তবে নির্বিচারে গুলি করব। এক দুই.......” রায়সাহেব কহিলেন, “হাত তুলে দাঁড়াও।” মোহন কলের পুতুলের মত দুটি হাত ধীরে ধীরে উপর দিকে তুলিয়া দন্ডায়মান হইল। রায়সাহেব রিভলভার উদ্যত রাখিয়া অগ্রসর হইতে হইতে হাসি মুখে কহিলেন, “একটু নড়েছ কি বেয়াদপি কিছু করেছ, তা হলেই আমি গরম শীসের তাল তোমার ঐ মোহন-বপুর মধ্যে ঢেলে দেব।” আপন পকেটে রাখিয়া দিলেন এবং আপনার এইরূপ সাফল্যে পরম সুখী হইয়া কহিলেন, “বস, বন্ধু।” মোহন একটিও কথা না বলিয়া একটি শোফার উপর উপবেশন করিল। তোমার অপেক্ষাও যে বুদ্ধিমান মানুষ আছে তা বোধ হয় এতদিন ভারতে পারতে না? কাজটা বড়ো আহাম্মকের মত হয়ে গেছে, না ? দসু মোহন, যে ভারত গভর্নমেন্টের সমস্ত শক্তি তুচ্ছ করে মিঃ বেকারের মত ডিটেক্‌টিভের চোখেও ধুলো দিয়ে নিজের কাজ সফল ক’রে চলেছে। সে কিনা আমার মত একজন সাধারণ লোকের হাতে বন্দী হ'ল! আরে—আরে—“কথা শেষ না করিয়া রায়সাহেব হাসিয়া অস্থির হইতে লাগিলেন। তাহা “এরপর কি করব জানো?” মোহন মুখ তুলিয়া জিজ্ঞাসু-দৃষ্টিতে চাহিল। রায়সাহেব কহিলেন, “হেড কোয়ার্টারে টেলিফোন ক’রে তোমাকে মিঃ স্যানিয়েলের হাতে তুলে দেব। তুমি তো নিজের কানেই একটু পূর্বে শুনেছ, সে বেচারা তার মনের বেদনায়, ক্ষোভে ঠিক সমভাবেই দগদগ ক’রে জুলছে ? সে খুব খুশী হবে কি, মোহন ?”