পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৪৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রমা-হারা মোহন 8 * > প্ৰণাম করিয়া বাহির হইয়া গেল। করিল এবং বিলাস প্রত্যাগমন করিলে বাহির হইয়া গেল। রামচরণ বন্ধুকে দেখিয়া পরম খোশ-মেজাজে অভ্যর্থনা জানাইল এবং কহিল, “আজ আমি একচ্ছত্র রাজা হয়েছি, বন্ধু। আজ আর বাইরে নয়, চল কর্তার ড্রয়িংঘরে গিয়ে বসি।” মোহন বিস্মিত হইয়া কহিল, “কেন, কর্তা কি থিয়েটার দেখতে গেছেন ?” রামচরণ বন্ধুর অজ্ঞতায় টানিয়া টানিয়া হাসিতে লাগিল। কহিল, “কর্তা আমার কিছুদিনের জন্য চেঞ্জেতে গেছেন। আমার ওপর সব দেখা-শোনার ভার দিয়ে গেছেন। আর আমাকে পায় কে হে ? এবার তোমাকে নিয়ে হাজারো রকম ফুর্তি করা যাবে। চল, চল, তোমার মুখ অমন মড়ার মত ফ্যাকাসে হয়ে গেল কেন হে ? কোথায় একটা সু-খবর দিলাম, না মুখ গোমরা করে দাঁড়িয়ে রইলে!” o মোহন দ্রুত চিন্তা করিতেছিল ; কহিল, “বল কি ? কবে গেছেন ?” “আজ সন্ধ্যায় আটটার মেল গাড়ীতে। আমি ইষ্টিশানে গিয়ে টেরেনে তুলে দিয়ে, যখন গাড়ী ছাড়লো, তখন লাফাতে লাফাতে ফিরে এলুম। চল, চল, ভেতরে চল।” রামচরণ তাড়া দিল। মোহন ক্ষণকাল চিন্তাম্বিত থাকিয়া কহিল, “হঠাৎ চেঞ্জে গেলেন কেন?” “খেয়াল দাদা খেয়াল। এই বড়লোকগুলোর খেয়ালের আর কি শেষ আছে ? হাতে অঢেল মাল আছে, রেস্ত আছে, মনে হ’ল চেঞ্জে যাব, চলে গেল। আমার কর্তাটি একটু মেয়ে-পাগলা গোছের কিনা! ছুন্দরী মেয়ের গন্ধ পেলে আর বাছাধনের হিসেব-জ্ঞান থাকে না। একেবারে উন্মাদ!” মোহন ভূ-কুঞ্চিত করিয়া কহিল, “কোন সুন্দরী মেয়েকে নিয়ে গেছেন তিনি?” “না দাদা, তোমার কাছে মিথ্যে কথাটা আর বলব না। সত্যি বলছি, টেরেনে কোন মেয়েকে দেখি নি। তবে চেঞ্জেতে কি আর ছুন্দরীর অভাব আছে, দাদা ? আর চুল, ভেতরে চল।” রামচরণ মোহনের হাত ধরিয়া টানিয়া লইয়া চলিল। * মোহন অতিশয় চিন্তিত হইয়া পড়িল, “এরূপ সহসা বাহিরে যাইবার কি প্রয়োজন 3. থাকিতে পারে; আমি তাহার প্রতারণা ধরিতে পারিয়াছি,ইহা ভাবিয়াই কি সে কলিকাতা ত্যাগ করিয়া গিয়াছে, না অন্য উদ্দেশ্যে ?” (ు মোহন যন্ত্র-চালিত পুতুলের মত রামচরণের পিছনে পিছনে ড্রইং রুমে প্রবেশ করিল এবং দাড়াইয়া থাকিয়া চিন্তা করিতে লাগিল। - রামচরণ অত্যন্ত বিচলিত হইয়া কহিল, “কি হ’ল তোমার বন্ধু ? তোমার মাসি তো লুটিস দিয়ে বসেছে হে?” মোহন কুঞ্চিত-ললাটে কহিল, কে নোটিস দিয়েছে?” - “তোমার মাসি, আবার কে। আমি কত বোঝালাম যে, বোনপো আছে, আমি আছি, বেশ আরামে থাকা যাবে, কিন্তু ওরে বাপরে! মাসির তেজ দেখে কে! আমাকে যা-নয় তাই বলে চলে গেল।” রামচরণ অভিযোগ জানাইল।