পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৪৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রমা-হারা মোহন 8brø. “মিঃ বেকার বিরক্তি চাপিতে না পারিয়া শান্ত স্বরে কহিলেন, দেখুন রায়সাহেব, আমার সময় মূল্যবান। অযথা তা নষ্ট করতে চাইনে। আপনি যদি দয়া ক’রে সব কথা পরিষ্কার করে বলেন, তা’ হ’লে বুঝতে পারি, এ ক্ষেত্রে আমার করণীয় কর্তব্য কি !” রায়সাহেবের নিকট মিঃ বেকারের বিরক্তি অজ্ঞাত রহিল না। তিনি অপেক্ষাকৃত সহজ মুখ-ভাব করিয়া বলিলেন, “আসামী সরোজ সোমের বোনের সঙ্গে দসু্যটার বিবাহ হয়েছে, জানেন তো?” মিঃ বেকার বিস্মিত স্বরে কহিলেন, “হয়েছে জানি। কিন্তু হতভাগ্য মেয়েটা একদিন আমারই গুলিতে আহত হয়। সে দুঃখ আমার জীবনে যাবে না, রায়সাহেব। মিঃ বেকারের মুখ মেঘাচ্ছন্ন হইয়া উঠিল। - - রায়সাহেব মিঃ বেকারের মনোভাব বুঝিতে না পারিয়া উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করিয়া কহিলেন, “তবেই শ্যালকের উদ্ধারের জন্য, যে তাকে বিপদে ফেলেছে অর্থাৎ যাকে হত্যা-লুণ্ঠন করতে গিয়ে বিপদে পড়েছে, তা’র সর্বনাশের চেষ্টা করাই এক্ষেত্রে স্বাভাবিক নয় কি, মিঃ বেকার ?” মিঃ বেকার ধীরে ধীরে মাথা নাড়িয়া কহিলেন, “ঠিক তার বিপরীত, রায়সাহেব। সরোজ যে-গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে, তাতে তা’র দন্ডের লঘুত্ব আপনার কৃপার ওপরেই নির্ভর করে। সে-ক্ষেত্রে মোহন আপনাকে খুন করা দূরে থাক, আপনাকে অসন্তুষ্ট করতেও সাহসী হবে না। আর একমাত্র এই কারণেই সে গতবারে আপনার বাড়ীতে যেতে বাধ্য হয়েছিল বলেই আমাদের ধারণা।” রায়সাহেব চিন্তিত স্বরে কহিলেন, “আপনাদের তাই ধারণা না কি ?” “হাঁ রায়সাহেব। তা ছাড়া অন্য কোন কারণে সে আপনার নিকট গিয়েছিল বলুন দেখি ?” মিঃ বেকার প্রশ্ন করিলেন। রায়সাহেব অস্থির কষ্ঠে কহিলেন, “আপনাদের আমি সেদিনও বলেছি, আজও বলছি যে, মোহন আমার বাড়ীতে আপনাদেরই মত উদ্দেশ্য নিয়ে গিয়েছিল।” . মিঃ বেকার ঈষৎ লজ্জিত হইয়া কহিলেন, “তাতে তার লাভ ? তার ও আমাদের %. উদ্দেশ্য যে এক এ ধারণা আপনার হল কেন, রায়সাহেব ?” _৯৯ রায়সাহেব উদ্বিগ্ন হইয়া উঠিলেন। মিঃ বেকার তাহাকে কোথায় টানিয়া লইয়া যাইতেছেন বুঝিতে না পারিয়া কহিলেন, ওসব আলোচনা থাক, মিঃ বেকারণকারণ আমি আপনাদের উদ্দেশ্য সম্বন্ধে যেমন অন্ধ, তেমনি মোহনেরও। কিন্তু আপনা তো জানেন, আমার নিজের সম্বন্ধেও যেমন অন্ধ, তেমনি আমার বাড়ীতেও কোন গোপনীয়তার স্থান নেই। আপনাদের যখন খুশি তখনই আমার বাড়ীতে যেতে পারেন, যা খুশি তাই প্রশ্ন করতে পারেন, আমি এমন কোন কাজ করি না বা এমন কোন গুপ্ত বিষয়ও আমার নেই, যা আপনারা জানেন না। তাছাড়া.....” রায়সাহেব নীরব হইয়া পড়িলেন। মিঃ বেকার কহিলেন, “তা ছাড়া আমি বুঝতে পারছি যে, আমার জীবন যখন সত্য-সত্যই বিপন্ন হয়ে উঠেছে, তখন আপনাদের সাহায্য চাওয়া আমার প্রাথমিক কর্তব্য। কিন্তু আপনারা যদি আমার অনুরোধ রক্ষা না করেন, তবে বাধ্য হয়ে আমাকে অন্য পথ দেখতে হবে।”