পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

W মোহন অমনিবাস বিপাস মাথা চুলকাইয়া কহিল, "বলবার ম৩ কেউ না, কর্তা। নইলে আপনার ছিচরণের ভূত্য বিলেস কখনও চুপ কোরে থাকৃত না।" “দেখ বাবা বিলাস, তোর ঐ বুদ্ধিমান ভুৱাৱাচেঞ্জে ছেড়ে দে। আমি বহুবার সেকথা বলেছি। এখন, কে এসেছিল তাই বল ?” মোহন সষ্ট ইয়া সোফার উপর উপবেশন করিল। - বিলাস ভীত স্বরে কহিল, “ঐ পাশেরীর পুলিস্টীয় ময়েরটুসি বেড়ালটা।” মোহন হা হা শব্দে হাসিয়া উঠিল।" స్ధి. সত্য-নিষ্ঠায় ন যে,ত ন যে-কেহ আসিবে, প্রীত হইল। কারণ মোহনের কঠিন আঁদেশ, -- তাহার সম্বন্ধে বিস্তারিত সংবাদ অবিলম্বে জ্ঞখুন করিতে হইবে কিন্তু টুসি বিড়াল কিম্বা লুসি কুকুরের সম্বন্ধে কোন আদেশ ছিল না কছিল, না এবার তোর বুদ্ধিমানের মতই কাজ হয়েছে, বিলাস। আমাকে না বলায় কোন দোষ হয়নি।” বিলাস পুনরায় মাথা চুলকাইয়া কহিল, “ভারি বজ্জাত বেড়াল, কর্তা। আমাকে রোজ জ্বালাতন করে, তাই আটকে রেখেছিলাম। তারপর বেড়ালের খোঁজে পুলিস-সাহেবের একজন সেপাই এলো। তাকে হাকিয়ে দিলুম। তারপর একজন বাবু এল;তাকেও বললুম না, বেড়াল দেখিনি। কিন্তু হতভাগা বিড়াল যে মিউ মিউ কোরে জানালার কাছ থেকে ডাকছিল, তা’ কে জানতো? আর পুলিস-সাহেবের মেয়ের শখের বেড়াল কি-না ! তারপর...” মোহনের চক্ষু বিস্ফারিত ও মুখ বিবর স্ফীত হইতেছিল। কহিল, “তারপর?” “তারপর পুলিস-সাহেব নিজে এলেন। সঙ্গে নিয়ে এলেন চারজন সেপাই। বললেন, আলবৎ বেড়াল আছে। আমি বললুম, না, দেখিনি ত। কিন্তু বেড়ালটা জোরে জোরে ডাকতে লাগল। শেষে দেখি, হতভাগা বেড়ালটা বেরিয়ে এসেছে।” মোহন কহিল, “আর কিছু আছে?” “আছে কর্তা। পুলিস সাহেব জিজ্ঞাসা করলেন, ‘এখানে কে থাকেন? আমি বললুম, আমার প্রভু থাকেন। নাম কী? আমি বললুম শ্ৰীযুক্ত বাবু উৎপল বসু পুলিস সাহেব বললেন, ও, যিনি বিখ্যাত আর্টিস্ট? যাঁর ছবি এ-বছর প্রথম পুরস্কার পেয়েছে? আমি বললুম, হা। তিনি বললেন, আচ্ছা তাকে একবার দয়া করে আমার সঙ্গে দেখা করতে বলো। আমার স্ত্র তার কিছু ছবি কিনতে চান। এই বলে দলবলমিয়ে তিনি চলে গেলেন।” ইহা বলিয়া বিলাস একবার প্রভুর মুখের দিকে চাহিয়া নত মুখে দাড়াইয়া রহিল। মোহন ভাবিতেছিল। সে ইচ্ছা করিয়াই শহরের পুলিস কমিশনারের বাসার পাশ্বে বাসা লইয়াছে। কিন্তু সামান্য একটা বিড়াল লইয়া যে এমন একটি গুরুতর ব্যাপার তাহার বিশ্বস্ত অথচ আকাট মুখ ভৃত্য বাধাইয়া তুলিয়াছে, তাহাতে সে বিরক্ত হইয়াও তাহা প্রকাশ করিল না। কারণ সে ভাবিল নিশ্চয় কমিশনারের মনে কোন সন্দেহ প্রবেশ করে নাই। তাহার স্ত্রীর ছবি ক্রয় করিবার ইচ্ছাতেই তাহা প্রমাণিত হয়। কহিল, “আর কখনও কারও বেড়াল, কি কুকুর, গরু, বাঘ, ভালুক কিছুই বাধবি না, বিলাস। বুঝেছিস, বাবা?” বিলাস কৃতাৰ্থ হইয়া কহিল, “বুঝেছি, কর্তা। কিন্তু বাঘ-ভালুকও কি পুলিস-সাহেবের মেয়ের আছে, কর্তা ?”