পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৪৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 Է Հ মোহন অমনিবাস দিত না, সেই বিলাসের মনেই আজ প্রভুর কিম্বা আপনার আহারের কথা উদয় মাত্র হইল না। নিতান্ত অবাস্তর বস্তুর মত তাহা মনের বাহিরে পড়িয়া রহিল। গ্রান্ড ট্রাঙ্ক রোড দিয়া মোটর যখন ছুটিতেছিল, যখন রাত্রির মুক্ত পথ পাইয়া মোহন ঘন্টায় ৫০ মাইল বেগে গাড়ীর গতি বেগ বৃদ্ধি করিয়া দিল। বিলাস পিছন হইতে এক সময়ে কহিল, “সামনে গরুর গাড়ী, কর্তা!’ মোহন চক্ষুর নিমেষে ব্রেক কষিয়া ফেলিল এবং বাম দিক ঘেষিয়া গাড়ীর সারিকে অতিক্রম করিয়া গেল। পুনরায় মোটরের গতি বৃদ্ধি পাইতে লাগিল। মোহন অস্ফুট স্বরে বলিতে লাগিল, “পাটনা জংসন! পাটনা জংসন! দূবৃৰ্ত্ত তোকে আমি এমন শিক্ষা দেব, যা ভাবতেও তুই শিউরে উঠবি! কালসাপকে লাথি মেরেছিস হতভাগা—দুঃশাসনের মত তোর বক্ষ-রক্ত পান করে তবে তৃপ্ত হব আমি।” “গাড়ী, সামনে গাড়ী কর্তা।” বিলাস চীৎকার করিয়া উঠিল। সঙ্গে সঙ্গে ব্রেক কষিয়া মোহন মোটরের গতি কমাইয়া দিল। গাড়ীর দল পার হইয়া গেল। আবার কিছুদূর অগ্রসর হইয়া গাড়ীর বাধা উপস্থিত হইল। মোহন বিরক্ত ও অধৈৰ্য স্বরে কহিল, “বিলাস!” “কর্তা!’ বিলাস হেট হইয়া সম্মুখের দিকে ঝুঁকিয়া পড়িল। মোহন অস্থির কষ্ঠে কহিল, “পারবি?” “কেন পারব না, কর্তা ?’ বলিতে বলিতে বিলাস সীট ডিঙ্গাইয়া মোহনের পাশ্বে উপস্থিত হইল। মোহন ষ্টিয়ারিং হুইল ছাড়িয়া দিয়া মোটর হইতে অবতরণ করিল এবং পশ্চাতের আসনে আসিয়া নিজীব ভাবে আধ-শোয়া অবস্থায় বসিয়া রহিল। বর্ধমান অতিক্রম করিয়া মোটর একদিকে প্রাস্তর, অন্যদিকে রেলওয়ে লাইন ধরিয়া ছুটিতে লাগিল। মোহন পুনরায় নীরব চিন্তার গভীর অতলে তলাইয়া গেল। মাইলের পর মাইল মোটরের মাইল-প্লেটে উঠিতে লাগিল। ষ্টেশনের পর ষ্টেশন পার হইয়া মোটর অক্লান্ত গতিতে ছুটিয়া চলিল। কিছু পরে আসানসোল ষ্টেশনের আলোকমালা মোটরের সম্মুখে নচিয়া উঠিল। ২ বিলাস স্বর মোলায়েম করিয়া কহিল, “আপনার আহার হয় নি, কর্তা।” সহসা মোহনের স্মরণ হইল, তাহার আহার হয় নাই, সুতরাং প্রভু-ভক্ত বিলাসও অনাহারে আছে। কহিল, “এখানে খাবার পাওয়া যাবে? কোথায় এসেছি আমরা ?” “আসানসোল, কর্তা। আপনি আদেশ করলেই খাবার নিয়ে আসতে পারি।” বিলাস মাথা নত করিয়া কহিল। মোহন একখানি দশ টাকার নোট বাহির করিয়া বিলাসের হাতে দিল ও নিজীব ভাবে বসিয়া রহিল। বিলাস যখন ষ্টেশনে উপস্থিত হইল তখন রাত্রি ১টা। তেমন গভীর রাত্রিতে কিছু পাওয়া অসম্ভব জানিয়াও, বিলাস হিন্দু রিফ্রেসমেন্ট রুমে উপস্থিত হইয়া, চীৎকার করিয়া খানসামাকে জাগাইল এবং বকশিশের লোভ দেখাইয়া, চা, ডিম সিদ্ধ, ডিমের মামলেট