পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৪৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8Եro মোহন অমনিবাস “কর্তা।” বিলাস উর্ধ্বমুখে চাহিল। “তৈরী হ, বিলাস।” মোহন কক্ষ মধ্যে প্রত্যাবর্তন করিয়া কবিতাকে কহিল, “আমার একান্ত প্রার্থনা আপনার কাছে, আপনি আমার ওপর নির্ভর করুন। যদি ভাল বিবেচনা করেন, তবে আপনার শ্বশুরকে আমার হয়ে সাত্ত্বনা দেবেন।” মোহন আপন পরিধেয় বস্ত্রের দিকে চাহিয়া কহিল, “এগুলো বর্তমানে আমার কাছেই রইল। তবে আসি, বৌঠান?” মোহন দ্রুতবেগে বাহিরে আসিবার উপক্রম করিয়াই সহসা স্তব্ধ হইয়া দাড়াইয়া পড়িল। ঘরের দেওয়ালে রমার একখানি বৃহৎ ফটো সজ্জিত ছিল, সেই দিকে মোহন অপলক দৃষ্টিতে চাহিয়া রহিল। বধূ কবিতা ধীর কষ্ঠে কহিল, “আপনি ছবিখানা নেবেন?” “আমি?” মোহনের মুখে অপরূপ হাসি ফুটিয়া উঠিল। কহিল, “রানী আমার সারা সত্তা জুড়ে বসে আছে, বৌঠান। আমি তা’কে চোখ চেয়েও দেখতে পাই, চোখ বুজেও সমভাবে দেখি। ছবিতে আমার কোন প্রয়োজন নেই।” মোহন সমুদ্রের উত্তাল তরঙ্গের দিকে হস্ত প্রসারিত করিয়া কহিল, “দেখুন বৌঠান, ওই দেখুন আপনার রানী, আমার রানী!” - উন্মাদের মত চাহিতে চাহিতে মোহন দ্রুতবেগে কক্ষ হইতে নিষ্ক্রান্ত হইয়া গেল। বধু কবিতা মৌন-বিস্ময়ে, শঙ্কিত-মনে মোহনের ক্ষিপ্ত উচ্ছাস-ভরা আবেগ শুনিয়া শিহরিয়া উঠিল। ' সহসা মোটরের মৃদু গুঞ্জন ও গতির মৃদু শব্দ শুনিয়া ছুটিয়া গিয়া যখন বারান্দায় উপস্থিত হইল, তখন দেখিল, মোহন ও মোটর উভয়েই অদৃশ্য হইয়া গিয়াছে। বধূ কবিতার মুখ হইতে অস্ফুট ধ্বনিতে বাহির হইল, “জগন্নাথ, এই পরোপকারী দয়ালু প্রাণকে রক্ষা করুন!” তখন সমুদ্রের অশান্ত ঢেউগুলি গৰ্জনে গর্জনে বেলাভূমির ওপর সশব্দে আছাড় খাইয়া পড়িতেছে। . (১৩) ** পুরীর পুলিস-সুপার কলিকাতা হইতে জরুরী সংবাদ পাইলেন, দর্স মোহন খুব । সম্ভবতঃ পুরীতে যাইতেছে। চারিদিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখিয়া, সম্ভব হইলে তাহাকে গ্রেপ্তার করিয়া, আমাদের সংবাদ দিন। মিঃ পঙ্কজ সোম, যাহার কন্যার সহিত দস্য মোহনের বিবাহ হইয়াছে তাহার প্রাসাদের উপর তীক্ষ দৃষ্টি রাখুন।” ওঁ তার যখন আসিল, তখন সকাল সাতটা। পুলিস-সুপার কাল-বিলম্ব না করিয়া দলবলের সহিত মহাসমারোহে মিঃ সোমের প্রাসাদ অভিমুখে যাত্রা করিলেন। সুপারকে দস্য মোহন অতীতে যে নিদারুণ আঘাত করিয়াছিল, তাহার বিরাট শক্তিকে গ্রাহ্যের মধ্যে না আনিয়া যে ভাবে আপন অভীষ্ট সিদ্ধ করিয়া লইয়াছিল, তাহা তিনি অদ্যাপি ভুলিতে পারেন নাই। সুতরাং যখন তিনি দস্য মোহনের দ্বিতীয় বার আগমনের খবর প্রাপ্ত হইলেন, তখন কিছুমাত্র সময় নষ্ট না করিয়া যুদ্ধে অবতীর্ণ হইলেন। পুলিশ-সুপার দলবলসহ যখন মিঃ সোমের প্রাসাদে উপস্থিত হইলেন, তাহার মাত্র পাঁচ মিনিট পূর্বে মোহন প্রাসাদ ত্যাগ করিয়া চলিয়া গিয়াছে। তিনি অগ্নি-মূর্তি হইয়া গেটের