পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৪৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 ао মোহন অমনিবাস তুমি এস। সমুদ্রের কলরবে যে ব্যথা ভরা দীর্ঘশ্বাস শুনতে পাচ্ছি, তা যে আমার সহ্য হচ্ছে না কিছুতেই। আমার শুধু মনে হচ্ছে তোমার কাছে ছুটে যাই। আমার শুধু ইচ্ছে করছে, আজ তুমি যদি আমার কাছে থাকতে! আচ্ছা, কেন এক-একদিন এমন করে মন কাদে বল তো ? কোন কারণ নেই, কোন অমঙ্গলের চিহ্ন-মাত্রও নেই, তবু মন কেন যে এমন আকুল হয়ে কেঁদে বেড়ায় কিছুই বুঝিনে। কেন কেদে বেড়ায় তুমি বলতে পার ? আমাকে এসে বলে যেও। আসবে তো ? আমার একটি চু—নিও। কবে আসছ, আমাকে তার ক’রে জানিয়ো, লক্ষ্মীটি! ইতি— একান্তভাবে তোমারই রানী’’ মোহন বার বার পত্ৰখানি পড়িতে লাগিল। তাহার দুই চক্ষু আনন্দে জ্বালা করিয়া উঠিল। সে পত্ৰখানি বক্ষে চাপিয়া নীরবে শুইয়া রহিল। বিলাস নিঃশব্দ পদে কক্ষে প্রবেশ করিয়া কহিল, “কর্তা ?” “কি রে বিলাস ?” মোহন চক্ষু না চাহিয়া উত্তর দিল। বিলাস কহিল, “রাত্রি কি আবার বা’র হবেন কর্তা ?” * † মোহন চিন্তিত স্বরে কহিল, “হা, একবার মাত্র কিছু সময়ের জন্য যাব, বিলাস।” বিলাস মোহনকে এইরূপ কোমল হইতে কখনও দেখে নাই বা এমন ভাবে দ্বিধা জড়িত স্বরে কথা বলিতে কদাপি শুনে নাই। সে ভয়ানক আশ্চর্য হইয়া মোহনের দিকে চাহিয়া একান্তে দাড়াইয়া রহিল। মোহন ক্ষণকাল নীরবে শুইয়া থাকিয়া সহসা সবেগে দাড়াইয়া পড়িতেই, বিলাস চমকিত হইয়া দুই পা পিছাইয়া গেল। মোহন কহিল, “তোর নতুন মা’র কাছে যাবি, বিলাস ?” বিলাস সবিস্ময়ে কহিল, “এখানের কাজ কি মিটে গেল, কর্তা ?” মোহন বিলাসের প্রশ্নের উত্তর না দিয়া কহিল, “শুধু শুধু এক রাশ টাকা খরচ করে বিলাসের দুইটি গোলাকার চক্ষুর পরিধি বিস্তুত হইল। কহিল, শুধু শুধু কর্তা?” মেনে নিতে পারিস না। হা, কি বলছিলাম ?” একমুহূর্তচিন্তা করিয়া মোহন কহিল, “দাড়া, আগে একটা টেলি লিখি।” - মোহন একটি ক্ষুদ্র টেবিলের নিকট বসিয়া একটি তার লিখিল এবং বিলাসকে ইঙ্গিতে “কা’কে ? নতুন মা’কে ?” বিলাস প্রশ্ন করিল। - “হা বাবা, হা। লিখে দিলাম যে আমি আগামী কাল উড়োজাহাজে যাচ্ছি, আর তোমার পুত্র রেলে যাচ্ছেন।” মোহনের মুখ শিশুর মত সরল হাস্যে উদ্ভাসিত হইয়া গেল। বিলাস অত্যন্ত খুশী হইয়া, মোহন কিছু বুঝিবার পূর্বেই তাহাকে গড় হইয়া একটা