পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৪৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 (:Եr মোহন অমনিবাস মোহন এবারেও কোন কথা কহিল না ; উপর দিকে হাত তুলিয়া বসিয়া রহিল। দেখলেই আমি নিৰ্ঘাত তোমায় গুলি করবো।” মোহন হাত দুটি নামাইতে পাইয়া অপেক্ষাকৃত স্বস্তি বোধ করিল। সে একহাত দিয়া অন্য হাতের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করিবার জন্য চেষ্টা করিতে লাগিল। রায়সাহেব কহিলেন, “তুমি কি কথা কওয়া ভুলে গেছ, মোহন ? অবশ্য তুমি বিশেষভাবেই যে মর্মাহত হয়েছ তা বুঝতে পারছি। কারণ আমি কে, আমার শক্তি কতখানি না জেনেই তুমি বাঘের গহ্বারে প্রবেশ করেছিলেন। সত্য কথা বলতে কি, তুমি আমাকে না চিনলেও, আমি তোমাকে বহুদিন থেকে চিনি, শুধু চিনি নয়, তোমার প্রত্যেকটি কাজের দিকে তীক্ষ দৃষ্টি রাখি। বুঝেছ মোহন, তোমাকে আমি এত বেশী চিনি, জানি, তুমি নিজে তোমাকে ততো বেশী চেন না, জান না।” মোহন দু-কুঞ্চিত করিয়া রায়সাহেবের দিকে মুহুর্তের জন্য চাহিয়া জানালার বাহিরে দৃষ্টি পাতিয়া বসিয়া রহিল। সহসা রায়সাহেব কহিলেন, “একটা সিগারেট খেতে তোমার আপত্তি হবে না বোধ হয় ?” রায়সাহেব একটা সিগারেট প্যাকেট ও এক বাক্স দেশলাই মোহনের দিকে একহাতে ছুড়িয়া দিলেন। মোহন সন্দিগ্ধ দৃষ্টিতে সিগারেটের দিকে চাহিতেছে দেখিয়া, রায়সাহেব কহিলেন, “ভয় নেই, আমি তোমাকে বিষ খাওয়াব না। আমি এতটা যে নীচ নই, তা’ এতক্ষণে তোমার মত গবীর বুঝতে পারা উচিত ছিল।” . মোহন সিগারেটের প্যাকেটটি তুলিয়া লইয়া একটা সিগারেট ধরাইল এবং রায়সাহেবের দিকে এক মুখ ধোয়া ছাড়িয়া দিয়া কহিল, “তারপর ?” “বটে। এখনও ভয় পাওনি দেখছি। আচ্ছা দুমিনিট অপেক্ষা কর, তোমাকে আমি শায়েস্তা করছি।” বলিয়া রায়সাহেব বাম হাত টেলিফোনের উপর রাখিলেন। মোহন বুঝিল, বিপদ ঘনাইয়া আসিতেছে। সে বুঝিল, যে-ভুল সে করিয়াছে, তাহা সংশোধনের উপায় আর নাই। তাহা হইলেও অতি বড়ো বিপদের মুখে মোহনের অত্যাশ্চর্য শান্ত ভাব বজায় থাকে বলিয়া সে বিন্দুমাত্র উদ্বিগ্ন ভাব মুখে প্রকাশনা করিয়া রায়সাহেবের পরবর্তী কার্যের জন্য অপেক্ষা করিতে লাগিল। (vr রায়সাহেব কি ভাবিয়া টেলিফোনের উপর হইতে হাত উঠাইয়া লইয়া কহিলেন, “আচ্ছা, পাঁচ মিনিটের সুযোগ তোমাকে দিতে চাই। তুমি কি স্বাধীনতা চাও ? মোহনের মুখে মৃদু হাসি ফুটিয়া উঠিল। সে কহিল, “আমি চিরদিন স্বাধীন।” “বর্তমান মুহুর্তে নও। আমার ইচ্ছার ওপর, আমার দয়ার ওপর তোমার জীবন, তোমার স্বাধীনতা নির্ভর করছে, মোহন। চালাকি খেল-না এখানে। তুমি কি জানো, আমি ইচ্ছা করলে যে কোন লোককে ফাসি-কাঠে ঝোলাতে পারি?” মোহন শাস্ত কষ্ঠে কহিল, “জানি। কিন্তু আর বেশী দিন নয়, আপনার সময় আগত প্রায়।”