পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৪৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8为8 মোহন অমনিবাস করিয়া মোহনকে জানাইল। - মোহন মোটরের ভিতর ক্লান্ত দেহে নিঃশব্দে বসিয়া রহিল। বিলাস আর ধৈর্য ধরিতে না পারিয়া কহিল, “নতুন মা কোথায় কর্তা ?” মোহনের কানে যেন সুধা বর্ষণ হইল ; সে অর্থহীন দৃষ্টিতে চাহিয়া কহিল, “কি চাস ?” বিলাস বিস্মিত হইয়া কহিল, “এখানে মিছে দেরী করে লাভ কি, কর্তা ? তার অফিস খুলতে এখনও দেরি রয়েছে। মা’র সঙ্গে দেখা করে, তাকে উদ্ধার করে, শয়তানের রক্ত চুষে, তবে তো বিশ্রাম করতে পাব ?” মোহন একটা দীর্ঘশ্বাস চাপিয়া কহিল, “কোথায় সে জানি না, বিলাস। তার অফিস না খুললে জানতেও পারব না। অপেক্ষা কর।” বিলাস তাহার স্বল্প-ভাষী প্রভুটিকে বিলক্ষণ চিনিত ; দ্বিতীয় প্রশ্ন না করিয়া সে নীরবে দাঁড়াইয়া রহিল। আপেক্ষিত সময় দীর্ঘতর মনে হয়, ইহা অল্প-বিস্তর সকলেরই জানা আছে। কিন্তু সময় যে এমনই দীর্ঘ হয়, সেদিনের পূর্বে মোহনের নিকটেও তা অজ্ঞাত ছিল। মোহনের স্মরণ হইল, তাহার জীবনে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিস্থলে দাড়াইয়া, সে কত সময় অটল ধৈর্য সহকারে অপেক্ষায় কাটাইয়াছে, কিন্তু সেদিনের মত এমন দীর্ঘ ভাবে সে সময় অনুভূত হয় নাই। প্রতি এক মিনিট অন্তর সে হাতের রিষ্ট ওয়াচটার দিকে চাহিয়া চাহিয়া দেখিতে লাগিল। একটি ঘন্টা সময় তাহার নিকট কয়েক যুগ বলিয়া অনুভূত হইতে লাগিল। মোহনের চিত্ত অধীর উত্তেজনায় পাগল হইয়া উঠিল। এক সময়ে সে ভাবিল, তাহার ঘড়ি কি বন্ধ হইয়াছে, না সময় ঠিক দিতেছে না ? মোহন বিলাসকে আহ্বান করিয়া টেলিগ্রাফ অফিসের ঘড়ি দেখিয়া আসিতে বলিল ; কিন্তু বিলাস যে সময় জানাইল, তাহার প্রতিটি মুহূর্ত পর্যন্ত তাহার ঘড়ির সহিত মিলিয়া গেল। অবশেষে প্রতীক্ষিত ঘন্টাটি অতিবাহিত হইয়া গেল। টেলিগ্রাফ অফিসের বৃহৎ ঘড়িতে ঢং ঢং করিয়া ঘন্টা বাজিয়া উঠিল। মোহন তড়িৎ-বেগে মোটর হইতে বাহির হইয়া কয়েক লাফে তার অফিসের কাউন্টারে উপস্থিত হইল। షో প্রথম মিনিটেই এক বিশিষ্ট ধরনের খরিদার দেখিয়া বিহারী-যুবক উৎসুক হইয়া সন্ত্রম কষ্ঠে কহিল, “কি চাই? জরুরী তার পাঠাবেন?” ം് মোহন তাহার বর্তমান মহা উদ্বেগজনক অবস্থাতেও মৃদুইসিয়া কহিল, “আপনাকে একটু কষ্ট দিতে এলাম। আমাকে মার্জনা করবেন আপনি।” যুবক মধুর সম্ভাষণে কৃতাৰ্থ হইয়া গেল। কহিল, “বলুন, আপনার কি প্রয়োজন?” মোহন কহিল, “গত রাত্রে কলকাতা থেকে আমি একটা জরুরী তার পাঠিয়েছিলাম, সেখানা ডেলিভারী হয়েছে কি-না আমাকে যদি জানান, তবে পরম কৃতজ্ঞ হব।” যুবক কহিল, “কি নামে আর কার নামে তার পাঠিয়েছিলেন বলুন তো?” - মোহন কহিল, “হাজরার নামে পাঠিয়েছিলাম, আর রায় এন্ড রায় প্রেরকের নাম ছিল।” যুবক রেফারেন্স বই দেখিয়া কহিল, “হা, সেই তার গত রাত্রেই ডেলিভারী দেওয়া হয়েছে তো!”