পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৪৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রমা-হারা মোহন 8\gዕሉ মোহন শাস্ত স্বরে কহিল, “আমি টাকা চাই না।” “টাকা চাও না। তবে কি চাও তুমি?” মিনিষ্টারের বিস্ময়ের আর অস্ত রহিল না। “তবে শুনুন। আপনি নিশ্চয়ই জানেন, এক নির্দোষী পবিত্র চরিত্র যুবককে এই শয়তান রায়সাহেব ফাসি-কাঠে ঝোলাতে চলেছে ?” মোহনের স্বর ঈষৎ কম্পিত হইয়া উঠিল। মিনিষ্টার কহিলেন, “তবে কি ডাকাতি ও খুনের চেষ্টার কথা মিথ্যা ?” মোহন গজিয়া উঠিল; চাপা স্বরে কহিল, “কতদূর তা সত্য, আপনি আমার অপেক্ষা ভালরূপে জানেন। এই শয়তান রায়সাহেব যেমন ভাবে আপনার কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা ভয় দেখিয়ে আদায় করছে, তেমনি ঐ যুবকের পিতার কাছ থেকেও আদায় করে। ঐ দুষ্টের......” বাধা দিয়া মিনিষ্টার সবিস্ময়ে কহিলেন, “যুবকের পিতার নাম কি?” “পি, সোম।” মোহন শান্ত স্বরে কহিল। “পি, সোম? পঙ্কজ সোম? অসম্ভব। সে কোন কালে ওই চক্রের সভ্য ছিল না। মিনিষ্টার উত্তেজিত স্বরে কহিলেন। এইবার মোহন বিস্মিত হইল। সে কয়েক মুহূর্ত নীরব থাকিয়া কহিল, “আপনি ঠিক জানেন, মিঃ সোম আপনাদের দলের সভ্য ছিলেন না ?” মিনিষ্টার গম্ভীর স্বরে কহিলেন, “দেখ মোহন, আমার স্মৃতি-শক্তি যদি ওরূপ দুর্বল হত, তা’ হ’লে এত বড়ো একটা প্রদেশের শাসনকর্তা হয়ে দু’টো মাসও কাজ করতে পারতাম না। আমার এখনও তেমনি স্পষ্ট মনে আছে যে, পঙ্কজ বড় লোকের, ধনীর একমাত্র খেয়ালী ছেলে। কোন কাজকর্ম করে না, হাতে অফুরন্ত সময় নিয়ে ঘুরে বেড়ায়, আর অর্থ নষ্ট করে। আমরা তা দেখে প্রলুব্ধ হয়ে উঠি। কারণ আমাদের সব কিছুই ছিল, সাহস, ধৈর্য্য, শক্তি, অটল পণ, কিন্তু ছিল না শুধু অর্থের প্রাচুর্যতা। তাই আমি একদিন সভায় পঙ্কজের নাম প্রস্তাব করি।” অতীত দিনের ইতিহাসের ভিতর বর্তমানের মিনিষ্টার আপনাকে হারাইয়া ফেলিলেন। পাতাই। ক্রমে বন্ধুত্ব যখন গাঢ় হয়ে এল, তখন একদিন তাকে আমাদের তখনকার আড্ডায় নিয়ে হাজির করি এবং তাকে সকল কথা খুলে বলি সৈ ঔৎসুক্য প্রকাশ করে। আমাদের প্রতিজ্ঞা-পত্র দেখতে চায়। আমি তা’কে দেখাই। কিন্তু সে প্রতিজ্ঞা-পত্রের ভাষা পাঠ করে চঞ্চল হয়ে ওঠে এবং বলে যে, সে ভেবে দেখবে – তারপর সই করবে।” মোহন অতীব আগ্রহের সহিত কহিল, “তারপর ?” মিনিষ্টারের মুখে মান হাসি ফুটিয়া উঠিল। তিনি কহিলেন, “তারপর আর পরদিন আসবার সময় রহিল না। পুলিস আমাদের আড্ডা ঘেরাও করলো, আমরা পূর্বাহুে সংবাদ পেয়ে সমস্ত কাগজ-পত্র নিয়ে গা-ঢাকা দিই। তাই আমি আশ্চর্য হচ্ছি, রায়সাহেব কি ভাবে পঙ্কজের কাছ থেকে টাকা খায় ? পঙ্কজ আপত্তি দেখায় নি ?” এইখানে মোহন যাহা জানিত তাহা বর্ণনা করিয়া কহিল, “মিঃ সোমের সম্বন্ধে হয়তো মোহন (১ম)-৩০