পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৪৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রমা-হারা মোহন 8 Ն,Վ) মোটর হইতে একটি আধুনিক ইউরোপীয় পোশাকে সজ্জিত যুবক অবতরণ করিয়া, কোন দিকে না চাহিয়া দ্বিধাহীন পদে, সঙ্কোচহীন গতিতে মিনিষ্টারের অফিসের সম্মুখে উপস্থিত হইতেই, দুইজন সাজেন্ট সসন্ত্রমে পথরোধ করিয়া কহিল, “কার্ড প্লিজ।” যুবক মৃদু হাসিয়া তাহার বহু মূল্যবান কোটের ভিতর-পকেট হইতে একটি স্বর্ণ-নির্মিত ক্ষুদ্র কার্ড কেস বাহির করিয়া, একটি কার্ড অবলীলার সহিত টানিয়া লইয়া সাজেন্টের হাতে দিল। কার্ডখানি পাঠ করিবার পর সার্জেন্টের চক্ষু বিস্ফোরিত ও মুখ বিস্মিত আভায় পূর্ণ হইল। সে কহিল, “এক মিনিট অপেক্ষা করুন স্যার।” যুবক হাসিয়া কহিল, “উত্তম! দুমিনিট হ'লেও আমি দুঃখিত হব না।” সাজেন্ট দ্রুতপদে মিনিষ্টারের কক্ষে প্রবেশ করিল। এই ধনবান আগন্তুকের দিকে চাহিয়া অন্যান্য পাহারাওয়ালার মনে সসন্ত্রম বিস্ময়ের ভাব উদ্রেক করিতে লাগিল। যুবক মৃদু হাসিতে হাসিতে দ্বারের ভিতর এক পা বাড়াইয়া সাজেন্টের দিকে চাহিয়া কহিল, “ধন্যবাদ। আমি একাই যেতে পারব। আপনার কষ্ট ক’রে সঙ্গে আসবার প্রয়োজন নেই।” - সাজেন্ট থমকিয়া দাড়াইল। যুবক মিনিষ্টারের অফিসে প্রবেশ করিয়া দেখিল, মিনিষ্টার কার্ডখানি পড়িতেছেন। যুবক হাস্য মুখে কহিল, “গুড় মনিং মিনিষ্টার।” মিনিষ্টার পলকের জন্য আগন্তুকের দিকে চাহিয়া, কার্ডখানির উপর দৃষ্টি নিবন্ধ রাথিয়া কহিলেন, “গুড় মনিং, রাজা অফ চিচিংগড়। বসুন। কিন্তু এই চিচিংগড়টা ঠিক কোথায় বলুন তো?” মিনিষ্টার বিপন্ন ভাবে মাথা চুলকাইতে লাগিলেন। যুবক সহসা মিনিষ্টারের হাত হইতে কার্ডখানি টানিয়া লইয়া, একমুখ হাসিয়া কহিল, “ওটা আমার জাল কার্ড। নইলে ভিতরে আসা একটু কষ্টকর হত। এই নিন আমার আসল কার্ড। এবার আর চিনতে আপনাকে বেগ পেতে হবে না, আশা করি।” মিনিষ্টার কার্ডখনি পাঠ করিয়াই অফুটে কণ্ঠে কহিলেন, “কি সর্বনাশপ মোহন— দসু্য মোহন।” ദ് মিনিষ্টার সহসা কলিং-বেল টিপতে উদ্যত হইলেন। মোহন বিদ্যুৎদ্বেগে পকেট হইতে রিভলভার টানিয়া লইয়া মিনিষ্টারের মস্তক উদ্যত করিয়া কহিল, “ওসব আপনি কিছুই করতে পারবেন না। আমি আপনার উপকার করতে এসেছি—যদি স্থির ভাবে আমার কথা না শোনেন, তাহলে চিরতরে সব কিছু শোনা আপনার বন্ধ হয়ে যাবে।” “বলেছি তো, আপনার উপকার করতে চাই । অবশ্য বিনিময়ে একটা মূল্য আমি চাই —কিন্তু তা’ পরে ! এখন শুনুন.......” মোহন রিভলভারটি টেবিলের উপর রাখিয়া মিনিষ্টারের দিকে স্থির দৃষ্টিতে চাহিয়া থাকিয়া কহিল, “রায়সাহেব অবিনাশ রায় বহু টাকা আপনার খেয়েছে, না ?” মিনিষ্টার চমকিত হইয়া কহিলেন, “কে রায়সাহেব? আমি কোন রায়সাহেবকে চিনি না।”