পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৪৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3 Կ, Զ মোহন অমনিবাস মোহন হতবুদ্ধি হইয়া চাহিয়া রহিল। কারণ তাহাকে শর্তাধীনে মুক্তি দিতে সম্মত হইয়া, তবে আবার পুলিস ডাকিতেছে কেন। মোহন নিনিমেষ দৃষ্টিতে রায়সাহেবের দিকে চাহিয়া রহিল। - রায়সাহেবের দৃষ্টি সর্বসময়ে মোহনের উপর নিবন্ধ ছিল। তিনি টেলিফোনের ভিতর কহিলেন, “কে, লালবাজার ? কমিশনার প্লিজ। রায়সাহেব অবিনাশ চন্দ্র রায় আমি। হা, খুব শীঘ্ৰ দিন।” মোহনের মনের ভিতর চিত্তার রশ্মি তাল পাকাইয়া গেল। সে কি শুনিতেছে, কি দেখিতেছে, কি ভাবিতেছে, তাহা বুঝিতে না পারিয়া অর্থহীন দৃষ্টিতে চাহিয়া রহিল। রায়সাহেব পুনরায় কথা বলিতে আরম্ভ করিলেন, “হা, আমি রায়সাহেব, গুড় নাইট। অসময়ে বিরক্ত করলাম, মনে কিছু করবেন না। হা, শুনুন। মহা মাননীয় অতিথি হয়ে দসু মোহন এখানে অপেক্ষা করছেন। হা, হা, দসু মোহন। যে দসু্যর জন্য আপনারা নিদ্রাহীন রাত্রি যাপন করছেন, সেই দস্য মোহন এখানে বন্দী। আমার ড্রইং-রুমে। এখনি মিঃ বেকার বা স্যানিয়েলকে এখানে ফোর্সের সঙ্গে পাঠিয়ে দিন। আপনিও আসবেন ? উত্তম আসুন। আমি ততক্ষণ মান্যবরের সঙ্গে একটু রহস্যালাপ করি। অল রাইট! গুড় নাইট।” কহিলেন, “এইবার বন্ধু, আমার শর্তটি শোন। মানবার ইচ্ছা হয় মেনো, না হয় তা’র বন্দোবস্ত তো হয়েই রইল। এখন থেকে পনেরো মিনিটের মধ্যে লালবাজার থেকে কমিশনার ও তার দলবল উপস্থিত হবে। এই সময়টুকুর মধ্যে তোমাকে মনস্থির করতে হবে। বুঝেছ বন্ধু ?” মোহন কঠিন দৃষ্টিতে চাহিয়া রহিল। রায়সাহেব পুনরায় কহিলেন, “এখন শোন। হয়তো তুমি শুনেছ, রমার জন্য আমি বহু চেষ্টা করেছিলাম। তুমি শুধু আমার ইচ্ছায় বাদ সাধলে। নইলে একটি দসু্যর অঙ্কশায়িনী না হয়ে, সে লেডি হয়ে সভ্য সমাজে ঘুরে বেড়াত, কিন্তু যা হয়ে গেছে, সেজন্য আমি দুঃখ করি না। এখন যদি লক্ষ্মী ছেলের মত রমাকে আমায় দিতে পার, তাহলে .......” of রায়সাহেবের কথা অসমাপ্ত রহিল, মোহন বিদ্যুদ্বেগে মেঝের উপর সদৰ্পে পদাঘাত “খবরদার মোহন, আমাকে মিঃ স্যানিয়েল পাওনি তুমি। আমি বড় শক্ত ঘানি। যদি আর একটু হাত-পা নেড়েছ, তা’ হ’লে গুলি করতে আমি মুহুর্তমাত্র দ্বিধা করব না।” রায়সাহেব কঠিন স্বরে কহিলেন। মোহনের দুটি চক্ষু ধকধক করিয়া জুলিতে লাগিল। সে নিনিমেষ দৃষ্টিতে রায়সাহেবের দিকে চাহিয়া রহিল। রায়সাহেব পকেট হইতে ঘড়ি বাহির করিয়া কহিলেন, “আর দশ মিনিট, মোহন। এখনও ভেবে দেখ ? ফঁাসি কাঠে ঝোলবার বিনিময়ে — একটা সামান্য নারীর লোভ পরিত্যাগ এত বড়ো ব্যাপার নয় যে তুমি বুঝতে পারছ না – কেন শুধু শুধু জীবন দিতে যাবে তুমি ? ভারতে কি সুন্দরী নারীর অভাব আছে ?” +