পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৪৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

E মোহন অমনিবাস মোহন কহিল, “হু।” সন্তোষজনক জবাব না পাইয়া দারোয়ান পুনরায় কহিল, “আপকিসকো সাথ মোলাকাত মাংতা হ্যায়, হুজের ?” মোহন কিছু বলিবার পূর্বেই বিলাস কর্কশ স্বরে অপূর্ব হিন্দীতে কহিল, “কেন বিরক্ত করতা হ্যায় ?” চুপ ক’রে খাড়া রহো।” অপূর্ব হিন্দীর মহিমাতেই হউক অথবা বিলাসের মধুর স্বরের ধমকেই হউক, দারোয়ান ভীত হইয়া পরবর্তী আদেশের জন্য মোহনের নীরব ও ক্লান্ত মুখের দিকে চাহিয়া নীরবে দাঁড়াইয়া রহিল। - যথাসম্ভব নিঃশব্দে আপন দেহকে ধূলি-ধূসরিত অবস্থা হইতে মুক্ত করিতে সচেষ্ট হইল। মোহন নীরবে চক্ষু মুদিত করিয়া বসিয়া রহিল; সে ঘুমাইতেছে কি জাগরিত থাকিয়া চিত্তা করিতেছে, তাহা বুঝিবার সাধ্য কাহারও ছিল না। সহসা দ্বিতলের বারান্দায় বধূ কবিতা আবির্ভূত হইয়া অনুচ্চ কোমল স্বরে কহিল, “দারোয়ান, কে এসেছেন ?” দারোয়ান বর্তইয়া গেল। কহিল, “মালুম নেহি, মা-জী।” “জিজ্ঞাসা করো নি?” কবিতার কষ্ঠ স্বরে বিস্ময় ধ্বনিত হইল! বিলাস উর্ধ্ব-মুখ হইয়া দুই হাত একত্র করিয়া কপালে ঠেকাইয়া, স্বর প্রাণপণ প্রচেষ্টায় যতদূর সম্ভব কোমল করিয়া কহিল, “কর্তা এসেছেন, বৌঠান।” ইহার বেশী বলিবার প্রয়োজন ছিল না। তরুণী-বধূ কবিতা প্রতি মুহুর্তে যাহার আগমন প্রতীক্ষা করিতেছিল, তিনিই আসিয়াছেন শুনিয়া দ্রুত পদে নিম্নে অবতরণ করিয়া মোটরের নিকট আসিবার পূর্বেই দেখিল, মোহন স্নিগ্ধ স্নান মুখে মোটর হইতে অবতরণ করিয়া দাঁড়াইয়া রহিয়াছে। কবিতা ক্ষুদ্র দুটি হাত কপালে ঠেকাইয়া নত স্বরে কহিল, “এ-কি অন্যায় বলুন তো? আপনি এসে পরের মত বাইরে অপেক্ষা করছেন, অথচ ডাকতে আদেশ দেননি, কি ক’রে সম্ভব হয় বলুন তো? আসুন, উপরে আসুন।” বিলাসের দিকে একবার চাহিয়া, দারোয়ানকে কহিল, “ওর মানের বন্দোবস্ত করে দাও, আমি খাবার তৈরী হলেই পাঠিয়ে দিচ্ছি। কোন অযত্ন না হয়, দেখো।” মোহনের দিকে চাহিয়া কহিল, "সুনা” মোহন নিঃশব্দে কবিতার পশ্চাতে দ্বিতলে উঠিয়া একটি সুসজ্জিত কক্ষে প্রবেশ করিয়াই কহিল, “বাবা কি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন?” কবিতা স্নান মুখে কহিল, “তার জ্ঞান পর্যন্ত নেই। কেবলি হ্য রমা! হা রমা!’ করছেন। আপনি আগে হাত-মুখ ধুয়ে স্নান সেরে নিন। সব কথাই বলছি। আমি বামুনমাকে দুটাে কথা বলেই আসছি।” মোহন বাধা দিয়া কহিল, “কিছু প্রয়োজন নেই। আপনি আগে সব কথা বলুন।” কবিতার আয়ত চক্ষু দুটি পলকের জন্য মোহনের কাতর দৃষ্টির সহিত মিলিত হইল। মোহনের মনে হইল, এক ঝলক ক্ৰন্দন চমক খাইয়া দুটি ঠোটে ঝরিয়া পড়িল। কবিতা কহিল, “আমি যদি অপেক্ষা করতে পারি, আপনার নিজের দেহের দিকে চেয়ে আপনিও